সিলেট ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:১০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০২০
আদর্শ বার্তা ডেস্ক:
২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, যা হতে যাচ্ছে বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার প্রভাবে বেশিরভাগ দেশে প্রবৃদ্ধি অর্জন কমলেও ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। অর্থাৎ, প্রবৃদ্ধি অর্জনে সবার থেকে উপরে লাল-সবুজের পতাকা। শুধু তাই নয়, বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমে তিন শতাংশে দাঁড়ালেও সেক্ষেত্রে উল্টো দাপট দেখিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক আউটলুকে এ আভাস দিয়েছে আইএমএফ। ১৫ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক আউটলুক প্রকাশ করে এই পূর্বাভাস দেয় সংস্থাটি।
এতে বলা হয়, ২০১৯ অর্থবছরের আর্থিক মন্দা খানিকটা কাটিয়ে উঠতে পারে বড় দেশগুলো। ফলে, নতুন গতি আসতে পারে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে।
বিশ্বঅর্থনীতি অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে সময় পারলেও বাংলাদেশ এতে ভালো করছে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও উৎপাদন বৃদ্ধি, সেই সঙ্গে রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও শ্রমশক্তি। এর সঙ্গে বাড়তি সুবিধা যোগ করেছে বাংলাদেশে নির্মাণাধীন একশ’ ইকনোমিক জোন। বাংলাদেশ এসব জোনে ব্যাপক কর্মসংস্থানের পাশাপাশি রপ্তানি আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করবে বলে মনে করে আইএমএফ।
আউটলুক প্রকাশ অনুষ্ঠানে আইএমএফের মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ জানান, বৈশ্বিক বাণিজ্য দ্বন্দ্ব ও ভূরাজনৈতিক বিষয়গুলো অগ্রগতির ক্ষেত্রে এখনো বড় বাধা। এটি কাটিয়ে উঠতে নীতি নির্ধারকদের আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এ মন্দা ও বিশ্ববাণিজ্যের শ্লথ গতির জন্য ব্রেক্সিট জটিলতাকে দায়ী করা হয়।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থানের শ্লথ গতি প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তবে, এসব বাধা উপেক্ষা করেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে এদেশের অর্থনীতি ও সার্বিক অগ্রগতির প্রশংসা করা হয়েছে অর্থনীতির মোড়লদের এই বিশ্ব সভায়।
তবে, ধনী দেশগুলোর দ্বন্দ্ব আর উন্নয়নের সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে এশিয়ান টাইগারখ্যাত বাংলাদেশকে রেখেছে সংস্থাটি, যা স্পষ্ট হয়েছে তাদের এই আগাম বার্তায়। সেখানে বলা হয়েছে, এই দুই বছরে দেশটির প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় আটের ঘরে। আর যা সম্ভব হচ্ছে, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মতো বিনিয়োগবান্ধব উদ্যোগ; সেই সঙ্গে, বিশ্বমন্দার পরেও রপ্তানি-রেমিট্যান্সের শক্তিশালী অবস্থানের কারণে।
এদিনের আয়োজনে ঘুরেফিরে আলোচনায় আসে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য নিয়ে বিপরীতমুখী অবস্থান। সেই সঙ্গে, বিশ্বমন্দার কবলে থাকা বড় দেশগুলোর উদার বাণিজ্যনীতির ব্যর্থতা ও মুদ্রাপাচারের মতো অপরাধ ঠেকাতে না পারার বিষয়গুলো। বৈশ্বিক কর ও ব্যাংক ব্যবস্থারও সমালোচনা হয় এদিন। একারণে সভায় পরামর্শ আসে, নিয়ন্ত্রণকর্তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে আরও বেশি সতর্ক ও সময়োপযোগী হওয়ার।
প্রবৃদ্ধির আভাসে বাংলাদেশকে ভারত, শ্রীলংকা কিংবা ভিয়েতনামের চেয়েও এগিয়ে রেখেছে আইএমএফ, যা এশিয়ার দেশগুলোর গড়ের চেয়ে কিছুটা বেশি।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ১২টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা ও সক্ষমতা নিয়ে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেশন অনুষ্ঠিত হয়। যেকোনো দেশের অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী ভূমিকা পালনের পাশাপাশি স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় এতে।
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভায় যোগ দিতে রোববার (১৩ অক্টোবর) রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি যান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফারের সঙ্গে ও সার্কভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তার।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) ব্যাংক তহবিল নিয়ে বার্ষিক আলোচনা সভা হবে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একাধিক বৈঠক শেষে আগামী ২৭ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে অর্থমন্ত্রীর।
এবারের বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভায় বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। পাশাপাশি, এবারের বৈঠকে রোহিঙ্গা সহায়তা নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠক রয়েছে। সভায় বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সদস্য দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী ছাড়াও উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন।
অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের হয়ে বৈঠকে আরও যোগ দেবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ বিভাগের সচিব আ্বদুর রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ প্রমুখ। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও ইকনোমিক মিনিস্টার মো. সাহাবুদ্দিন পাটোয়ারী ওয়াশিংটন থেকে প্রতিনিধিদলে যোগ দেবেন।
(সুত্র: বাংলা নিউজ)
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D