দাতাদের কাছে ২২০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা চেয়েছে সরকার

প্রকাশিত: ১১:২২ পূর্বাহ্ণ, মে ৬, ২০২০


Manual6 Ad Code

ঢাকা, ০৬ মে ২০২০: বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতাসংস্থার কাছে সরকার প্রায় ২২০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা চেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি।

২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেট সহায়তা

সরকার ২০২০–২১ অর্থবছরে উন্নয়নসহযোগী বা দাতাদের কাছ থেকে প্রকল্প সহায়তার চেয়ে বাজেট সহায়তা পেতেই বেশি আগ্রহী। সে অনুযায়ী এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকসহ (এআইআইবি) বিভিন্ন দাতাসংস্থার কাছে মোট ২২০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। ইআরডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে ইতিমধ্যে সরকারের অগ্রাধিকারও পরিবর্তন হয়েছে।

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, সরকারের অগ্রাধিকার অনুযায়ী এভাবে বাজেটসহায়তা চাওয়া যৌক্তিক। কেননা, এখন উন্নয়ন প্রকল্পে নির্দিষ্ট সহায়তার চেয়ে সরকারের নগদ অর্থের প্রয়োজন বেশি। কারণ, প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে প্রণোদনা দেওয়া যায় না।

Manual5 Ad Code

দাতারা সাধারণত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) নেওয়া প্রকল্পে সহায়তা করে। কিন্তু এবার সরকার বাজেট সহায়তা নিতেই বেশি আগ্রহী। কারণ, বাজেট সহায়তার অর্থ সরকার চাইলে উন্নয়ন বা অনুন্নয়ন, যেকোনো খাতেই খরচ করতে পারে। তবে বাজেট সহায়তা পেতে সরকারকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন: আর্থিক খাতে সংস্কার, সুশাসন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ইত্যাদি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, বাজেট সহায়তা চাওয়ার অর্থনৈতিক যুক্তি আছে। করোনা মোকাবিলায় দিন আনে দিন খায় এমন মানুষকে কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে সুবিধা দেওয়া যাবে না। তাদের চাল, ডাল কিংবা নগদ সহায়তা দিতে হবে। এ ছাড়া চিকিৎসক, সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণির পেশাজীবীদের নগদ প্রণোদনা প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রণোদনায় ব্যবসায়ীদের ঋণের আংশিক সুদ মওকুফের ঘোষণাও দিয়েছে সরকার। এই টাকা তো প্রকল্পের মাধ্যমে আনা যাবে না। এই ধরনের খরচ ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।

একই মত সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য শামসুল আলম বলেন, বাজেট সহায়তা চাওয়ার বিষয়টি ঠিকই আছে। করোনা মোকাবিলায় সরকারের যথেস্ট সম্পদের প্রয়োজন আছে। অর্থনীতি সক্রিয় রাখতে নানা ধরনের প্রণোদনা দিতে হবে। এ জন্য টাকা লাগবে। কারণ রাজস্ব আহরণের গতিও কিছুটা মন্থর।

কার কাছে কত চাওয়া

বিশ্বব্যাংকের কাছে এখন পর্যন্ত ৮৫ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা চেয়েছে সরকার। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের জন্য পুরোনো বাজেট সহায়তা প্যাকেজের ২৫ কোটি ডলার আছে। আর ২০২০–২১ অর্থবছরের জন্য নতুন করে ৫০ কোটি ডলার এবং বিশ্বব্যাংকের ইমারজেন্সি ফান্ড থেকে ১০ কোটি ডলার চেয়েছে সরকার। অবশ্য বিশ্বব্যাংকের জরুরি সহায়তা তহবিল থেকে এই পর্যন্ত ১০ কোটি ডলার পাওয়া গেছে।

Manual6 Ad Code

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, বাজেট সহায়তার বিষয়ে ইআরডি ও বিশ্বব্যাংক এখন কাজ করছে। শিগগিরই এ ব্যাপারে ঘোষণা আসতে পারে।

Manual7 Ad Code

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে চাওয়া হয়েছে ৭৫ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা। তবে সংস্থাটি এখনো কিছু জানায়নি।

এডিবির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ৭০ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা এবং বাকি ২০ কোটি ডলার ইমারজেন্সি তহবিলের অর্থ। ইতিমধ্যে ইমারজেন্সি ফান্ড থেকে দুই দফায় ১০ কোটি ডলার করে ২০ কোটি ডলার পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ৩০ লাখ ডলার অনুদানও দিয়েছে সংস্থাটি। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া কভিড–১৯ তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রকল্প মূল্যায়ন করে এডিবি বলেছে, করোনার প্রাদুর্ভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ১ হাজার ৩৩০ কোটি ডলারে ক্ষতি হতে পারে।

চীনের নেতৃত্বে গঠিত এআইআইবি কাছে বাংলাদেশ সব মিলিয়ে ৪৫ কোটি ডলার চেয়েছে। এর মধ্যে ২০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা। বাকিটা সহজ শর্তের ঋণ। ইতিমধ্যে এআইআইবি ১৭ কোটি ডলার দিয়েছে। এআইআইবি সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই বাজেট সহায়তার অর্থ দেওয়ার ঘোষণা আসতে পারে।

Manual4 Ad Code

ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (আইডিবি) কাছে ১৫ কোটি ডলারের প্রকল্প সহায়তা চেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অর্থ পাওয়া যায়নি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ