শ্রীমঙ্গলে একটি পরিবারও অনাহারে থাকবে না: সিনিয়র এএসপি আশরাফুজ্জামান

প্রকাশিত: ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ, মে ১৯, ২০২০

শ্রীমঙ্গলে একটি পরিবারও অনাহারে থাকবে না: সিনিয়র এএসপি আশরাফুজ্জামান

আব্দুস শুকুর, শ্রীমঙ্গল, ১৯ মে ২০২০: শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ পিপিএম (বার) এর নির্দেশনায় আমরা মানুষের সেবায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করেছি। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দেশের জন্য মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো। আমরা বেঁচে থাকতে উপজেলার একটি পরিবারকেও অনাহারে থাকতে দেব না।

শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের মানবিক সহায়তার আওতায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে করোনা ভাইরাসের কারনে কর্মহীন হয়ে পড়া ১শ’ ৫ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ শেষে এ কথা বলেন তিনি।
১৮ মে সোমবার রাতে শ্রীমঙ্গল উপজেলাধীন ভূনবীর ইউনিয়নের লইয়ারকুল ও সরকার বাজার এলাকায় এই ১শ’৫ পরিবারের মধ্যে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের উদ্যোগে ১০ কেজি করে চাল সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া পৃথক ভাবে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দিলবর নগর গ্রামে হতদরিদ্র আরও ২২টি পরিবারের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেন তারা। এনিয়ে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার হতদরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

দেশজুড়ে লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। ইতিমধ্যে সরকার, সামাজিক সংগঠন, ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে হতদরিদ্র মধ্যবিত্ত কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের মধ্যে ব্যাপক হারে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছেন শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। তারা রাতের আঁধারে শহর থেকে শুরু করে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি নিয়ে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। যে কোনো সময় ফোনে খবর পেয়ে খাবার নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন অভুক্ত মানুষের ঘরে ঘরে। এনিয়ে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে পৌঁছেছে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের খাদ্য সহায়তা। পুলিশের এই মানবিক ভূমিকায় সাধারণ মানুষের পব্যাপক প্রশংসা পাচ্ছেন শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। ভূনবীর ইউনিয়নের আঐ গ্রামের বাসিন্দা রহিছ উল্লাহ (৬৫) বলেন, ‘জীবদ্দশায় পুলিশের ভাল মন্দ অনেক কর্মকাণ্ড দেখেছি, কিন্তু এমন মানবিক আচরণ আগে কখনো দেখিনি’। রহিছ উল্লাহ বলেন, ‘আগে জানতাম পুলিশের কাজ শুধু আসামি ধরা, ৬৫ বছর বয়সে এসে এখন দেখলাম পুলিশ দিনরাত মানুষের ঘরে ঘরে খাবার নিয়ে যাচ্ছে’। শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের দিলবরনগর গ্রামের বাসিন্দা খোরশেদ আলম (৫৭) বলেন ‘শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ যে নজির সৃষ্টি করেছে, এমন নজির দেখিনি। পুলিশ মানুষের ঘরে ঘরে খাবার নিয়ে যাচ্ছে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পুলিশের এমন আচরণ দেখে সত্যিই আমরা পুলিশ বাহিনী নিয়ে গর্বিত। আমাদের দেশের পুলিশ এই করোনার সময় তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে ভাবে মানব সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন তা সকল মানবিক কাজকে হার মানিয়েছে।

জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ পিপিএম (বার) এর নির্দেশনায় আমরা মানুষের সেবায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করেছি। কতটুকু করতে পেরেছি তা জানিনা, তবে এটুকু বলতে পারি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দেশের জন্য মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো। আমরা বেঁচে থাকতে উপজেলার একটি পরিবারকেও অনাহারে থাকতে দেব না। থানা পুলিশের উপজেলার ৫ হাজর পরিবারে খাদ্য সহায়তা কাজে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুজ্জামান এর নেতৃত্বে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুছ ছালেক, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন সহ থানার সকল অফিসার ফোর্স এবং অন্যান্য সদস্যগণ যুক্ত রয়েছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ