স্বাস্থ্য সুরক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, দুর্যোগ মোকাবিলা, শিক্ষা-কৃষিতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি তেল-গ্যাস কমিটির

প্রকাশিত: ২:১৮ পূর্বাহ্ণ, জুন ২১, ২০২০

স্বাস্থ্য সুরক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, দুর্যোগ মোকাবিলা, শিক্ষা-কৃষিতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি তেল-গ্যাস কমিটির

ঢাকা, ২১ জুন ২০২০: স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং প্রকৃতির ক্ষতি হতে পারে এমন প্রকল্প বাদ দিয়ে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, দুর্যোগ মোকাবিলা, শিক্ষা-কৃষিতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি উঠেছে একটি মত বিনিময় সভায়।

তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ঢাকা মহানগর শাখার এক অনলাইন মতবিনিময় সভায় এ দাবি ওঠে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সভায় আলোচকরা বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারী তাণ্ডব চালাচ্ছে। এই সময় ‘বাজেট ২০২০-২১’ প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশবাসী আশা করেছিল করোনা মোকাবিলা, জনস্বাস্থ্যে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা হবে, দেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এমন সকল প্রকল্প বাদ দিয়ে জাতীয় সম্পদ রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
“কিন্তু দেশবাসী হতাশার সাথে লক্ষ্য করল স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে জাতীয় আয়ের শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ, যা কোনোভাবেই নাগরিকদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পারবে না। বাজেটের নীতি তৈরি হয়েছে স্বাস্থ্য ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার্থে। যে কারণে চিকিৎসা ব্যয়ের বড় অংশই মানুষকে খরচ করতে হয় নিজের পকেট থেকে।”
‘বাজেট ২০২০-২১ জনস্বাস্থ্য ও জাতীয় সম্পদ রক্ষায় সহায়ক না উপেক্ষিত’ শীর্ষক অনলাইন মতবিনিময় সভায় আরও বলা হয়, সুস্থ-কর্মঠ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার প্রধান শর্ত হল রোগ যাতে না হয়, সেজন্য নিরাপদ পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, যা মানুষকে অসুস্থ করে- বাতাস, পানি, মাটি, পরিবেশ এগুলোর দূষণ কমানো। তারপরও অসুস্থ হলে সরকারি উদ্যোগে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা। কিন্তু সরকার সেটা উপেক্ষা করে ব্যবসায়ীদের হাতে স্বাস্থ্যকে ছেড়ে দিয়েছে। যে কারণে মন্ত্রী-এমপিসহ কর্মকর্তারা অসুস্থ হলে ঢাকা মেডিকেল বা করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালে না গিয়ে ছুটে যান সিএমএইচে।
“স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক যেমন কোনো সরকারি হাসপাতালে নয়, করোনার চিকিৎসার জন্যে সিএমএইচে দৌঁড়ান, তেমনি শমরিতা হাসপাতালের মালিক মকবুল হোসেন শমরিতায় না, সিএমএইচে মৃত্যুবরণ করেন,” বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে আরও বলা হয়, শিক্ষা ও গবেষণা খাতসহ জাতীয় সক্ষমতা বিকাশে গুরুত্ব না দেয়ার ধারাবাহিকতা এই বাজেটেও অব্যাহত রাখা হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের মতো একটি ভয়াবহ প্রকল্পের জন্য উচ্চ বরাদ্দকে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে দেখিয়ে প্রতারণামূলক ভূমিকা গ্রহণ করেছে সরকার। পায়রা, মহেশখালী ও মাতারবাড়ীতে বিদ্যুতের হাব বানানোর কথা বাজেট বক্তৃতায় গর্বের সাথে ঘোষণা করেছে। এর মধ্য দিয়ে জনস্বাস্থ্য ও জাতীয় সম্পদ রক্ষায় নয়, ধ্বংসের সহায়ক বাজেট করেছে।”
ঢাকা নগর কমিটির সমন্বয় খান আসাদুজ্জামান মাসুম ও মনির উদ্দীন পাপ্পুর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এমএম আকাশ, আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুশতাক হোসেন, সলিমুল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যাপক হারুনুর রশীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজিম উদ্দীন খান, মোশাহিদা সুলতানা প্রমুখ।
সভার শুরুতে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানীর মৃত্যুতে শোক ও শ্রদ্ধা জানানো হয়।