বইপড়া –৬: যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তি মিছিল দীর্ঘতর হোক

প্রকাশিত: ৫:২১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২০

বইপড়া –৬: যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তি মিছিল দীর্ঘতর হোক

|| সমর অাধ্য || অাগরতলা (ভারত), ০৪ জুলাই ২০২০ : আমাদের গোপন আস্তানাটির চারপাশে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আসা কামানের গোলা গুমগুম শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। আমাদের মুখে আলোর ফুলকি, দেয়ালে ছায়া নাচছে। আকাশ থেকে কতগুলি বোমা পড়ল, এক সময়ে চাপা আর্তস্বর।জানি, কেনো এক কুঁড়েতে বোমা পড়ল।

উড়ো জাহাজের গর্জন শোনা গেল। মেশিনগানের শব্দ উচ্চতর হলো। তবে বাইরে থেকে আমাদের আলো কেউ দেখতে পাবে না।
আমরা দুজনে মুখোমুখি বসলাম, ক্যাট আর আমি। যুদ্ধের ময়লা পোষাকে, বেশী কথা বলছি না কিন্ত পরস্পরের প্রতি আমাদের মনোভাব অনেক মহৎ ও কোমল।
আমরা দুজন মানুষ, প্রানের দুটি ছোট স্ফুলিঙ্গ। বাইরে রাত্রি, আমাদের ঘিরে আছে মৃত্যু।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকায় একটি ছোট গল্পের দুই সৈনিকের অভিব্যক্তি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে ৭৫ বছর আগে। কিন্ত তার বিভীষিকা আজও বহন করে চলছে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি। আজও বহু রাজনৈতিক ব্যক্তি, ইতিহাসবিদ, অর্থনীতিবিদ, লেখক, সাহিত্যিক ও বিজ্ঞানীদের এবং বিশ্ব জনগণের গভীর মনোযোগ আকর্ষণ করছে। এখনও প্রকাশিত হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উপর লেখা অনেক বড় বড় বই, স্মৃতিকথা, দলিলাদির সংকলন ও অসংখ্য প্রবন্ধ। কিন্ত দুঃখের বিষয় সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলিতে যুদ্ধের কারণ, চরিত্র, ফলাফল ও শিক্ষাকে বিকৃতভাবে লেখা হচ্ছে।অথচ আসলে এই জিনিসগুলোরই গভীর ও নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ প্রয়োজন, এই জিনিসগুলো সর্বদাই মনে রাখা উচিত।
তাহলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রধান শিক্ষাগুলো কি রূপ?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও দেশপ্রেমিক মহাযুদ্ধের প্রথম ও প্রধান শিক্ষাটি হচ্ছে -ফ্যাসিস্ট জার্মানি এবং সমরবাদী জাপানের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের নিয়মানুবর্তিতা। দেশপ্রেমিক মহাযুদ্ধ- এ হচ্ছে রণাঙ্গনে এবং দেশাভ্যন্তরে সোভিয়েত মানুষের বীরত্বের ইতিবৃত্ত। কোন উৎস থেকে সোভিয়েতের মানুষ এই বিপুল শক্তি সংগ্রহ করেছিল? প্রথমেই হল তাদের উচ্চ ভাবাদর্শ, সোভিয়েত মাতৃভূমির প্রতি নিঃস্বার্থ আনুগত্য, শত্রুর বিরুদ্ধে বিজয়, কমিউনিজমের বিজয়ের দৃঢ় বিশ্বাস।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৭৫ বছর পরও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও সাঙ্গপাঙ্গরা কোন শিক্ষাই গ্রহন করেনি। তারা দ্রুত গতিতে জলে – স্থলে – অন্ত্যরীক্ষে সামরিক প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে, নতুন নতুন আগ্রাসী জোট গড়ছে এং পুরানেগুলোকে আরো দৃঢ় করে তুলছে, এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাতিন আমেরিকা, ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে খোলাখুলি সামরিক শক্তি ব্যবহারব করছে।
আগ্রাসী উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য ৭৫ বছরে কয়েক শতাধিক বার তার সশস্ত্র বাহিনী ব্যবহার করেছে ও করে চলেছে। সিআইএ এবং অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রের গুপ্তচর সংস্থাগুলোকে বিভিন্ন দেশের প্রগতিশীল ও সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর শাসন ব্যবস্থাকে উৎখাতের কাজে ব্যবহার করছে। সামরিক পোশাক পরিহিত প্রতি চতুর্থ আমেরিকান আজ কাজ করছ মার্কিন সীমানার বাইরে। মার্কিন পদাতিক, বিমান ও নৌ বাহিনীর বিপুল পরিমান শক্তি অবস্থিত রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে। এই শক্তিগুলি অন্যান্য দেশের উপর চাপ সৃষ্টি করে চলেছে।
যুদ্ধের হুমকির বিরুদ্ধে শান্তিকামী মানুষের সমাবেশ ঘটানো প্রয়োজন।
অনজ প্রতিম বন্ধু প্রবীর সাতটি বই ও প্রচ্ছদ নিয়ে আলোচনা করার জন্য যে দায়িত্ত্ব অর্পন করেছিল তার ষষ্ঠ দিনে আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত করলাম ” দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস “। হয়তো এই বইটা এখন আর বাজারে বা বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে কিনা অামার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে । এই বই প্রকাশ হয়েছিল তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক দেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ১৯৮৭ সালে। আজ সোভিয়েত নেই। তাই সন্দেহ পোষন করলাম। তবে এই বইটা আমাদের দেশে কেউ প্রকাশ করে থাকেন তবে সংগ্রহ করে পড়ে দেখবেন, এই আবেদনটুকু রইল।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ