শ্রীমঙ্গলে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী শুরু

প্রকাশিত: ৩:১৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০২০

শ্রীমঙ্গলে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী শুরু

Manual2 Ad Code

শেখ জুয়েল রানা | শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), ১৬ জুলাই ২০২০ : সিলেট বন বিভাগের সহযোগিতায় শ্রীমঙ্গলে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুরু হয়েছে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী।

Manual7 Ad Code

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় প্রধানমন্ত্রী গণভবনে সারাদেশে এককোটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর উদ্বোধনের পরপরই শ্রীমঙ্গলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলামের উপস্থিতিতে উপজেলা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গনে গাছের চারা রোপণ করার মাধ্যমে এ কর্মসূচীর শুরু হয়। এ সময় অন্যান্য সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, এ উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় ২০৩২৫ টি ফলদ, বনজ, ঔষধি বৃক্ষের চারা লাগানো হবে। পাশাপাশি সরকারি অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. মো: আব্দুস শহীদ এমপি মহোদয়ের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত আরো ২৫০০টি গাছের চারা রোপণ করা হবে।

Manual6 Ad Code

উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে গণভবন চত্বরে তিনটি গাছের চারা রোপণ করে মুজিববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে সারাদেশে ১ কোটি চারা বিতরণ, রোপণ ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সারাদেশে ১ কোটি গাছের চারা রোপন কর্মসূচির উদ্বোধনকালে দেশে মোট বনভূমির পরিমান ২৫ শতাংশে উন্নীত করায় তাঁর সরকারের লক্ষ্য পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রথমবার ’৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি তখন দেশে বনভূমির পরিমান ছিল মাত্র ৭ শতাংশ। যা আজকে আমরা ১৭ শতাংশে উন্নীত করতে সমর্থ হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য সারাদেশে ২৫ শতাংশ বনায়ন করবো। যে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

Manual3 Ad Code

প্রধানমন্ত্রী তেঁতুল, ছাতিয়ান এবং চালতা তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন এবং একই সঙ্গে তিনি ‘জাতীয় বৃক্ষরোপন কর্মসূচি ২০২০’এর উদ্বোধন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সবাইকে আহ্বান করবো, আপনারা যে যেখানে আছেন, আপনার যতটুকু জায়গা আছে, সেখান আপনি যা পারেন গাছ লাগান। যারা শহরে থাকেন তারা ব্যালকনিতে টবে হলেও গাছ লাগান।’
গাছ লাগালে মনটাও যেমনি ভাল লাগবে তেমনি সেটি আপনার অর্থনৈতিক সচ্ছলতাও আনবে এবং নিজের গাছের একটি ফল বা কাঁচা মরিচ খেলেও কিন্তু ভাল লাগে কাজেই আমি সেভাবেই সবাইকে আহ্বান করবো-আসুন আমরা সবাই মিলে গাছ লাগাই, বলেন তিনি।
আমাদের দেশটা একটা ব-দ্বীপ বিধায় এদেশে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে দেশকে রক্ষার পাশাপাশি উন্নত করায় এ সময় সকলকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন রক্ষা করা দরকার তেমনি জনগণের খাদ্য ও পুষ্টির দরকার। সে কারণেই আমাদের এই বৃক্ষরোপন করাটা অত্যন্ত দরকার।’
‘আমি শুরু থেকেই সিদ্ধান্ত দিয়েছি প্রত্যেককে একটি ফলদ, একটি বনজ এবং একটি ভেষজ এই তিনটি করে গাছ লাগাতে হবে। কাজেই আজকে আমি লাগিয়েছি একটি তেঁতুল গাছ, একটি চালতা গাছ এবং একটি ছাতিয়ান গাছ,’ যোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা তাঁর লাগানো গাছগুলোর উপযোগিতা তুলে ধরে বলেন, ছাতিয়ান গাছ খুব বড় এবং কান্ড মোটা হয় যেটি কাঠ হিসেবে খুব ভাল, সেজন্য এটা লাগানো হয়েছে। আর তেঁতুলের কথা শুনলেই জিবে যেমন পানি আসে তেমনি ছোটবেলার কথাও মনে পড়ে যায়। এটা শরীরের জন্যও খুব উপকারী। কারো উচ্চরক্তচাপ রোগ থাকলে তারজন্য, তাছাড়া শরীরকে ঠান্ডা রাখার জন্য তেঁতুল খুবই উপকারী। আর চালতা গাছের পাতা ও ফুল যেমন সুন্দর দেখতে তেমনি চালতা গাছেরও অনেক গুণ রয়েছে।
বনায়নের পাশপাশি যেন সবুজ বেষ্টনীর সৃষ্টি হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সারাদেশে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে বৃক্ষরোপণ করে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। তাঁরই স্মরণে আমরা এই কর্মসূচি পালন করছি এবং প্রতিবছরই এই কর্মসূচি আমরা পালন করে থাকি।’
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ১৯৮৪ সাল থেকে প্রতি বছর পহেলা আষাঢ় সারাদেশে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষকলীগ উদ্যোগ গ্রহণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। যাতে মূল সংগঠনসহ সকল সকল সহযোগী সংগনের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করে থাকেন।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর বৃক্ষরোপনকালে গণভবনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পিএমও সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পরিবেশ ও বন সচিব জিয়াউল হাসান এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, গত ১২ জুলাই ভার্চুয়াল বৈঠকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এই কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় তিনটি চারা-একটি ফলদ, একটি বনজ এবং একটি ঔষধি গাছের চারা আনুষ্ঠানিকভাবে লাগানো হবে।’
পরে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়ম বজায় রেখে কর্মসূচি উদ্বোধনের দিন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর চলতি বৃক্ষরোপণ মৌসুমে দেশের ৪৯২টি উপজেলার প্রতিটিতে ২০ হাজার ৩২৫ টি চারা রোপণ করা হবে বলেও শাহাব উদ্দিন জানান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ