পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রোগ্রেসিভ ফোরামের’ ভার্চুয়ালসভা

প্রকাশিত: ৭:৩৬ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০২০

পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রোগ্রেসিভ ফোরামের’ ভার্চুয়ালসভা

অখিল সাহা, টরন্টো (কানাডা), ২৫ জুলাই ২০২০ : দেশের ২৫টি সরকারি মালিকানাধীন পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভার্চুয়াল সভা করেছে ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রোগ্রেসিভ ফোরাম’।

নিউ ইয়র্ক সময় রোববার সকালে অনুষ্ঠিত এ সভায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রমজীবি সংগঠনের পক্ষে পাটকল শ্রমিক, সংগঠক, অর্থনীতিবিদ ও প্রবাসীরা অংশ নেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রোগ্রেসিভ ফোরাম’ এর সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদুল ইসলাম। সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আলীম উদ্দিন, তাকে সহযোগিতা করেন কোষাধ্যক্ষ জাকির হোসেন বাচ্চু।
সভায় ‘পাট ও পাটশিল্প বাঁচাও’ এবং ‘পাটকল বন্ধের সরকারি ঘোষণা মানি না, মানবো না’ ইত্যাদি শ্লোগান দেন অংশগ্রহণকারীরা।
বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শহীদুল্লাহ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ, পাটকল শ্রমিক নেতা লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন, সিপিবি যুক্তরাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের অর্থনীতিবিদ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সিপিবির অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ মুস্তাফিজুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র উদীচীর সহ সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস, জাতিসংঘের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ নজরুল ইসলাম এবং সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল্লাহ আল কাফী রতন।
পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় উদীচীর সহ সভাপতি যুক্তরাজ্যের রফিকুল হাসান জিন্নাহ, যুক্তরাজ্য সিপিবির কর্মী আবেদ আলী, যুক্তরাজ্যের মো. সেলিমুজ্জামান, যুক্তরাষ্ট্র প্রোগ্রেসিভ ফোরামের উদীচী সহ সভাপতি শফি চৌধুরী হারুন, আজিজুল হক, শ্যাম চন্দ, আলি সিদ্দিকী, যুক্তরাষ্ট্র মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুলেখা পাল, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক উদ্যোগ কানাডার পক্ষে অখিল সাহা ও চট্টগ্রামের ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের শ্রমিক নেতা তপন দত্ত।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা উল্লেখ করেন, এ আত্মঘাতী ও জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তের কারণে শুধু পঁচিশ হাজার নিয়মিত শ্রমিক ও চব্বিশ হাজার অনিয়মিত শ্রমিকের জীবন অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে তা-ই নয়, এর ফলে দেশের তিন লক্ষাধিক পাটচাষীর যে সমস্ত জলপ্লাবিত জমিতে অন্য কোন ফসল হয় না তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ সিদ্ধান্তের কারণে জাতীয় ও দেশের রপ্তানীভিত্তিক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকারত্ব ও আর্থিক অনিশ্চয়তায় পতিত হবেন।
তারা আরও মনে করেন, মহামারীর সময় যখন সব রপ্তানীমুখী শিল্প রপ্তানীতে ঋণাত্মক, তখন একমাত্র পাটশিল্পই ধনাত্মক ভূমিকা পালন করছে। সারা বিশ্বজুড়ে পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটপণ্যের ভবিষ্যত এখনো সুরক্ষিত রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
সভায় বক্তারা সরকারের প্রতি পাটকলগুলো আধুনিকায়ন, বিজেএমসির মাথাভারি প্রশাসন সংস্কার ও পেশাদারী পরিচালন ব্যবস্থা চালু, শ্রমিকদেরকে কারখানা পরিচালনায় সংযুক্ত করা, দেশের অভ্যন্তরে পাটপণ্য বাধ্যতামূলক পণ্য মোড়ক আইনের আওতায় পাটের ব্যাগের চাহিদার সুযোগ গ্রহণ, আন্তর্জাতিক বাজারের বিপুল প্রাকৃতিক তন্তুজাত পণ্যের চাহিদার সুযোগ গ্রহণ, পাটকলগুলো আধুনিকায়নে চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত এমওইউ বাস্তবায়নসহ আরো কিছু বিকল্প প্রস্তাব তুলে ধরেন এবং পাটকলবন্ধে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত রদ করার দাবি জানান।
তারা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পাটকল চালু রাখতে বাধ্য করার পক্ষে মত প্রকাশ করেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ