যেন নিরবেই চলে গেলেন শেখ মোহাম্মদ ফরিদ ভাই

প্রকাশিত: ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০

যেন নিরবেই চলে গেলেন শেখ মোহাম্মদ ফরিদ ভাই

|| শহীদুল ইসলাম || ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ : যেন নিরবেই চলে গেলেন আমাদের সদা প্রাণোচ্ছল নিউজ লেটার পত্রিকার প্রধান উপদেষ্টা শেখ মোহাম্মদ ফরিদ ভাই। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও অপার শ্রদ্ধাঞ্জলি।

চলে যেতে হয়। চলে যেতে হবে। সবার জন্য এই নিয়ম। এটা এই পৃথিবীর সবার জন্যই নিয়ম। যাঁরা একদা ছিলেন অতীতে, যুগের পর যুগ বা শতাব্দীর পর শতাব্দী আগে, তারাও চলে গেছেন। ভবিষ্যতে যারা আসবেন বা থাকবেন তারাও চলে যাবেন। এখন যাঁরা আছেন তাদের জন্য সেই একই শ্বাসত নিয়ম।

যে চলে যায়, তার চলে যাওয়ার অভাববোধ করে তার প্রিয়জন, আপনজনরা তাঁর বিয়োগব্যাথা অনুভব করে। সবার ব্যাপারেই একই কথা, তবে এমন কেউ কেউ চলে যায় যাদের চলে যাওয়ায় শুধু তাদের পরিবার বা আপনজনরাই তাদের বিয়োগব্যাথা অনুভব করে না; সে ব্যাথা অনুভব করে আরো অনেকেই। মনে করে বৃহত্তর পরিসরে। তাদের চলে যাওয়ায় শুধু তাদের পরিবারই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় সমাজও। কারণ তারা পারিবারিক গন্ডি উর্ধ্বে উঠে এমন কিছু অবদান রেখে যান, যার জন্য পরিবারের আপনজনের বাইরেও বৃহত্তর সমাজ হয়ে ওঠে তাদের আপন পরিবারের মতো। যে কাজ তারা করে যান তাতে লাভবান বা উপকৃত হয় সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী। এমনই একজন ব্যাক্তিত্ব আমাদের ‘নিউজ লেটার’ পত্রিকার প্রধান উপদেষ্টা শেখ মোহাম্মদ ফরিদ পৃথিবীর সকল বন্ধন ছিন্ন করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন।

করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সিএমএইচ-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ সেপ্টেম্বর-২০২০ শনিবার সকাল ০৬.০৫ ঘটিকায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বিশিষ্টি ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, সিএন্ডএফ জগতের কিংবদন্তী পুরুষ বিস্ময়কর রকম চিন্তাশক্তি ও শ্রমশক্তিময় মানুষ শেখ মোহাম্মদ ফরিদ-এর সাথে ৯০-এর দশকে ‘নিউজ লেটার’ পত্রিকার উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে অলংকৃত হওয়ার পর থেকে পরম ভালোবাসায় ত্রিশটি বছর এক সাথে পথচলায় অদ্যবধি তাঁর হাস্যজ্জ্বল মুখচ্ছবি ছাড়া একটি মূহুর্তও দেখিনি। আমার অত্যন্ত প্রিয় কর্মবীরকে নিয়ে এভাবে শোকগাঁথা লিখতে হবে এটা কখনো ভাবিনি। বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন তাঁর। তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর সঙ্গে মিথস্ক্রীয়ার কিছু স্মৃতি এখন প্রাণে খুবই নাড়া দেয়।

দেশের অত্যন্ত স্বনামধন্য সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স ফারকো সিন্ডিকেট’-এর কর্ণধার হিসেবে দীর্ঘ ৩৮ বছর সিএন্ডএফ ভূবনে সদর্প পদচারণার মাধ্যমে শেখ মোহাম্মদ ফরিদ অনেক শ্রম ও মেধা মননের সমন্বয় ঘটিয়ে সৃষ্টিশীল কর্ম-পরিকল্পনার বাস্তব রূপ দিয়ে নিজের অবস্থানকে দৃঢ়চেতা, বলিষ্ট সংগঠক, সার্থক ব্যাবসায়ী, পোর্ট-কাস্টমস্ আইন বিষয়ে বিষেষজ্ঞ ও তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসমৃদ্ধ ব্যক্তিত্ব হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্য, সাংগঠনিক, মানব সেবা অঙ্গনের সুউচ্চ স্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ঢাকা কাস্টমস্ এজেন্টস এসোসিয়েশন ও ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেখ মোহাম্মদ ফরিদ দায়িত্ব পালনকালে তার স্বীয় মেধা, শ্রম, একনিষ্ঠ কর্ম প্রচেষ্টা, তীক্ষ্ম বুদ্ধিমত্তা ও কঠোর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজস্ব ব্যাবসার গ-ি ছাড়িয়ে তাঁর মেধার দ্যুতি বিস্তৃত করেছেন; সরকারি-বেসরকারি ও সামাজিক বিভিন্ন সংস্থায় স্পেশালাইজড প্রফেশনালিজম ও কাস্টমসের জননন্দিত রিসোর্স পার্সন হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেছেন সর্বব্যাপী।

মেধাবী সন্তানরাই দেশের সম্পদ। একটি দেশ এগিয়ে যাওয়ার মূল শক্তি এই মেধাবীরা। এদেশের এমনই একজন মেধাবী কর্মবীরের নাম শেখ মোহাম্মদ ফরিদ। আমাদারে ‘নিউজ লেটার’ পরিবার আজ তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে মুহ্যমান। আল্লাহপাক যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করেন। এই দোয়া করছি। একই সাথে তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা। আল্লাহপাক আমাদের সকলের সহায় হোন।

#
এম শহীদুল ইসলাম
সম্পাদক, নিউজ লেটার

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ