সিলেট ২৫শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদক || ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ : জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মুক্তির জন্য আঞ্চলিক অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার জন্য ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে তার ভিত্তিতে আমাদের নদী ব্যবস্থাপনা জোর দিতে হবে। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে এগোতে হবে।
আন্তর্জাতিক নদী দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তারা এ কথা বলেছেন। ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক নদী গবেষক ও ঢাকা স্কুল অব ইকনমিক্সের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান।
ওয়েবিনারে ড. কাজী খলিকুজ্জামান নদী ও পরিবেশ রক্ষা করে আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ রোববার সকাল সাড়ে ১০ টায় ‘নদী বাংলাদেশের জীবন: নদী বাঁচাই, পরিবেশ বাঁচাই, দেশ বাঁচাই’-শীর্ষক ওয়ার্কার্স পার্টির এই ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি।
পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি।
ওয়েবিনারে কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, নদী রক্ষায় ১৯৯৯ সালের পানি নীতি এবং ২০১৩ সালের পানি অ্যাক্ট বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে নদী সমস্যার সমাধান করা জরুরি। তার জন্য সবার আগে যেকোনো পরিকল্পনার সাথে ভুক্তভোগিদের সম্পৃক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব আমরা দেখছি। জলবায়ুর অভিঘাত পানির উপরে পড়ে এবং পানির সাথে আমাদের কৃষি ও পরিবেশসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও পরে। তাই নদীর প্রবাহতা অক্ষুন্ন রেখে এই ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
আন্তর্জাতিক এই গবেষক আরও বলেন, অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনায় গঙ্গা-ব্রম্মপুত্র-যমুনা নদীকে গুরুত্ব দিয়ে এগোতে হবে। পাশাপাশি চীনের সাঙ্গু থেকে যমুনার যে প্রবাহ সে বিষয়েও পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি গঙ্গা চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার যে ধারা আছে তাও নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ৪৪৫৩ জন নদী দখলকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে নদীকে রক্ষা করতে হবে। বালি উত্তোলন ও বর্জ্য ফেলা নিয়ন্ত্রণ করে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এগোতে পারলে আমরা অবশ্যই নদীকে বাঁচাতে পারব। আর এসবের জন্য সকল রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও তরুণ প্রজন্মের ঐক্যের মধ্য দিয়ে নদী রক্ষা আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ব্রম্মপুত্র, পদ্মা, যমুনা ও মেঘনা দিয়ে প্রবাহমান অভিন্ন নদীর পানি বন্টন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ জরুরি। তা নাহলে জলবায়ু অভিঘাত থেকে আমরা রক্ষা পাব না, রক্ষা পাবে না ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
তিনি বলেন, নদী আমাদের জীবনের সাথে জড়িত। জন্মাতে পানি লাগে, আবার মৃত্যুর পরেও পানি প্রয়োজন। কৃষিসহ সবকিছুতে পানি অপরিহার্য। আর এই পানির উৎস নদী। তাই নদী রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
মেনন বলেন, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, নদী রক্ষা আন্দোলনকারী সংগঠন এবং সাধারণ মানুষের ঐক্যের মধ্যদিয়ে একটা লড়াই গড়ে তুলতে হবে। নদী রক্ষার লড়াইকে রাজনৈতিক লড়াই হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, চুক্তিতো কোনো বাইবেল নয়। আগামী ২০২৬ সালেই গঙ্গা চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। তাই আগামীর চুক্তি নিয়ে আমাদের এখনই ভাবতে হবে। সময়ের প্রয়োজনে আজ গঙ্গা চুক্তি নিয়ে ভাববার সময় এসেছে।
তিনি বলেন, করোনা সঙ্কটের মতোই বন্যা ও নদী ভাঙন দেশবাসীর জন্য মহাসঙ্কট হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলাবদ্ধতা আজ মানুষের জ্বালা হয়ে উঠেছে। এসবের জন্য নদীর নাব্যতা নিশ্চিত করে নদীকে রক্ষা করতে হবে। তার জন্য আসুন দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে নদী রক্ষার আন্দোলনকে জোরদার করে নদী বাঁচাই, দেশ বাঁচাই।
ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন তিস্তা রক্ষা আন্দোলনের আহবায়ক নজরুল ইসলাম হক্কানী, প্রকৌশলী মুহাম্মাদ হেলাজ্জুজামান হেলাল, নদী বিশেষজ্ঞ মাহবুব সিদ্দিকী, দৈনিক সমকালের সহ-সম্পাদক ও রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন, নড়াইলের চিত্রা নদী রক্ষা আন্দোলনের নেতা নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D