সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান মহিলা পরিষদের

প্রকাশিত: ৫:২৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০২০

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান মহিলা পরিষদের

বিশেষ সংবাদদাতা || ঢাকা, ১৮ অক্টোবর ২০২০ : আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখুন’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের, ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৮ অক্টোবর (রবিবার) সকাল ১১ টায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের,ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখুন”এই স্লোগানকে সামনে রেখে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের,ঢাকা মহানগর কমিটির কমিটির সভাপতি মাহাতাবুন নেসা।

কর্মসূচিতে ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনুস বলেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য বজায় মাধ্যমে আমি বিশ্বাস করি, আশা করি সার্বজনীন দুর্গোৎসবে আমরা সকল সম্প্রদায় একসঙ্গে সঙ্গে সব ধর্মের মানুষ সম্মিলিতভাবে অংশগ্রহণ করবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলা হলেও এখনও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ নানাভাবে বঞ্চনার শিকার হচ্ছে।সাম্প্রদায়িকতার বৈষম্য দূর করে একটি মানবিকতাপূর্ণ সমাজ গঠনে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।এই অস্থিতিশীল এবং অসহিষ্ণু বিশ্বে মানবতা এবং শান্তি স্থাপন করতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।সকল ধর্মের মূল কথা হলো মানুষের কল্যাণ। ধর্মীয় সহিষ্ণুতা, অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আমাদের অনেকের মধ্যে একধরনের ধারণা আছে, যার যার ধর্ম তার তার ধর্মই শ্রেষ্ঠ। বাকি ধর্মের প্রতি তাচ্ছিল্যভাব দূর করতে হবে। সব ধর্মকে জানতে হবে, জানাতে হবে। তবেই তো নিজ ধর্মের মহত্ত্ব অন্য ধর্মের মানুষরা জানতে পারবে।এদেশে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবাই সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করবো। এজন্য আমাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তনের পাশাপাশি অসাম্প্রদায়িক চেতনাও লালন করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সামাজিক, প্রশাসনিক ও সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা থেকে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।ধর্ম নিয়ে এমন বাড়াবাড়ি আমরা চাই না। আমরা শান্তি চাই। সবধর্মের মানুষ একসঙ্গে থেকে এদেশকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে নিতে চাই। এদেশটা হোক সবার, সব মানুষের।ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক কানিজ ফাতেমা টগর বলেন:
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সামাজিক, প্রশাসনিক ও সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা থেকে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। আসন্ন দুর্গাপূজায় সাম্প্রদায়িক সম্পীতি বজায় রাখার দাবিতে আজ আমরা সকলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের, ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি অংশগ্রহণ করেছি,তাই আমরা চাই আগামীতে আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে আহ্বান জানাচ্ছি।

ঢাকা মহানগর কমিটির লিগ্যাল এইড সম্পাদক শামীমা আফরোজ আইরিন বলেন,সাম্প্রদায়িকতার বৈষম্য দূর করে একটি মানবিকতাপূর্ণ সমাজ,রাষ্ট্র গঠনে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের বিভেদ ভুলে আজ আমরা সবাই ঢাকা মহানগর কমিটি উদ্যোগে আয়োজিত “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখুন” মানববন্ধন কর্মসূচি।সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বলতে বোঝায় এমন এক সহবস্থান যেখানে সব ধর্মের মানুষ মিলে মিশে থাকবে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বক্তব্য শেষ করেন।

পরিবেশ উপপরিষদের সম্পাদক হোসনে আরা শিল্পী বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা একান্তই কাম্য। আমাদের সকলের সহযোগিতা,সহমর্মিতা সম্প্রীতির বুনিয়াদকে মজবুত করে গড়ে তুলতে পারলে একটি সুন্দর রাষ্ট্র, সমাজ ব্যবস্থা মধ্যেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা সম্ভব।দুর্গাপূজায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অনুষ্ঠানে বক্তব্যে ঢাকা মহানগর কমিটি সদস্য হেনা চৌধুরী বলেন: দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধির ও উন্নতির পথে পরিচালিত করতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একান্ত প্রয়োজন।আমরা যে কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ হই না কেন আমরা সকলে একই ভ্রাতৃ সম্পর্কে আবদ্ধ।আমাদের সব ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠানে অবাধ অংশ গ্রহণের দ্বার মুক্ত থাকলে মিলনের পথ প্রশস্ত হবে। ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখুন”শ্লোগানকে সামনে রেখে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কর্মসূচির সমাপ্ত ঘোষণা করেন।

উক্ত কর্মসূচিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের,ঢাকা মহানগর কমিটির সংগঠন, পাড়া শাখায় সদস্যবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সকল সাংবাদিক বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য খালেদা ইয়াসমিন কনা।