সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তির শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে: ওয়ার্কার্স পার্টির ওয়েবিনারে বক্তারা

প্রকাশিত: ১২:৫৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৯, ২০২০

সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তির শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে: ওয়ার্কার্স পার্টির ওয়েবিনারে বক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক || ঢাকা, ২৯ নভেম্বর ২০২০ : ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে ‘100 years of Communist Movement in India: The struggle against Imperialism and Communism for Secular Democratic South Asia’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২৯ নভেম্বর রবিবার সকালে প্রায় দু’ঘন্টাব্যাপী এই আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি জননেতা কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি।
মূলপত্র উত্থাপন করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে অংশ নেন- ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআইএম) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির সিনিয়র কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাধব কুমার নেপাল, পাকিস্তান কমিউনিস্ট পাটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ডঃ আয়াজ মোহাম্মদ, সর্বভারতীয় ফরওয়ার্ড ব্লকের আন্তর্জাতিক কমিটির ইনচার্জ জি দেবরাজন।

মূলপত্রে ফজলে হোসেন বাদশা বাংলাদেশে বামপন্থীদের বিভিন্ন আন্দোলনের-সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন। বিশেষ করে তেভাগা আন্দোলন, টংকা আন্দোলন, নানকার আন্দোলন, উল্লাপাড়া আন্দোলন, ত্রিপুরা ট্রাইবল আন্দোলনসহ আরো বহু আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরেন তিনি। ফজলে হোসেন বাদশা মূলপত্রে উল্লেখ করেন, ‘শ্রমিক শ্রেণি বৃটিশ শাসনবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’

ওয়েবিনারে মূলপত্র উত্থাপন করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।

ওয়েবিনারে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি তাঁর বক্তবে বলেন, ‘কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠার পর শতবর্ষ ধরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের কমিউনিস্টরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।’ তিনি বলেন, ‘১৯২০ সালে ভারত উপমহাদেশে কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা হলেও তা পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলংকাসহ দক্ষিণ এশিয়ায় বিস্তার লাভ করে। ভারতীয় শাসকগোষ্ঠী বর্তমানে মার্কিন নীতি অনুসরণ করছে।’ তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারিতে চীন, ভিয়েতনাম তাদের সক্ষমতা দেখিয়েছে- শুধুমাত্র সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কারণে।’

মাধব কুমার নেপাল তার বক্তৃতায় বলেন, শতবর্ষে দক্ষিণ এশিয়ায় কমিউনিস্ট আন্দোলন ঐতিহাসিক, দ্বান্দিক ও বস্তুবাদী ধারা পার করেছে। ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ায় শক্তিশালী প্রভাব ফেলেছিলো। নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা লাভ করে ১৯৪৯ সালে।

আয়াজ মোহাম্মদ বলেন, ‘১৯৪৮ সালে পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা হয়, ড. সাজ্জাদ জহির সেই সময় পার্টির নেতৃত্ব দেনে এবং গোপনে তিনি শ্রমিক ও কৃষকের মধ্যে পার্টি গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। পাখতুন খোয়া ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে পার্টির ভিত্তি তৈরি হয়।’

দেবরাজন তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘ভারতে ১৩টি ট্রেড ইউনিয়নের মধ্যে ১১টিই বামপন্থীরা নেতৃত্ব দিচ্ছে। এখনো শ্রমিক ও কৃষকদের বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুললেও আমরা তা ভোটের বাক্সে প্রতিফলন কাটাতে ব্যর্থ হচ্ছি।’ আশা করি আগামীতে সম্ভাবনাময় পরিবর্তনের মাধ্যমে ভালো করা সম্ভব।

আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন- ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ড. সুশান্ত দাস। ওয়েবিনারে সকল বক্তাগণই সাম্রাজ্যবাদ ও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।