ভারতের রাজধানী দিল্লি কার্যত ঘিরে ফেলেছেন কৃষকরা

প্রকাশিত: ৪:৫০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১, ২০২০

ভারতের রাজধানী দিল্লি কার্যত ঘিরে ফেলেছেন কৃষকরা

দিল্লি (ভারত), ০১ ডিসেম্বর ২০২০ : ভারতের রাজধানী দিল্লি কার্যত ঘিরে ফেলেছেন লক্ষ লক্ষ কৃষকেরা। কৃষকরা দিল্লির ভিতরে ঢুকে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। সরকারের সঙ্গে আলোচনা চান। ৫০০টির মতো কৃষক সংগঠন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ করছেন। তার মধ্যে বামপন্থী সংগঠনগুলো এর নেতৃত্বে আছেন। লক্ষ লক্ষ কৃষক ট্র্যাক্টরে করে মাস দুয়েকের খাবার সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। তাঁরা এসেছেন মূলত ছয়টি রাজ্য থেকে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, কেরালা ও রাজস্থান থেকে।

তারা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। মোদী সরকার সম্প্রতি কৃষি আইনে বদল করে কর্পোরেট চাষ ও কৃষকদের কাছ থেকে যত খুশি ফসল কেনার অনমুতি দিয়েছে। কর্পোরেটগুলি কৃষকদের আগাম টাকা দিয়ে কী চাষ করতে হবে সেটাও বলে দিতে পারবে। এই ছয় রাজ্যের কৃষকদের হচ্ছে, এর ফলে তাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে। তারা শেষ পর্যন্ত কর্পোরেটের দাসে পরিণত হবেন। সুবিধা হবে বড় সংস্থাগুলির। কয়েক বছরের মধ্যে কৃষিতে তাঁদের মনোপলি স্থাপিত হবে।

দিল্লি কার্যত ঘিরে ফেলেছেন কৃষকরা। রাজধানীতে ঢোকার পাঁচটি প্রধান রাস্তা আছে। তার মধ্যে দুইটি পুরোপুরি এবং একটি আংশিকভাবে বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বাকি দুইটি ঢোকার রাস্তাতেও কৃষক জমায়েত হয়েছে। গত পাঁচদিন ধরে তাঁরা দিল্লিতে আসার চেষ্টা করছেন। পুলিশের অবরোধ, লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান অগ্রাহ্য করে তারা দিল্লির সীমান্তে চলে এসেছেন।

কীভাবে কৃষকদের সামলানো হবে তা নিয়ে রোববার গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর সহ চার-পাঁচজন মন্ত্রী। সকালে আবার অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তোমর। তারপর সরকার জানিয়েছেন, তারা কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি। কিন্তু কৃষকদের দিল্লিতে ঢোকা চলবে না। তাঁদের চলে যেতে হবে দিল্লির সীমান্ত থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরের বুরারিতে। কিন্তু কৃষকরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। হাজার হাজার কৃষক হরিয়ানার টিকরি ও সিংঘু সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে। উত্তর প্রদেশের গাজিপুর সীমানাও আংশিকভাবে বন্ধ। পুলিশের পক্ষ থেকে মানুষকে বিকল্প পথে দিল্লিতে ঢুকতে বলা হয়েছে।

এই শীতের মধ্যেও কৃষকদের লক্ষ্য করে জলকামান ছোঁড়া হচ্ছে। শিবসেনা বলেছে, এই শীতে কৃষকদের বিক্ষোভে জলকামান ব্যবহার করা খুবই নিষ্ঠুরতার পরিচয়। ইতিমধ্যে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। একজন কৃষক জলকামানের উপরে চড়ে তা বন্ধ করে লাফিয়ে আবার নিজের ট্র্যাক্টরে ফিরছেন।

সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বারবার বলা হচ্ছে, এতে আদতে কৃষকদের লাভ হবে। কারণ, তাঁরা বেশি দামে জিনিস বিক্রি করতে পারবেন। কৃষকদের দাবি, তা হলে ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্যে ফসল কেনা বাধ্যতামূলক করা হোক। সেই দাম না দিলে কর্পোরেটগুলিকে শাস্তি পেতে হবে, সেই ব্যবস্থা আইনে রাখা হোক। কিন্তু সরকার এখনো পর্যন্ত ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্যকে আইনি রূপ দিতে রাজি নয়।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ