কিংবদন্তি বিপ্লবী কমরেড অমল সেন লাল সালাম

প্রকাশিত: ৮:৩৭ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২১

কিংবদন্তি বিপ্লবী কমরেড অমল সেন লাল সালাম

|| সৈয়দ অামিরুজ্জামান || ১৮ জানুয়ারি ২০২১: এবছর ১৭ জানুয়ারি উপমহাদেশের কমিউনিস্ট অান্দোলনের পথিকৃৎ, ঐতিহাসিক তে-ভাগা অান্দোলনের নেতা, ‘৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা, অাজীবন বিপ্লবী, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কিংবদন্তি কমরেড অমল সেনের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলাজনিত পরিস্থিতিতে ঢাকা সহ সারাদেশে সংক্ষিপ্ত পরিসরে পালিত হয়েছে। ঢাকায় অাগের দিন ১৬ জানুয়ারি ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তাঁর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরেড কামরূল আহসান, কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড তপন দত্ত, কমরেড করম আলী, কমরেড আমিরুল হক আমিন, কমরেড এ্যাড. আকসিম এম চৌধুরী, কমরেড জাকির হোসেন রাজু, কমরেড মোস্তফা আলমগীর রতন, কমরেড সাব্বাহ আলী খান কলিন্স, কমরেড আবুল হোসাইন, কমরেড শাহানা ফেরদৌসী লাকী, কমরেড মুর্শিদা  আখতার নাহার, কমরেড কাজী মাহমুদুল হক সেনা, কমরেড মুতাসিম বিল্লাহ সানী, কমরেড আজাহার আলী প্রমুখ। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আফজাল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড.মৃণাল কান্তি দাস এমপি, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল আউয়াল শামিম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সহকারি-সম্পাদক কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড সুলতান আহমেদ বিশ্বাস, কমরেড সুনিল শীল, বাংলাদেশ জাসদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসিরুল হক নবাব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করিম শিকদার, জাসদের সহ-সভাপতি শফিউদ্দিন মোল্লা, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান জামান রোকন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ, কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, গণতন্ত্রী পার্টির সম্পাদকমন্ডীর সদস্য কমল ঘোষ, ঐক্য ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ভুইয়া, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার, ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, বাংলাদেশ যুবমৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়ন, বাংলাদেশ নারী মুক্তি সংসদ, জাতীয় কৃষক সমিতি, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা, নারায়ণগঞ্জ জেলা, মানিকগঞ্জ জেলা, গাজীপুর জেলা, শেরপুর জেলা, সাপ্তাহিক নতুন কথা, পার্টি স্কুল, কেন্দ্রীয় অফিস, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারি ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক গার্মেন্টস শ্রমিক   ফেডারেশন, টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, জাতীয় গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন, শ্রমিক-কর্মচারি ঐক্য পরিষদ (স্কপ), বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, জাতীয় শ্রমিক জোট, বাংলাদেশের জাতীয়   শ্রমিক জোটসহ বাংলাদেশের প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক বিভিন্ন শ্রেণী গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

নড়াইলের বাকড়ীতে শ্রদ্ধা নিবেদন

কমরেড অমল সেনের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী   উপলক্ষে কমরেড অমল সেন স্মৃতিরক্ষা কমিটির আয়োজনে যশোর-নড়াইলের সীমান্তবর্তী এগারখানের বাকড়ী গ্রামে ১৭ জানুয়ারি ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড নজরুল ইসলাম, কমরেড দীপংকর সাহা দিপু, কমরেড আবুবকর সিদ্দিকী, কমরেড  কিশোর রায়, কমরেড সবদুলহোসেন খানসহ নেতৃবৃন্দ।

কমরেড অমল সেন স্মরণে শ্রীমঙ্গলেও অালোচনা সভার অায়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অামি উপস্থিত ছিলাম। এছাড়াও বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় পালনের খবর পাওয়া গেছে।

অাজীবন বিপ্লবী মহান এই নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। যৌবনের প্রারম্ভে আরাম-আয়েশ তুচ্ছ করে তিনি সংগ্রাম আর শিক্ষার আলোকবর্তিকা হাতে কৃষকের কুঁড়েঘর থেকে মানবমুক্তির আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বিপ্লবী জীবন ও রাজনীতি শুরু করেছিলেন। তাঁর স্মৃতিসৌধের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁরই আদর্শে উদ্বুদ্ধ হতে হবে সকলকে। অাজও শপথ নিতে হবে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাওয়ার।

১৯১৩ সালের ১৯ জুলাই কমরেড অমল সেনের জন্ম যশোর জেলার আফরা গ্রামে এক জমিদার পরিবারে। কিন্তু প্রায় শতাব্দীকাল এই ভূখণ্ডে কৃষক আন্দোলন আর কমিউনিস্ট আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সার্বিক ভূমিকা রাখার পরও তিনি নড়াইলের অমল সেন ছিলেন। মৃত্যুর পরেও তিনি ফিরে গেছেন তাঁরই অতি প্রিয় মানুষদের কাছে, যারা তাঁকে স্মরণ করবে অনাগতকাল ধরে লোকজ সংস্কৃতির আবহে ‘অমল সেন’ মেলার মধ্য দিয়ে।

তৎকালীন ভারতবর্ষে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের আবহে বেড়ে ওঠা অমল সেনও অতি অল্প বয়সেই জড়িয়ে পড়েন ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র জাতীয়তাবাদী বিপ্লবী আন্দোলনে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের ঢেউ এসে লাগে এ দেশেও। তিনি দ্রুতই আকৃষ্ট হন মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী আদর্শের প্রতি। গড়ে তোলেন যশোর-নড়াইল অঞ্চলের ঐতিহাসিক তেভাগা কৃষক আন্দোলন। ‘নড়াইলের তেভাগা আন্দোলনের সমীক্ষা’ বইটিতে কমরেড অমল সেন তাঁর বিশ্লেষণী দক্ষতায় কৃষকের সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরেছেন।

নড়াইলের তেভাগা আন্দোলন স্থান করে নিয়েছে ইতিহাসে। এ আন্দোলনের রয়েছে সমষ্টিগত সাফল্য, পাশাপাশি কী ত্যাগ-তিতিক্ষা করতে হয়েছিল এ এলাকার জনগণের, সেটাও ইতিহাসের অংশ। কত পরিবার ধ্বংস হয়েছে, কত জেল-জুলুম আর নিপীড়ন সহ্য করতে হয়েছে, তা কি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভুলে যাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম? কমরেড অমল সেনের বৈশিষ্ট্য ছিল, তিনি সংগ্রামে ছিলেন সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে থাকা নেতা। যখন নির্যাতন, নিপীড়ন নেমে এসেছে, তখনো তিনি সামনে দাঁড়িয়েই তা সহ্য করেছেন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিক শক্তি যা করতো, তথাকথিত স্বাধীনতা লাভের পর, পাকিস্তান আমলে, বিপ্লবী সংগ্রামীদের জীবনে নেমে আসে সেই নির্যাতন। পাকিস্তান আমলে ১৯ বছরই তাঁকে কাটাতে হয়েছে জেলে।

ভারতীয় উপমহাদেশে গড়ে ওঠা কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রতিটি বাঁকে তিনি তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন। দেশ বিভাগের প্রাক্কালে তৎকালীন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির গৃহীত রনদিভে লাইনের বাম বিচ্যুতি পার্টিকে যে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে, তা তিনি তাঁর কৃষক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক চেতনা থেকে বুঝতে পেরেছিলেন এবং তার বিরোধিতা করেছিলেন। ষাটের দশকে যখন বিশ্বব্যাপী চীন-সোভিয়েত কমিউনিস্ট মতাদর্শগত বিতর্ক, দেশে দেশে কমিউনিস্ট পার্টিগুলোকে দ্বন্দ্ব ও ভাঙনের মুখোমুখি করে, তখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টিও সে বিতর্ক এড়িয়ে যেতে পারেনি। ফলে, পার্টির ভাঙন আর তার ফলাফল এখন ইতিহাস। গোটা বিষয় তাত্ত্বিকভাবে যেভাবে মোকাবিলা করেছেন, তার দুটি ঐতিহাসিক দলিলে তা তিনি লিখেছেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে কমিউনিস্টদের ভূমিকা সামনে নিয়ে তিনি যেমন রাজনৈতিকভাবে অবস্থান নিয়েছেন, তেমনি তৎকালীন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্টদের ঐক্যবদ্ধ করার সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের ঐক্যবদ্ধ করার যে কাজ তিনি শুরু করেছিলেন, তা তিনি আমৃত্যু অব্যাহত রেখেছিলেন। তিনি সত্তর, আশি ও নব্বইয়ের দশকের সব রাজনৈতিক সংগ্রামে কমিউনিস্টদের ভূমিকা কী হওয়া উচিত, তা যেমন নির্দেশ করেছেন, তেমনি কমিউনিস্টদের ঐক্যের প্রতিভূ হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছেন।

কোনো দেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রতিটি বাঁকে পার্টিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করতে হয়, প্রয়োজনও বটে; কিন্তু সেসব রাজনৈতিক সংগ্রামে শ্রমজীবী মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে শ্রমজীবী মানুষের শ্রেণিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে তার নিজস্ব বিকল্প শক্তি গড়ে তুলতেই হয়। অমল সেন তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের নির্যাস হিসেবে জনগণের বিকল্প শক্তি গড়ে তোলার তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ দিয়েছেন তাঁর ‘জনগণের বিকল্প শক্তি’ লেখায়।

বর্তমান সমাজব্যবস্থার সার্বিক অবক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে তাঁর লেখা ‘কমিউনিস্ট জীবন ও আচরণ রীতি প্রসঙ্গে’ বইটি শুধু কমিউনিস্টদের নয়, সার্বিকভাবে ব্যক্তি ও সমাজকল্যাণের দিকনির্দেশক দর্শনের ভূমিকা পালন করতে পারে।

ইতিহাস তার গতিপথে কিছু মানুষ সৃষ্টি করে, আবার কিছু মানুষ তাঁদের জীবন দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন। তাঁরা কিংবদন্তি। অমল সেন তেমনই একজন মানুষ, যাঁরা পাঁজরের হাড় জ্বালিয়ে, পথভ্রষ্টদের পথ দেখান। তিনি বিপ্লবী জীবনাদর্শ ও মনুষ্যত্বের প্রতীক।

ইতিহাসের জটিল পথপরিক্রমায় আমরা আজ যে জায়গায় দাঁড়িয়ে, সেখান থেকে সামনে এগোনোই আমাদের একমাত্র রাস্তা। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপর্যয়ের পর আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সংকট, বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদের লগ্নি পুঁজির আগ্রাসন, বিশ্বায়ন, দেশের অভ্যন্তরে চরম সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান, শ্রমজীবী ও গণতান্ত্রিক শক্তির বিভ্রান্তি, কমিউনিস্ট ও প্রগতিশীল শক্তির বিভাজন ও হতাশা—এসব সংকট মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। অমল সেন তাঁর জীবদ্দশায় এর প্রতিটি সংগ্রামে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাত্ত্বিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁর রেখে যাওয়া তাত্ত্বিক লেখা জনগণের বিকল্প শক্তি গড়ে তোলা এবং অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অমূল্য শিক্ষা। তাঁর দেখানো পথ সামনে রেখে ইতিহাসের এই দায়কে কাঁধে নিতে হবে এ প্রজন্মকেই।

সৈয়দ অামিরুজ্জামান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক  ও কলামিস্ট; বিশেষ প্রতিনিধি, সাপ্তাহিক নতুনকথা; সম্পাদক, অারপি নিউজ;  সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, মৌলভীবাজার জেলা; ‘৯০-এর মহান গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক ও সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী।

সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়ন।

সাবেক সভাপতি, অাইন ছাত্র ফেডারেশন।

সম্পাদক, লিটল ম্যাগ ‘স্বাধীনতা’।

সাধারণ সম্পাদক, ‘ মাগুরছড়ার গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশ ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ অাদায় জাতীয় কমিটি’।

৩১/এফ তোপখানা রোড ঢাকা-১০০০

E-mail : rpnewsbd@gmail.com

মুঠোফোন: ০১৭১৬৫৯৯৫৮৯