কিশোর মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেক বীর প্রতীক

প্রকাশিত: ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২, ২০২১

কিশোর মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেক বীর প্রতীক

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিবেদন || ঢাকা, ০২ মার্চ ২০২১ : অস্ত্র হাতে এই কিশোর মুক্তিযোদ্ধার ছবিটা কত জায়গায় কতবার যে দেখেছি তার কোনো ইয়ত্তা নেই। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে, পোস্টারে, পেস্টুনে কিংবা ক্যালেন্ডারে। যতবারই দেখেছি ততবারই মনে মনে খুব জানতে ইচ্ছে করতো তিনি কি বেঁচে আছেন? নাকি শহীদ হয়েছেন?

তবে ফেসবুকের কল্যাণে জানলাম তিনি বেঁচে আছেন। তিনি হলেন কিশোর মুক্তিযোদ্ধা আবু সালেক বীর প্রতীক।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উচ্চ বিদ্যালয় ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন আবু সালেক। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে বই খাতা ফেলে সীমানা পেরিয়ে কিশোরটি চলে গেলেন ভারতের আগরতলায়। সেখানে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে লোক বাছাই চলছিল। কিন্তু আবু সালেক বয়সে ছোট হওয়াতে তাকে কেউই যুদ্ধে নিতে চাইল না। বাছাইয়ে না টিকে কান্নায় ভেঙে পড়লেন। আবু সালেকের কান্না দেখে বাধ্য হয়ে তাকে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিত হল দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের। আগরতলা থেকে আবু সালেককে নিয়ে যাওয়া হলো মেলাগড় ক্যাম্পে।

তারপর বড় যোদ্ধাদের সঙ্গে কিশোর আবু সালেক শুরু করলেন দেশকে স্বাধীন করার যুদ্ধ। এমনি একদিন তারা ভীষণ যুদ্ধ করলেন চন্দ্রপুর গ্রামে। আবু সালেক সেই যুদ্ধে ছিলেন বাংকারে। প্রচণ্ড গোলাগুলি চলছে। মুক্তিবাহিনীর একপর্যায়ে টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে দাঁড়াল। এখন তাদের সামনে একটাই রাস্তা, পিছু হটতে হবে। আর পিছু হটতে হলে একজনকে তো ব্যাকআপ দিতে হবে, নইলে যে সবাই মারা পড়বে।

এগিয়ে এলেন সবার ছোট মুক্তিযোদ্ধা কিশোর আবু সালেক। ছোট্ট কাঁধে তুলে নিলেন বিশাল এক দায়িত্ব। ক্রমাগত গুলি করতে লাগলেন পাকবাহিনীর ক্যাম্প লক্ষ্য করে। আর সেই সময়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেলেন অন্যরা।

কিশোর আবু সালেক অবিরত গুলি চালাচ্ছেন। তার গুলির ধরণ দেখে পাকবাহিনী মনে করল, মুক্তিযোদ্ধারা খুব সংগঠিতভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে। ফলে পাকবাহিনী পিছু হটটে বাধ্য হলো।
বাংকারে থেকে গেলেন শুধু আবু সালেক। একসময় রাত শেষ হয়ে সকাল হলো, মুক্তিযোদ্ধারা ভেবেছিলেন আবু সালেক নিশ্চয়ই শহীদ হয়েছেন, কিন্তু বাংকারে গিয়ে সবাই দেখলেন কিশোর আবু সালেক একা বাংকারে বসে আছেন।

তথ্যসূত্রঃ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর