সিলেট ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৫৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২১
ঢাকা, ২৮ এপ্রিল ২০২১ : এক.
যে কোন নারীর অধিকার আছে অন্যের ক্ষতি না করে যথেচ্ছা জীবন যাপনের; এমনকি তথাকথিত রক্ষিতা হবার অধিকারও তার আছে। দুই.
অনুরূপ, যে কোন পুরুষেরও অধিকার আছে যথেচ্ছা জীবনাচারের। সে একশটা রক্ষিতা রাখুক— আমার কী? আইন যাই বলুক না কেন।
তিন.
দাম্পত্য বহির্ভূত যৌন সম্পর্কের অধিকার রয়েছে প্রতিটি নারী-পুরুষের। সেখানে ভালোবাসা থাকুক বা না থাকুক। পারস্পরিক সম্মতিতে নারীর বা পুরুষের একগামী, বহুগামী, বিপরীতকামী, উভকামী, সমকামী (লেসবিয়ান বা গে) বা এসেক্সুয়াল হবার অধিকার আছে। আইন যাই বলুক না কেন।
চার.
এগুলোর একটা নিয়েও কথা বলার ন্যূনতম অধিকার আমার নেই। সে নারীকে দুশ্চরিত্রা বলে গালি দেয়ার একবিন্দু অধিকার আমার নেই; অনুরূপ সে পুরুষকে লম্পট বলারও একবিন্দু অধিকার আমার নেই।
পাঁচ.
টাকার কাছে বিক্রি হবার অধিকার যেমন সে নারীর আছে; অনুরূপ নিজের টাকায় সে নারীকে কেনার অধিকারও সে পুরুষের আছে। তথাকথিত আইন যাই বলুক না কেন।
উল্লিখিত পাঁচটি বিষয়ে যিনি ১০০% একমত নন, তার কোন বক্তব্যই আমি এক বিন্দু পরিমাণও গ্রহণ করতে রাজি নই। ওয়ালাইকুম আসসালাম।
ছয়.
আসল কথা হলো, আমার সামনে একটি লাশ আছে।
সাত.
এটা হত্যা হতে পারে; আত্মহত্যাও হতে পারে।
আট.
যতক্ষণ তদন্ত, বিচার ও রায়ে প্রমাণ না হবে— ততক্ষণ একে হত্যা বা আত্মহত্যা বলার কোন অধিকার আমার নেই। ততক্ষণ এটা একটা অপমৃত্যু। আইন তাই বলে।
নয়.
যদি আত্মহত্যা হয়; তাহলে তদন্ত করে খুঁজে বের করতে হবে কেন আত্মহত্যা। সে আত্মহত্যায় কেউ কি সহযোগিতা করেছে? করলে তার বিচার করতে হবে; শাস্তি দিতে হবে।
দশ.
সে আত্মহত্যায় কেউ কি প্ররোচনা দিয়েছে? প্ররোচনার সংজ্ঞা কী? প্ররোচনার সীমা কী? কার কাছ থেকে কতোটুকু প্ররোচনা পেলে কেউ একজন আত্মহত্যা করতে পারে? আমি কীভাবে তার পরিমাপ করবো? কী শাস্তি চাইবো?
এগারো.
নারীটির বয়স কী ১৮ ছিল? আমি জানিনা। যদি তা হয়ে থাকে, তাহলে পুরুষটির পরিবার-সদস্যরা (জানিনা সে বিবাহিত কিনা; স্ত্রী-বাবা-মা-ভাই-বোন হতে পারে) যদি বলে যে নারীটিই পুরুষকে প্ররোচিত করেছে? তাহলে? নারী মানেই প্ররোচিত এমন তো নাও হতে পারে! পুরুষও তো প্ররোচিত হয়!
বারো.
আর যদি হত্যা হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই এক বা একাধিক খুনি রয়েছে। বিচারে প্রমাণিত হলে খুনিকে অতি-অবশ্যই সর্বোচ্চ শাস্তি পেতে হবে। সে যেই হোক না কেন।
জানি, এখানে আপনার প্রশ্ন আছে।
তেরো.
টাকার ক্ষমতার কথা বলবেন তে? হ্যাঁ, টাকা দিয়ে কেইস ফ্রেমিং করা যায়, তদন্ত প্রভাবিত করা যায়, আলামত গায়েব করা যায়, ক্যাওয়াস তৈরি করে পরিবেশ পাল্টে দেয়া যায়, আর এমনকি বিচারকেও প্রভাবিত করা যায়। কিন্তু সে তো অসংখ্যজনই করে! কেবল সবচেয়ে বড়লোক ব্যবসায়িই নয়। বাস করবো মহাপ্রভু টাকার সমাজে আর ন্যায়বিচার চাইরো নীতিবান সমাজের?
চৌদ্দ.
সুতরাং তার ঠিক ততোটুকু প্রতিবাদই ন্যায্য যতোটুকু সে সমাজ পরিবর্তনের দিকে ধাবিত হয়। সমাজ পরিবর্তনের দিকে বাঁকা করে তাকাবেন, আর ন্যায়বিচার চাইবেন— তার মানে আপনি একজন বাটপার।
পনের.
সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রামের দিকে নির্দেশনাহীন প্রতিবাদ কতোটুকু গ্রাহ্য করা যায়? এসব প্রতিবাদ কেবল ক্যাওয়াসই তৈরি করে। বিভিন্ন ইন্টারেস্ট-গ্রুপের ক্যাওয়াস। হ্যাঁ, ক্যাওয়াস একটি আবহ তৈরি করে বটে; এ নীতিহীন সমাজের অন্যায্যতা ও অন্তঃসারশূন্যতা প্রদর্শন করে বটে; কিন্তু ক্যাওয়াস নিশ্চিতি দেয়না। ক্যাওয়াস টেন্ডস টু এনিথিং অ্যান্ড নাথিং। ইউ মে গো ফর ফান ইন ক্যাওয়াস। হ্যাভ ফান।
এই হলো আমার সামগ্রিক অনুধাবন।
এ জাতীয় বিষয়ে আমি সারা জীবনে কখনোই আগ্রহী ছিলাম না। এখনও নই। আমি এসব খবর পড়ি না। কখনোই না। কোনোভাবেই না। সে চর্চা আমার কাছে পারভার্সন। হাজার হাজার পারভার্ট সংবাদ প্রতিবেদক, বার্তা সম্পাদক ও সম্পাদক আর পারভার্ট পাঠক ও বিশ্লেষকে পরিপূর্ণ এ পারভার্ট সমাজ। ক্রিমিনোলজি না পড়েই প্রত্যেকেই এক একজন ক্রাইম এক্সপার্ট! আর— এ সমাজ থেকে দূরে থাকতে চাইলেও তা পারা যায় না। না চাইলেও চোখের ওপর কানের ভেতর সমাজ এসব চাপিয়ে দেয়। তবুও দূরে থাকার চেষ্টা করি।
জঘণ্য। জঘণ্য। জঘণ্য। থুঃ!
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D