মূলধারা ৭১: লেখক মঈদুল হাসান ১ম পর্ব ১ম খন্ড

প্রকাশিত: ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ, মে ৯, ২০২১

মূলধারা ৭১: লেখক মঈদুল হাসান ১ম পর্ব ১ম খন্ড

।।|| শহীদুল ইসলাম বাবলু ||।। 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের দূরবর্তী কারণ অনেক ছিল। এর মাঝে সর্ববৃহৎ কারণ ছিল ভাষা, সমাজ, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ভৌগোলিক অবস্থানের সকল বিরুদ্ধতাকে উপেক্ষা করে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র গঠন পরিকল্পনার অভিনবত্বে। দ্বিতীয় বৃহৎ কারণ ছিল ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন নানা ভাষাভাষীদের নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনের উপযোগী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো অন্বেষণে পাকিস্তানী নেতৃবর্গের সম্যক ব্যর্থতা । ফলে পাকিস্তানের কাঠামোগত স্ববিরোধিতার সমাধান না ঘটে বরং এক সংঘাতের স্রোত উত্তরোত্তর প্রবল হয়ে ওঠে।১* পাকিস্তান গঠনের পর থেকেই বাঙালীরা রাষ্ট্র জীবনের সর্বক্ষেত্রে উপেক্ষিত, বঞ্চিত ও শোষিত হতে শুরু করে। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারা কখনে রাষ্ট্রভাষার আন্দোলন, কখনো স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন, কখনো জনসংখ্যাভিত্তিক আইন পরিষদ গঠনের দাবী এবং কখনো অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণের দাবী করে এসেছে।
পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে পূর্ব বাংলার মানুষের সংগ্রামের ইতিহাস দীর্ঘ। নানা জোয়ার ও ভাটা, ঐক্য ও বিভেদ সত্ত্বেও এই সংগ্রামের ধারা সর্বদা প্রবহমান ছিল। পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে পূর্ব বাংলার মানুষের সুস্পষ্ট অভিমত প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৫৪ সালে সংঘটিত প্রাদেশিক সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে। বিরোধীদলীয় যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী কর্মসূচী ‘একুশ–দফায়’ বলা হয়, দেশরক্ষা, পররাষ্ট্র ও মুদ্রা ব্যতীত অপর সকল বিষয় প্রাদেশিক সরকারের অধীনে আনা প্রয়োজন। নব নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদে যুক্তফ্রন্ট বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু অচিরেই পাকিস্তানের শাসকবৃন্দ যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙ্গে দিয়ে পূর্ব বাংলায় কেন্দ্রের শাসন আরোপ করে ব্যাপক দমনমূলক ব্যবস্থা গহন করে।এর পর শুরু হয় স্বায়ত্তশাসনকামী দলসমূহের মধ্যে দ্বন্দ্ব, বিভেদ ও তাদের একাংশের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ইতিহাস।………..