নির্ঘুম শহরে জ্বলে লন্ঠন

প্রকাশিত: ৫:১৯ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০২১

নির্ঘুম শহরে জ্বলে লন্ঠন

।।| ফারহিম ভীনা ||।।

আজ বৃষ্টিক্ষণে জানাই ছোট এক আনন্দ সংবাদ |জয়তী প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে আমার ভ্রমণ গদ্য ‘নির্ঘুম শহরে জ্বলে লন্ঠন’|ভ্রমণ কাহিনির প্রতি রয়েছে আমার অন্যরকম ভালবাসা –মনে হয় ভ্রমণ মানুষকে নতুন করে জন্ম দেয় |নতুন দেশ, মানুষ আর সংস্কৃতি খুলে দেয় নতুন চোখ |নতুন চোখের আলোয় পৃথিবীর দেশগুলি হয়ে ওঠে রুপকথা রঙিন |

আমরা যখন কোন দেশ দেখি তখন কি কেবল দেশ দেখি? আমরা দেখি সে দেশের মানুষ ও প্রকৃতি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। ভ্রমণ তো অচীন রাজ্যের খুলে যাওয়া এক একটা দরজা, রহস্যের জাল বিছানো উঠানে নিভৃতে পা ফেলা। ভ্রমণ তো উড়ে উড়ে দেখা আলোর শহরের পাশে অন্ধকার একটি গ্রাম — জমজমাট পর্যটন স্পটে খুঁজে পাওয়া নি:সঙ্গ এক মানুষ। দেশ ভ্রমণে আমাদের ভেতর নীরবে ভাঙ্গচুর হতে থাকে পুরনো মানুষ, নতুন দেশের নতুন মানুষ ও সংস্কৃতি খুলে দেয় নতুন একটা চোখ। বিশ্ব মানচিত্রের সামনে নিজেকে তখন একটু একটু করে উন্মোচন করি, ভিন সংস্কৃতির যাদুর বাক্স খুলে দেখে নেই নতুন রং, ঘ্রাণ নেই মন আনচান নতুন সৌরভের।

নিউইয়র্কের টাইম স্কোয়ার অথবা প্যারিসের আইফেল টাওয়ার আমাকে টানে না। দূর কোন দেশের গায়ের পূর্ব পুরুষের শ্রমের ঘ্রাণ, তাদের গাছের বাকল, উপকথায় বলে যাওয়া অলৌকিক গল্প আমায় টানে। আর টানে সবুজ উদার জমিনে লাল মোরগফুলের মত কম্পমান সকাল। আমি তখন জাঁকজমকপূর্ণ নগরীটাকে সরিয়ে পাহাড়ী গ্রামের দিকে তাকাতে ভালবাসি। হয়ত সেখানে উত্তর ভিয়েতনামের জিন মুন নৃ-গোষ্ঠীর বয়সী কোন নারী রান্না করতে বসেছে, সাপা পাহাড়ের নীচে হমং নৃ-গোষ্ঠীর তরুণী শন গাছে থেকে বুনে চলেছে তাদের নিজস্ব নীল পোশাক। আমি জাপানে গিয়ে টোকিওর অবাক প্রগতির বদলে হিরোশিমার বেদনার গান শুনি। শুনি হারিয়ে যাওয়া শিশুদের কান্না। বুকে করে আনি জাপানের পারমানবিক হামলার ক্ষত। ভ্রমণ যদি বোধকে নতুন করে জাগিয়ে না তোলে তবে সে ভ্রমণ অসম্পূর্ণ রয়ে যায়।

এই বইতে দুটো ভ্রমণকাহিনি বলা হয়েছে। পারিবারিক ভ্রমণ ‘ভিয়েতনাম’ আর সরকারি প্রশিক্ষণ ‘জাপান’ নিয়ে আমার ভ্রমণগদ্য ‘নির্ঘুম শহরে জ্বলে লণ্ঠণ’। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই জয়তী প্রকাশনীর প্রকাশক পায়েল হাওলাদারকে। ফেইসবুকে আমার লেখাগুলো দেখে তিনি প্রথম এই বই প্রকাশের আগ্রহ দেখান। এই বই এর এর সুন্দর প্রহ্চদটি করেছেন চারু পিন্টু |আমি আশা করি পাঠক বইটি পছন্দ করবে।
বইটি উত্সর্গ করেছি আমার কর্মজীবনের তিন প্রিয় ম্যাডামকে –লুত্ফুন নাহার বুলবুল, মাহফুজা আক্তার এবং মীনা পারভীন ম্যাডামকে |বইটি প্রকাশের পেছনে রয়েছে স্বামী ড. রিজওয়ান আর অনেক বন্ধুদের অনুপ্রেরণা –সবাইকে জানাই ভালবাসা |

ভ্র্মণ কাহিনি লেখা সহজ নয়। পাঠককে সাথে নিয়ে কাহিনি বুনতে হয়। আমিও আমার সাথে পাঠককে নিয়ে যেতে চাই ভিয়েতনাম ও জাপান নামের দুটো দেশে। আশ্চর্য আকাশতরী তৈরি-পাঠক আপনি তৈরি তো আমার সাথে ভিয়েতনাম ও জাপান ভ্রমণে?

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ