সিলেট ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:১২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ০২ জুলাই ২০২১ : ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকের কাছ থেকে পণ্য ডেলিভারি কথা বলে অর্থ সংগ্রহ করলেও অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহকের পণ্য পেতে বিলম্ব হচ্ছে বা পণ্য পাচ্ছেন না। বিধায় গ্রাহক ও পরিশোধ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে যা ডিজিটাল কমার্স সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর জনগণের আস্থার সংকট তৈরি করছে। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার (৩০ জুন ২০২১) বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করেছে।
ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান(মার্চেন্ট) এর অনুকূলে ছাড়করণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ই-কমার্স খাতের যথাযথ বিকাশ, পরিশোধ সেবা প্রদানকারীদের ঝুঁকি নিরসন, গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ ও ডিজিটাল কমার্সের উপর জনগণের আস্থা ধরে রাখার লক্ষ্যে ডিজিটাল কমার্স সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের অনুকূলে অর্থ ছাড়করণের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত নির্দেশনা প্রদান করা হলো:
১. খাদ্য, মুদি, ওষুধ, রাইড শেয়ারিং, মোবাইল রিচার্জ, সার্ভিস ডেলিভারি বা ইউটিলিটি, এডুকেশন ফি, হোটেল বুকিং, টিকেটিং (বাস, এয়ার, ট্রেন, লঞ্চ) কিংবা অনুরূপ নিত্যপ্রয়োজনীয় ও জরুরি পণ্য/সেবা সঙ্গে সেঙ্গে বা অনধিক ৫ দিনের (পণ্য/সেবার ধরন ও স্থান বিবেচনায়) মধ্যে সরবরাহকারী ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ লেনদেনের ঝুঁকি, গ্রাহকসেবার মান, পণ্য সরবরাহ সম্পর্কে সন্তুষ্টি এবং পারস্পরিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক ইত্যাদি পর্যালোচনা করে স্বীয় বিবেচনায় বিদ্যমান সেটেলমেন্ট প্রক্রিয়া অব্যহত রাখতে পারবে।
২. নিজস্ব উৎপাদিত পণ্য/সেবা বা দোকান বা শো-রুম (এইরূপ উদ্দেশ্যে ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্ত) এর মাধ্যমে পণ্য/সেবা বিক্রয়ের পাশাপশি ডিজিটাল কমার্স ব্যবস্থায়ও পণ্য/সেবা বিক্রয় করে এবং বিক্রিত পণ্য/সেবা সঙ্গে সঙ্গে বা অনধিক ৭ দিনের (পণ্য/সেবার ধরন ও স্থান বিবেচনায়) মধ্যে সরবরাহ করে থাকে এইরূপ ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠাগুলো লেনদেনের ঝুঁকি, গ্রাহকসেবার মান, পণ্য/সেবা সরবরাহ সম্পর্কে সন্তুষ্টি এবং পারস্পরিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক ইত্যাদি পর্যালোচনা করে স্বীয় বিবেচনায় বিদ্যমান সেটেলমেন্ট প্রক্রিয়া অব্যহত রাখতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, অন্যান্য ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মার্চেন্ট পেমেন্টের ক্ষেত্রে গ্রাহকের নিকট হতে সংগৃহীত অর্থ নিজস্ব সেটেলমেন্ট হিসাবে ধারণ করবে এবং সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে উক্ত অর্থ ছাড়করণের জন্য নিম্নবর্ণিত নির্দেশনা অনুসরণ করবে:
ক) সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহককে পণ্য/সেবা সরবরাহ/প্রদানের পর অর্থ ছাড়করণের জন্য গ্রাহকের নাম, মোবাইল নম্বর এবং সরবরাহকৃত ক্রয়াদেশের বিবরণসহ এ সংক্রান্ত একটি তালিকা ব্যাংক/ পিএসও এবং ই-ওয়ালেট সেবা প্রদানকারী এমএফএস/ পিএসপি (পরিশোধ সেবাদানকারী) প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করবে।
খ) ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত ক-এ বর্ণিত তালিকা হতে দৈবচয়ন ভিত্তিতে গ্রাহকের পণ্য/সেবা প্রাপ্তির বিষয়ে সন্তুষ্ট হওয়া সাপেক্ষে পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান অর্থ ছাড় করবে এবং এসংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করবে।
গ) ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পণ্য/ সেবা সরবরাহের বিপরীতে অর্থ ছাড়করণের জন্য দাবীকৃত তালিকার কোনও গ্রাহকের পণ্য/ সেবা সরবরাহ না হওয়ার বিষয়ে পরবর্তীতে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানকে ভুল তথ্য দেওয়ার বিষয়ে পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সঙ্গে সঙ্গে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ প্রদান করবে এবং নোটিশ প্রাপ্তির অনধিক ১০ দিনের মধ্যে উক্ত প্রতিষ্ঠান জবাব প্রদান করবে।
ঘ) ভুল তথ্য প্রদানের বিষয়ে ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান সন্তোষজনক কারণ প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানকে পরিশোধ সেবা প্রদান স্থগিত করতে হবে এবং তালিকাভুক্তকরতঃ পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করতে হবে। এ ধরনের তালিকাভুক্ত ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান পরবর্তীতে সকল প্রকার পরিশোধ সেবা প্রাপ্তির যোগ্যতা হারাবে।
ঙ) ভবিষ্যতে অর্থ ছাড়করণের প্রক্রিয়াটি অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো
স্বীয় বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাদি গ্রহণ করবে, যেখানে গ্রাহক কর্তৃক পণ্য/ সেবা সরবরাহ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিতকরণের বিষয়টি অন্তুর্ভূক্ত থাকবে।
৪. ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান(মার্কেটপ্লেস) কর্তৃক ইস্যুকৃত ভাউচার এর বিপরীতে পণ্য ক্রয়/ সেবা গ্রহণ না করা পর্যন্তু অর্থ ছাড় করা যাবে না। ভাউচার ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক দাবীকৃত খরচের অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে সন্তুষ্ট হয়ে খরচের সমপরিমাণ অর্থ ছাড় করা যাবে।
৫. পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গ্রাহকের নিকট হতে সংগৃহীত এরূপ অর্থ মার্চেন্ট দায় পরিশোধ ব্যতীত অন্য কোনও উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না এবং অপরিশোধিত মার্চেন্ট দায়ের সমপরিমাণ অর্থ এ হিসাবে সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
৬. রিফান্ড বা চার্জব্যাকের ক্ষেত্রে গ্রাহকের পরিশোধিত মাধ্যমেই উক্ত অর্থ ফেরত প্রদান করতে হবে এক্ষেত্রে কোন চার্জ প্রযোজ্য হলে তা ডিজিটাল কমার্স সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে।
৭. এই সার্কুলারের নির্দেশনা পরিপালনের জন্য পরিশোধ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কোনরূপ চার্জ/মাশুল আরোপ করতে পারবে না। এই নির্দেশনাগুলো শুধুমাত্র ব্যক্তি গ্রাহক পর্যায়ের লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D