যশোরের রেশম চাষ

প্রকাশিত: ১১:১২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৮, ২০২১

যশোরের রেশম চাষ

।| শিরিন সুলতানা | ঢাকা, ০৮ জুলাই ২০২১ : সিল্ক শিল্প আমাদের দেশীয় সম্পদ। রাজশাহী জেলায় তৈরি হয় সিল্কসুঁতা ও কাপড়। যে কাপড় যুগ যুগ ধরে আভিজাত্যের গৌরব ধারণ করে আসছে। আর সেই আভিজাত্য সুঁতা তৈরির কোকুন চাষে অবদান রাখছে আমাদের মনিরামপুরের শৈলী গ্রামের দারিদ্র্য কিছু পরিবার। এবার জেনে নিই সিল্ক শিল্পের রেশম চাষ কি?রেশম তৈরির পোকার নাম হলো মথ। শুক কীটর দেহের ভেতরে একটি লম্বা রেশম গ্রন্থি লালার থাকে। গ্রন্থি লালা থেকে তৈরি কৃত গুঁটির নাম কোকুন। কোকুন থেকেই সংগ্রহ করা হয় সুঁতা। ‘

রেশম’ শব্দটি ফার্সি ভাষা থেকে এসেছে। ২৬০২ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে সম্রাট হোয়াঁতির চর্তুদর্শী রাণী সি-লিং-চি একটি গাছের নীচে বসে চা খাচ্ছিলেন। সেই সময় একটা রেশমগুটি তাঁর চায়ের কাপে এসে পড়ে। চা খুব গরম ছিল বলে গুটির উপরের আঠাযুক্ত অংশটি গলে যায়। এই গলে যাওয়া গুটি থেকে বেরিয়ে আসে সূক্ষ্ম সোনালী রংয়ের সুতো, তাই এর নাম হয় স্বর্ণসূত্র এবং সি-লিং-চি –র নাম হয় সুতোর রাণী (Queen of Textiles)। চীন এই তুঁত রেশনের মাধ্যমে সমগ্র পূর্ব-পশ্চিম এশিয়া ও ইউরোপে বাণিজ্যের বিস্তার ঘটতে শুরু করে। আর যে পথে এই বাণিজ্য হত তার নাম হয় রেশম পথ বা সিল্ক রুট। এই সিল্ক রোড-এর মাধ্যমে চীনের বেইজিং থেকে ভূমধ্যসাগরের উপকূল হয়ে প্রথমে গ্রিস ও পরে রোমান সাম্রাজ্যে রেশমের ব্যবসা প্রসার লাভ করে । পরবর্তীকালে দক্ষিণে ইয়েমেন, বার্মা ও ভারতবর্ষে এই সিল্ক রোড বিস্তৃতি লাভ করে। এ উপমহাদেশে প্রথম তিব্বত থেকে ভারতবর্ষের হিমালয়ের পাদদেশে রেশম চাষের বিস্তার ঘটে। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে মোঘল সম্রাটদের পৃষ্ঠপোষকতায় তৎকালীন অবিভক্ত বাংলায় রেশমশিল্পের ব্যাপক প্রসার লাভ করে। বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা ও ভারতের মালদা ও মুর্শিদাবাদ বেঙ্গল সিল্ক এর প্রধান উৎপাদনস্থল হিসেবে পরিচিত হয়।

আমাদের বৃহত্তর যশোর এটি চাষের উপযোগী সুন্দর একটি এলাকা। আশি নব্বইয়ের দশকে এটি চাষ প্রচুর ছিলো এই এলাকায়। এখন হাতে গোনা কিছু পরিবার এটির কাজ করে যাচ্ছেন। সিল্ক শিল্প তথা রেশম চাষে আমরা আরো যত্নশীল ও গুরুত্ব দিলে আমাদের যশোর আবারও তৈরি করা যেতে পারে লক্ষ লক্ষ রেশম কোকুন।
#
শিরিন সুলতানা
কাজ করছি হাতের সেলাইয়ের থ্রিপিস অনপিস জামা কাপড়, ড্রাইফুড ও মৌসুমি ফল নিয়ে।
কারুভূমি যশোর।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ