চিরনিদ্রায় শায়িত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কিংবদন্তি গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর

প্রকাশিত: ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২১

চিরনিদ্রায় শায়িত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কিংবদন্তি গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ২৪ জুলাই ২০২১ : রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন কিংবদন্তি গণসংগীতশিল্পী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আলমগীর।

শনিবার (২৪ জুলাই ২০২১) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে খিলগাঁও মাটির মসজিদে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হয়। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ফকির আলমগীরের ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব।
এর আগে সকাল ১১টা ১৬ মিনিটে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের পল্লীমা সংসদ প্রাঙ্গণে তাঁর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। এরপর সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের এই অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্বকে। দুপুর পৌনে ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছয় তাঁর মরদেহ।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফকির আলমগীর। মৃত্যুকালে ফকির আলমগীরের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

ওয়ার্কার্স পার্টির শোক

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে এবং উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে গণসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। গণঅভ্যুথান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের সামরিক শাসনবিরোধী গণআন্দোলনে তিনি জনগণকে উজ্জীবিত করেছেন তাঁর গান দিয়ে। তিনি ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি, জনসংযোগ সমিতির সদস্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছেন। নেতৃদ্বয় তাঁর মৃত্যুতে শোকসন্তপ্ত পরিবার প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে বলেন, তার মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুরণ হবার নয়।

সৈয়দ অামিরুজ্জামানের শোক

একাত্তরের মহান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কিংবদন্তি গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আমিরুজ্জামান। তাঁর মৃত্যুতে আরও শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা শাখার সম্পাদক তাপস ঘোষ, শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি দেওয়ান মাসুকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দীন এবং শ্রীমঙ্গল পৌর শাখার সভাপতি শেখ জুয়েল রানা ও সাধারণ সম্পাদক রোহেল আহমদ, বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি জামাল মুশরাফিয়া ও বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অজিত বোনার্জি।

প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর এর মরদেহে ওয়ার্কার্স পার্টির পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ

আজ ২৪ জুলাই বেলা ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক এর নেতৃত্বে একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর এর মরদেহে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। পুষ্পার্ঘ্য অর্পণকালে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড মোস্তফা আলমগীর রতন, কমরেড জাকির হোসেন রাজু, কমরেড আবুল হোসাইন, কমরেড কিশোর রায়, কমরেড মুর্শিদা আখতার নাহার, ঢাকা মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টি সদস্য কমরেড শিউলি শিদার, ফুলবাবু, সজীব প্রমুখ।
ফকির আলমগীর ১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়নের (মেনন) সক্রিয় সদস্য ছিলেন। এরই সাথে ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে এবং উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে গণসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। গণঅভ্যুথান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের সামরিক শাসনবিরোধী গণআন্দোলনে তিনি জনগণকে উজ্জীবিত তাঁর গান দিয়ে। তিনি ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি, জনসংযোগ সমিতির সদস্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সংগীতের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এ পর্যন্ত পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় ‘একুশে পদক’, ‘শেরেবাংলা পদক’, ‘ভাসানী পদক’, ‘সিকোয়েন্স অ্যাওয়ার্ড অব অনার’, ‘তর্কবাগীশ স্বর্ণপদক’, ‘জসীমউদ্দীন স্বর্ণপদক’, ‘কান্তকবি পদক’, ‘গণনাট্য পুরস্কার’, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক মহাসম্মাননা’, ‘ত্রিপুরা সংস্কৃতি সমন্বয় পুরস্কার’, ‘ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড যুক্তরাষ্ট্র’, ‘জনসংযোগ সমিতি বিশেষ সম্মাননা’, ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড বিশেষ সম্মাননা’ ও ‘বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ’।

গণসংগীত শিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আলমগীর এর প্রতি বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ

আজ ২৪ জুলাই বেলা ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর এর মরদেহে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী কেন্দ্রীয় কমিটি। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক অতুলন দাস আলো, সাংগঠনিক সম্পাদক অদিতি আদৃতা সৃষ্টি প্রমুখ।

ফকির আলমগীর ১৯৬৬ সালের দিকে ছাত্র জীবনে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন গ্রুপ) সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। একইসাথে তিনি ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে এবং উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে গণসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুথান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের সামরিক শাসনবিরোধী গণআন্দোলনে তিনি জনগণকে উজ্জীবিত করেছিলেন তাঁর গান দিয়ে। তাঁর কণ্ঠে উঠে এসেছে নিপীড়িত, বঞ্চিত মানুষের কথা, শোষণ-নিপীড়ন-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অবাধ্য আহ্বান। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে হারালো। দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গণে এই ক্ষতি পূরণ হবার নয়। তিনি লক্ষ লক্ষ হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন তাঁর রেখে যাওয়া কর্মের মধ্যদিয়ে।

যুব মৈত্রীর শোক প্রকাশ

বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর সভাপতি সাব্বাহ আলী খান কলিন্স ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুতাছিম বিল্লাহ সানি প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে এবং উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে গণসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। গণঅভ্যুথান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের সামরিক শাসনবিরোধী গণআন্দোলনে তিনি জনগণকে উজ্জীবিত করেছেন তাঁর গান দিয়ে। তিনি ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি, জনসংযোগ সমিতির সদস্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছেন।
নেতৃদ্বয় তাঁর মৃত্যুতে শোকসন্তপ্ত পরিবার প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে বলেন, তার মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুরণ হবার নয়।
আজ ২৪ জুলাই বেলা ১২টায় বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুতাছিম বিল্লাহ সানি নেতৃত্বে কেন্দ্রীয়শহীদ মিনারে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত ফকির আলমগীর-এর মরদেহে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।

 

ওয়ার্কার্স পার্টির শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ