নিজেদের হাতে গড়া ‘তালেবান’কে কৌশলে ক্ষমতায় বসালো মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ: ওয়ার্কার্স পার্টি

প্রকাশিত: ১:৫৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২১

নিজেদের হাতে গড়া ‘তালেবান’কে কৌশলে ক্ষমতায় বসালো মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ: ওয়ার্কার্স পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ১৯ অাগস্ট ২০২১ : “আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব বিস্তার রোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধর্মীয় জঙ্গিবাদী শক্তি ‘তালেবান’দের জন্ম দিয়েছিল। ২০ বছর পর আজ তারাই ভিন্ন কৌশলে তাদের তৈরী সেই জঙ্গিবাদী শক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর ব্যবস্থা নিল। যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ও আফগান জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামীল।” আজ বৃহস্পতিবার (১৯ অাগস্ট ২০২১) বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর এক জরুরী সভায় এ মত প্রকাশ করা হয়।

পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড হাজি বশিরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বলা হয়, তালেবানদের ক্ষমতা দখলের বিষয়টি কাতারের দোহায় গত বছরে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ও তালেবানদের মধ্যে সমঝোতা চুক্তির বাস্তবায়ন মাত্র। যা সাম্রাজ্যবাদের তৈরী নতুন পুতুল সরকার বলে অনুমিত।
সভায় বলা হয়, আফগানিস্তানের জনগণই তাদের ভাগ্যের নিয়ন্তা অথচ সেই জনগণকে বাদ দিয়ে গত ২০ বছর আমেরিকা এশিয়ায় তার প্রভাব বলয় বিস্তারের কৌশল হিসাবে আফগানিস্তানে জঙ্গী দমনের নামে ন্যাটো বাহিনী মোতায়েন ও একটি পুতুল সরকার গঠন করে। তাদের নিয়ন্ত্রনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বুলি দিয়ে নির্বাচিত সরকার গঠন করেছিল। সেই সরকারকে ছঁড়ে ফেলে তারা নতুন নকশা প্রণয়ন করে এই পরিবর্তন ঘটালো যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।
সভায় বলা হয়, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প-বাইডেন বিতর্ক খোদ মার্কিন জনগণ গ্রহণ করেনি। এ ঘটনায় পশ্চিমা দুনিয়াও বিভক্ত। আফগানিস্তানের ধর্মীয় জঙ্গীবাদী গোষ্ঠিকে মদদ দেয়া ও এ অঞ্চলে তাদের প্রভাব বিস্তারে পাকিস্তান ও সেদেশের সেনাবাহিনী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তা দিয়ে এসেছে। তালেবানদের ক্ষমতা দখলের মধ্যদিয়ে তা পূর্ণতা পেল।
সভায় বলা হয়, আফগানিস্তানে তালেবানদের পুনরায় ক্ষমতার নিয়ন্ত্রন নেয়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী শক্তি বিস্তার লাভ করবে।
ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের হীন কৌশল এতদ অঞ্চলের শান্তি বিনষ্ট করবে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিশ্বব্যাপি আগ্রাসনের যে নীতি কৌশল বাস্তবায়ন করছে তা বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতাকে হুমকিতে ফেলবে। তারা দশকের পর দশক কিউবার উপর অবরোধ চালিয়ে আসছে। উত্তর কোরিয়ায় অবরোধ দিয়েছে। মধ্য প্রাচ্যে শান্তি বিনষ্টে তারা ইসরাইলীদের মদদ দিচ্ছে। তারা ইরাক ও সিরিয়ার উপর হামলা চালিয়ে সেখানে নীরিহ জনগণকে হত্যা করেছে।
সভায় প্রস্তাবে, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসী এই নীতির বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী বিপদ রুখে দাড়াতে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ তোলার আহ্বান জানানো হয়।
সভার অপর প্রস্তাবে, রোহিঙ্গা শরনার্থী নিয়ে যখন বাংলাদেশ বিপদগ্রস্ত তখন আফগান শরনার্থী গ্রহণে জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশকে চাপ দেয়া অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখান করার ভূমিকাকে স্বাগত জানানো হয়। এবং একই সাথে সরকারে শান্তিপূর্ন সহঅবস্থানের নীতি অব্যাহত রাখার আহবান জানানো হয়।
আফগানিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশার উপস্থাপনায় আলোচনায় আংশনেন পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড ড. সুশান্ত দাস, কমরেড কামরূল আহসান, কমরেড হাজি বশিরুল আলম, কমরেড নজরুল ইসলাম হাক্কানী ও কমরেড নজরুল হক নীলু প্রমুখ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ