সিলেট ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৪৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১
ঢাকা, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ : করোনা মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার খুলে দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১) থেকে স্নাতক (সন্মান) ৪র্থ বর্ষ এবং মাসটার্স এর শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ উপলক্ষে গ্রন্থাগার পরিদর্শন করেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ড. মো. নাসিরউদ্দিন মুন্সি উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার। গ্রন্থাগারটি ১৯২১ সালের ১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্নেই ঢাকা কলেজ ও ল কলেজ থেকে প্রাপ্ত প্রায় আঠারো হাজার বইয়ের সংগ্রহ নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এখানে প্রায় ৯ লক্ষ বই এবং জার্নালের সংগ্রহ রয়েছে। এছাড়াও, এখানে প্রায় ত্রিশ হাজারের মত বিরল পাণ্ডুলিপি রয়েছে।
অবস্থান
গ্রন্থাগারটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ভবনের দিকে টিএসসির মূল কেন্দ্রের পাশেই অবস্থিত। গ্রন্থাগারের সমস্ত কার্যক্রম পৃথক তিনটি শাখা (প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবন এবং বিজ্ঞান গ্রন্থাগার ভবন) থেকে সম্পন্ন হয়।
ইতিহাস
গ্রন্থাগারটি ১৯২১ সালে কলা, বিজ্ঞান ও আইন অনুষদের ১২টি বিভাগের অধীনে ৬০ জন শিক্ষক ও ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী ও প্রায় আঠারো হাজার বইের সংগ্রহ নিয়ে শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে, গ্রন্থাগারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের প্রশাসনিক শাখায় (বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মূল ভবন) স্থানান্তর করা হয় এবং পরে এটি কার্জন হল প্রাঙ্গণের পুকুরের উত্তর তীরে অবস্থিত একটি ভবনের নিচতলায় স্থানান্তরিত হয়। সর্বশেষ, এটি বর্তমান কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনে স্থানান্তরিত হয়। এর প্রথম গ্রন্থাগারিক ছিলেন ঢাকা কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ। এটির বর্তমান গ্রন্থাগারিক ডাঃ এম নাসিরউদ্দিন মুন্সী যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের একজন অধ্যাপক।
প্রশাসনিক ভবন
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে গ্রন্থাগারের প্রশাসনিক বিভাগ, পান্ডুলিপি, পুনরায় চিত্র, অধিগ্রহণ, প্রসেসিং বিল্ডিং, সাময়িকী, হিসাব, সেমিনার, পুরাতন সংবাদপত্র বিভাগ, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য রিসোর্স সেন্টার এবং সাইবার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত কার্যক্রম এই শাখা হতে পরিচালনা করা হয়।
বিজ্ঞান গ্রন্থাগার ভবন
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবনের প্রথম তলায় গ্রন্থাগারের জন্য ৪টি রিডিং রুম বরাদ্দ রয়েছে। এখানে একসাথে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী পড়তে পারেন। এখানের সবগুলি কক্ষই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। এছাড়া, এই ভবনের প্রথম তলায় একটি রেফারেন্স রুমও রয়েছে। শিক্ষক, গবেষক এবং শিক্ষার্থীরা এগুলি এবং রেফারেন্স সরঞ্জামগুলি এখানে ব্যবহার করতে পারেন। শিক্ষকদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা রয়েছে।
ব্যবহারবিধি ও সুযোগ-সুবিধা
শিক্ষক, গবেষক, নিবন্ধিত স্নাতক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ১০ দিনের জন্য ১০টি বই, ১৪দিনের জন্য ৩টি বই নিতে পারেন। শিক্ষার্থী ও পাঠকদের জন্য কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবন এবং বিজ্ঞান ভবনের প্রতিটি তলায় একটি অভিযোগ বাক্স রাখা হয়েছে। পাঠকদের কোন অভিযোগ থাকলে তারা সেগুলি সমাধানের জন্য অভিযোগ বাক্সে রাখেন। এই বাক্সগুলি প্রতি সপ্তাহে খোলা হয় এবং অভিযোগ সমাধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এছাড়াও প্রতি তলায় একজন সিনিয়র অফিসার আছেন যিনি ফ্লোর ইন-চার্জ হিসাবে কাজ করেন। যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য পাঠকরা তাৎক্ষনিক ফ্লোর ইন-চার্জকে অবহিত অবহিত করতে পারেন। যদি তিনি সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হন তবে প্রধান গ্রন্থাগারিককে অবহিত করা হয় এবং তিনি সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এই গ্রন্থাগার থেকে সাধারণত নিন্মক্ত সুবিধাদি প্রদান করা হয়ঃ
পাঠকক্ষ সুবিধা
শিক্ষার্থী পাঠকক্ষ
রেফারেন্স পাঠকক্ষ
রেফারেন্স এবং থিসিস রুম
সাময়িকী পাঠকক্ষ
আর্কাইভস, বিরল বই এবং বিশেষ সংগ্রহ পাঠকক্ষ
সংবাদপত্র পাঠকক্ষ
পাণ্ডুলিপি পাঠকক্ষ
মাইক্রোফিল্ম এবং মাইক্রোফিচ রিডিং রুম
রিসোর্স সেন্টার
সেমিনার বিভাগ
সাইবার সেন্টার
শিক্ষকদের বই ইস্যু কাউন্টার
অনলাইন ক্যাটালগ অনুসন্ধান
ফটোকপি পরিষেবা
মুদ্রণ পরিষেবা
সিডি/ডিভিডি রাইট সুবিধা
বর্তমান অবস্থা
গ্রন্থাগারটিতে বর্তমানে প্রায় ৯ লক্ষ বই এবং জার্নাল রয়েছে। এছাড়াও, এখানে ৩০ হাজারেরও বেশি বিরল এবং পুরাতন পান্ডুলিপি, অসংখ্য মাইক্রোফিল্ম এবং মাইক্রোফাইচ রয়েছে। ২০০৭-২০০৮ সালে এখানে অনুদান সরূপ প্রাপ্ত ৩,১৮৮ টি বই এবং ১৮৭টি জার্নালের শিরোনাম যুক্ত করা হয়েছে। ওই অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষাবর্ষের বই ও জার্নাল সংগ্রহের জন্য প্রায় ৯.৯ মিলিয়ন টাকা বরাদ্দ ছিল। বাজেটের অর্থ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের মাধ্যমে প্রতি বছর বাংলাদেশ সরকারের থেকে প্রাপ্ত হয়।

সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি