ঘাত-প্রতিঘাত সয়ে আপনিও তেমন খাঁটি মানুষ হবেন

প্রকাশিত: ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৮, ২০২১

ঘাত-প্রতিঘাত সয়ে আপনিও তেমন খাঁটি মানুষ হবেন

কানিজ রুমি | ঢাকা, ০৮ নভেম্বর ২০২১ : জীবনে Rejection সইতে জানা অনেক বড় একটা শিক্ষা।

আপনি নিজের ছোট্ট গণ্ডিতে বসে ভাবতে পারেন আপনি অনেক বড় কিছু। বাইরে গেলে দেখতে পাবেন পৃথিবী আপনাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে আসলে আপনার অবস্থান কোথায়।

রিয়েলিটি শো গুলোতে দেখবেন কোন প্রতিযোগী বাদ পড়ে গেলে বিচারকরা বলেন, “Go Home”

ঘরে বসে নিজের মূল্যায়ন করা যায় না নিজে নিজে। আপনি একটা কবিতা লিখে ভাবতেই পারেন অসাধারণ কিছু লিখে ফেলেছেন। আয়নায় তাকিয়ে ভাবতেই পারেন আপনি অসাধারণ কেউ। কিন্তু বাইরে গিয়ে দেখতে পেলেন You’re a nobody. পৃথিবীর চোখে অসম্ভব তুচ্ছ একজন মানুষ..

সত্যিকার মূল্যায়নটা আসে ফাইট দিয়ে- শত হাজার মানুষের ভাল-মন্দ মতামত সয়ে। পৃথিবী যদি আপনার কাজের মূল্যায়ন করে, তখন বুঝবেন আপনি সত্যিই জিতেছেন। সত্যিকারের সফল যারা- তাদের কিন্তু আমার আপনার স্বীকৃতি/প্রশংসার প্রয়োজন নাই। কাজের ক্ষেত্রে নিজের যোগ্যতা তারা প্রমাণ করেছেন হাজারবার, অনেক পরীক্ষার ভেতর দিয়ে।

সমস্যা হলো- আমরা এই পরীক্ষার ভেতরে যেতেই চাই না। ঘরে বসে নিজের ছোট্ট গণ্ডিতে বসে নিজেকে নিয়ে অনেক আকাশ-কুসুম ভাবি- পরে বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে যখন দেখি পৃথিবী সেই মূল্যায়নটা করছে না আমাকে- তখন মুষড়ে পড়ি, গুটিয়ে নেই নিজেকে।

কিন্তু এই Comfort zone এর ভেতরে থেকে আপনি কিন্তু আসলে কোথাও পৌঁছতে পারবেন না! আপনার এই rejection টা সইতে হবে। স্বর্ণ যেমন আগুনে পুড়ে খাঁটি হয়, নানারকম Rejection এর ভেতর দিয়ে গিয়ে, ঘাত-প্রতিঘাত সয়ে আপনিও তেমন খাঁটি মানুষ হবেন।

চারপাশে তাকিয়ে দেখবেন আমরা সারাক্ষণ Rejection এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
“চাকরি কেন হয়নি?”
-“আরে ওরা আগে থেকে ক্যান্ডিডেট সিলেক্ট করে রেখেছে। সব ভাঁওতাবাজি!”
“এডমিশন টেস্টে কেন টিকো নি?”
-“আরে ওখানে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। ভাল মানুষের দাম নাই!”
“পরীক্ষা এত খারাপ হল কেন?”
-“আরে সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্ন করেছে। যত্তোসব!”
“ছেলেটা/মেয়েটাকে প্রপোজ করে রিজেক্ট খেলে?!”
-“আরে ও মহা বাজে স্বভাবের মানুষ! থার্ডক্লাস ক্যারেক্টর। ও আমাকে ডিজার্ভ করে না হেহ!”

সবখানেই Rejected হওয়ার পেছনে সত্যিকারের কারণটা খুঁজে বের না করে ঢালাওভাবে অন্যকে দোষারোপ করার একটা প্রবণতা আছে আমাদের অনেকের!

হয়তো আসলেই অন্যের দোষ আছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে, কিন্তু সেটায় ফোকাস করে আপনার তো কোন লাভ হচ্ছে না। বরং আপনি নিজের কোথায় কমতি আছে সেটা খুঁজে তাতে ফোকাস করুন- দেখবেন next time you won’t get rejected.

কেউ মেসেজের রিপ্লাই না দিলে সাথে সাথে
“আরে কী ভাব দেখাচ্ছে বাপরে বাপ! আমার ঠেকা পড়েনাই একে আর মেসেজ দেওয়ার! ফালতু মানুষ যত্তোসব!”
এভাবে তাকে গালমন্দ না করে বরং সত্যিকারের কারণটা ভাবুন- আপনি কি তার Priority deserve করেন?
নাকি You’re just a nobody?
তাকে গালমন্দ করে আপনার কোন উন্নতি হচ্ছে না। বরং ধৈর্যশীল হন। নিজের কি করণীয় তা ভাবুন-
You have to be so good that you can not be ignored.
Rejection কে বরণ করে নিন।
Rejection এর মাধ্যমে পৃথিবী আপনাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় কোথায় কোথায় আপনার খামতু রয়েছে। কী চমৎকার একটা সুযোগ নিজের ভুলগুলো ধরতে পারার, সেগুলো শুধরে নেওয়ার, উন্নতি করার!

এইটাই Rejection এর শিক্ষা।
Embrace it. Learn from it. ❤️