কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন প্রণয়নসহ ৬ দফা দাবি

প্রকাশিত: ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৮, ২০২১

কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন প্রণয়নসহ ৬ দফা দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ০৮ ডিসেম্বর ২০২১ : যৌন হয়রানি মুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ আইন’ প্রণয়নসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ।বুধবার (৮ ডিসেম্বর ২০২১) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে এসব দাবি তুলে ধরেন বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন মুকুট।

প্লাটফর্মের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন বিষয়ক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন করতে হবে; যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালে প্রদানকৃত হাইকোর্টের নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে ও কর্মস্থলে যাতায়াতের পথে এবং সমাজে নারী শ্রমিকের যৌন হয়রানি থেকে সুরক্ষা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে; আদালতের নির্দেশনা যাতে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, সে জন্য সরকারি উদ্যোগে একটি তদারকি কমিটি গঠন করা; যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচার নিষ্পত্তি করা ও বৈষম্যমূলক আইন সংশোধন করা এবং নারীর প্রতি সহিংসতামুক্ত সংস্কৃতি চর্চা করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনের পরেও (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, বাংলাদেশ শ্রম আইন) কেন কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পৃথক আইন প্রয়োজন সে বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট তার রায়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। রায়ে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে কোর্টের এই আদেশ ও নির্দেশনাগুলো জাতীয় সংসদ কর্তৃক এ সংক্রান্ত পর্যাপ্ত ও কার্যকর আইন প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত অনুসৃত ও পরিপালিত হবে। কিন্তু দেখা গেছে, একদিকে যেমন হাইকোর্টের নির্দেশনা মতো কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কোনো আইন হয়নি তেমনি এ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট যে ১১টি নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলোও কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে। পুরুষের পাশাপাশি এগিয়ে যাচ্ছে নারীরাও। সরকারি বেসরকারি চাকরি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব জায়গায় এখন নারীরা কর্মরত। পাশাপাশি নানা ধরনের সমস্যায়ও তারা পড়ছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা এখনো বৈষম্যের শিকার। উল্লেখযোগ্য সমস্যা হলো যৌন হয়রানি। শারীরিক, মানসিক, মৌখিক, বিভিন্নভাবে নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নারীর নিরাপত্তার বৈষম্য খুবই প্রকট। দিনে দিনে নারীদের প্রতি যৌন হয়রানির মাত্রা বেড়েই চলেছে এবং বর্তমানে তা এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট সীমা জহুর, আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাজু, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)-এর পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন, মনডিয়াল এফএনভির কনসালটেন্ট মো. শাহীনুর রহমান, কর্মজীবী নারীর সমন্বয়ক কাজী গুলশান আরা দিপা প্রমুখ।

যৌন হয়রানি মুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন প্রণয়নসহ জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ কর্তৃক উত্থাপিত ৬ দফা দাবীর প্রতি অনুসমর্থন ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান।