ইসলামী আন্দোলন ও কমিউনিস্ট পার্টিও রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাচ্ছে না

প্রকাশিত: ১২:৪৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১, ২০২২

ইসলামী আন্দোলন ও কমিউনিস্ট পার্টিও রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাচ্ছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ০১ জানুয়ারি ২০২১ : নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সংলাপে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের একাংশ। এবার তাদের পথ ধরেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে না বসার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

শনিবার (০১ জানুয়ারি ২০২২) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির আমীর ও চরমোনাইর পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম একথা জানান। আর সিপিবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংলাপে অংশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি দেয়ার কথা জানায়।

সংলাপে না বসার বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, আগে আমরা ২০১২ ও ২০১৭ সালের সংলাপে অংশ নিয়ে চরমভাবে হতাশ হয়েছি। ২০১২ সালের সংলাপে গঠিত ইসি ২০১৪ সালে ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করেছে, যেখানে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হয়েছেন। আর ২০১৭ সালের সংলাপের পর গঠিত কমিশন ২০১৮ সালে একটি চরম বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন করেছে, যাকে অনেকেই মধ্যরাতের নির্বাচন বলে আখ্যায়িত করে। এ সময় তিনি নির্বাচনের সময় অন্তর্বতী জাতীয় সরকার গঠনের দাবিও জানান।

এসব কলঙ্কময় নির্বাচনের জন্য কমিশনকে রাষ্ট্রপতির জবাবদিহিতার আওতায় না আনায় তারা হতাশ উল্লেখ করে মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, রাষ্ট্রপতি কোনো রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করেননি। তা ছাড়া অতীতের দুটি সংলাপে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে রাষ্ট্রপতির কাছে আমাদের গঠনমূলক প্রস্তাবগুলোর কোনোটাই মূল্যায়ন করা হয়নি। যে দল তাঁকে রাষ্টপতি হিসেবে নির্বাচন করেছে, তিনি সেই দলীয় স্বার্থের বাইরে যেতে পারেননি। অতীতের দুটি সংলাপ যেমন জনপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, চলমান সংলাপেও এর ব্যতিক্রম কিছু হবে না।

এদিকে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো চিঠিতে সিপিবি জানায়, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন। কিন্তু অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সেটাই যথেষ্ট নয়। নির্বাচন ব্যবস্থার মৌলিক গলদ দূর করতে না পারলে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে না।

এই মৌলিক বিবেচনা থেকে সিপিবি নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের জন্য ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব’সহ ৫৩টি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের সুপারিশমালা ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে দেওয়া হয়েছিল। এ অবস্থায়, হুবহু একই আলোচ্যসূচিতে ও একই প্রকরণের আরেকটি সংলাপে যোগ দিয়ে সিপিবির নতুন কোনো কথা বলার নেই। সে কারণে তাতে যোগদান করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছি না।’

উল্লেখ্য, ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসি গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু হয়েছে গত ২০ ডিসেম্বর। এদিন হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) রাষ্ট্রপতির সাথে সংলাপ করেন।