সিলেট ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:২৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি ২০২২ : অবশেষ ফিরোজ রশীদের থলের বিড়াল বের হলো। জামাত, হেফাজত, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, জঙ্গিবাদীদের বিরুদ্ধে জাসদের বলিষ্ঠ অবস্থানই জাসদের প্রতি ফিরোজ রশীদসহ অন্যান্যদের বিদ্বেষের মূল কারণ।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন আজ শনিবার (২৯ জানুয়ারি ২০২২) এক বিবৃতিতে গত ২৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষনের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর আলোচনায় সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক ও অযাচিতভাবে ‘আমাদের হেফাজতে ইসলাম তাদের জঙ্গি বানাইছে ইনু সাহেব। আরে জঙ্গি কারে বলে? আন্দোলনতো মানুষেই করে, আন্দোলন সাধারণত ভায়োলেন্সে চলে যায়। তারা জঙ্গি না, জঙ্গি হচ্ছে সশস্ত্র বিপ্লব যারা করে সরকারকে হটানোর জন্য। যেটা ইনু সাহেবরা করেছিলেন, জাসদতো ৭৩ সাল থেকেই ৭৫ সাল পর্যন্ত এই দেশের হাজার হাজার যুব লীগ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ কর্মীদের হত্যা করেছে। অনেক পুলিশ ফাঁড়ি তারা দখল করেছে। পুলিশ ফাঁড়ি লুট করেছে। থানা লুট করেছে, ট্রেজারী লুট করেছে। ঈদের জামাতে আমাদের আওয়ামী লীগের এমপিদের হত্যা করেছে দিনের বেলা, ঈদের জামাতে বসে। তারা যদি আরেকটা সংগঠনকে জঙ্গি বলে এটা মানায়! বঙ্গবন্ধুকে এইভাবে নির্মমভাবে হত্যা করার দুসাহস কেউ পারতো। সমস্ত ক্ষেত্র তারা প্রস্তুত করেছিল। আজকে তারা বলে যে, আমরা কিছু জানিনা। জাসদ যদি ক্ষেত্র প্রস্তুত না করতো, সেদিন আমি যুবলীগের ঢাকা সিটির প্রধান ছিলাম। সেদিন যদি এই জাসদ ক্ষেত্র প্রস্তুত না করতো, তাদের একটা পত্রিকা ছিল গণকণ্ঠ সেই পত্রিকা পড়ে দেখেন সেদিন কিনা বানাইছে আমাদেরকে। চোর-ডাকাত ছাড়া সবকিছু বানাইছে গণকণ্ঠে লিখতে গিয়া। এবং যারা স্বাধীনতার শত্রু ঐ মানুষগুলো পড়তো, সমস্ত্র মানুষদের ক্ষিপ্ত করে ফেলেছে জাসদ। আজকে তারা গণতন্ত্রের কথা বলে। আজকে তারা বঙ্গবন্ধুর কথা বলে’ যে বক্তব্য দিয়েছেন তা শুধু সর্বৈব মিথ্যাচার ও জাসদ বিরোধী বিদ্বষে পরিপূর্ণ।
জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কাজী ফিরোজ রশীদ প্রায়শই জাসদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেন এবং মিথ্যাচার ছড়ান। অবশ্য তার বক্তব্যে জাসদের বিরুদ্ধে তার এই বিদ্বেষের কারণ তিনি নিজেই প্রকাশ করেছেন। তিনি নিজে তার থলের বিড়াল বের করেছেন। জাসদের জামাত, হেফাজত, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ বিরোধী জাসদের বলিষ্ঠ অবস্থানই কাজী ফিরোজ রশীদের গাত্রদাহ, জাসদের প্রতি বিদ্বেষের মূল কারণ।
জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কাজী ফিরোজ রশীদ তার নিজের ভাষায় ‘আমাদের হেফাজতে ইসলাম’ বলে প্রমাণ করেছেন তিনি বার বার দল বদল করে উপরে উপরে যেই দলই করেন না কেন, তিনি আসলে হেফাজত, জামাত, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, জঙ্গীবাদীদের পক্ষেরই লোক। তিনি তার এই আসল চেহারা প্রকাশ করে ফেলেছেন।
জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডব বা ২০২১ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হাঠহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের সহিংস তাণ্ডব দেখার পরও হেফাজতকে জঙ্গী হিসাবে চিন্থিত করায় গোস্বা করে এবং হেফাজতের সহিংস তাণ্ডবকে মানুষের আন্দোলন হিসাবে চিন্থিত করে কাজী ফিরোজ রশীদ প্রমাণ করেছেন যে তিনি হেফাজতের বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সংবিধান বিরোধী রাজনীতির সাথে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত।
জাসদের দফতর সম্পাদক বলেন, যে কাজী ফিরোজ রশীদ বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর খুনী মুশতাক, সামরিক শাসক জিয়া ও এরশাদের সাথে হাত মিলিয়ে আখের গোছানোয় ঝাপিয়ে পরেছিলেন সেই কাজী ফিরোজ রশীদের বঙ্গবন্ধুর জন্য কান্না-মায়াকান্না ও কপটতা ছাড়া আর কিছুই না। কাজী ফিরোজ রশীদের বঙ্গবন্ধুর প্রতি সামান্য শ্রদ্ধা থাকতো তাহলে কাজী ফিরোজ রশীদ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধীতা করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়ার প্রকাশ্য হুমকিদাতা হেফাজতের পক্ষে নির্লজ্জ দালালি করতেন না।
জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাসদ প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য রাজনৈতিক অবস্থানে ছিল। সেই সময়ে পুলিশ ফাঁড়ি, থানা লুট, ব্যাংক ডাকাতি, পাটের গুদামে আগুণ দেয়া, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যার সাথে জাসদের কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মী যুক্ত থাকতেন তাহলে নিশ্চয়ই তৎকালীন সরকার-প্রশাসন-পুলিশ জাসদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা দিয়ে আদালতে বিচারের সম্মুখীন করে শাস্তি নিশ্চিত করতো। কিন্তু সেই সময়কালে উল্লেখিত অভিযোগে বাংলাদেশের কোনো থানায়ই জাসদের কোনো নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কোনো মামলাও হয়নি। খোদ বঙ্গবন্ধুও কখনই জাসদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন নাই।
জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের ক্ষেত্র প্রস্তুত করাসহ বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের কোনো পর্যায়ে জাসদের কোনো নেতা-কর্মীর সামান্যতম সংশ্লিষ্টতা থাকলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার এফআইআর, তদন্ত, চার্জশীট, সাক্ষীদের সওয়াল জবাব, চার্জ ফ্রেম, মূল রায় ও রায়ের পর্যবেক্ষনে জাসদের নেতা-কর্মীদের নাম আসতো। কিন্তু তা আসেনি।
জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন, কাজী ফিরোজ রশীদের মত লোকদের জাসদ চোর-ডাকাত বানায় নাই। খোদ বঙ্গবন্ধুই কাজী ফিরোজ রশীদের মত লোকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ‘চাটার দল’, ‘চোরের খনি’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।
জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন কাজী ফিরোজ রশীদকে জাসদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার আগে আয়নায় নিজের মুখ দেখতে বলেন। সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ‘চোরের খনি’, ‘চাটার দল’ এর সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুনী মুশতাক ও সামরিক শাসক জিয়ার সাথে হাত মিলিয়ে কোন কাজীরা পুরাতন ঢাকা, ধানমন্ডি ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেছে, কোন মন্টু কাজী ও তার ভাইরা এরশাদের সাথে হাত মিলিয়ে ১৯৮৫-৮৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে কোটালিপাড়া, টুঙ্গীপাড়ায় যেতে বাধা দেয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে তা দেশবাসী ভুলে নাই।
জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সামরিক শাসকদের দ্বারা ভাগাড় থেকে তুলে আনা কাজী ফিরোজ রশীদদের মত নোংরা লোকদের নিজেদের অপরাধ ঢেকে রেখে রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য হেফাজত, জামাত, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদ, জঙ্গীবাদীদের পদলেহন করা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D