সিলেট ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২
বিশেষ প্রতিবেদক | ঢাকা, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ : ভারতবর্ষের শুধু নয় পৃথিবীর সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি, জ্ঞান তাপস ও অসাধারণ প্রতিভা; যাকে হয়ত আপনি, আমি চিনি না-
পয়সার গরম তো জীবনে অনেক দেখলেন। কিন্ত বিদ্যার এমন গরম দেখেছেন না শুনেছেন কখনও? সবটা শুনলে মাথা ঝিমঝিম করবে আপনার, হাত পাও অবশ হয়ে যেতে পারে বৈকি। এক জীবনে এত পড়াশোনা কোন রক্ত মাংসের মানুষ করতে পারেন? না পড়লে বিশ্বাস হবে না; তাও আবার সেই ভদ্রলোক যদি ভারতীয় হন !
মারাঠি এই ভদ্রলোকের নাম শ্রীকান্ত জিচকার। তার পড়াশোনার জীবনটা একবার হাল্কা করে চোখ বুলিয়ে নিন শুধু। তাহলেই বুঝবেন, ভদ্রলোক কি কাণ্ডটাই না করেছেন !
(১) জীবন শুরু ‘M.B.B.S.’ ও ‘M.D.’- এ’ দিয়ে ।
(২) এরপর ‘L.L.B.’ করলেন । সাথে করলেন ‘International Law’-এর উপর স্নাতকোত্তর ।
(৩) এরপর ‘Business Management’-এর উপর ‘Diploma’ ; সাথে ‘M.B.A.’ ।
(৪) এরপর ‘Journalism’ নিয়ে স্নাতক।
এতদূর পড়ার পর আপনার যখন মনে হচ্ছে, লোকটা পাগল নাকি? তখন আপনাকে বলতেই হচ্ছে, এ তো সবে কলির সন্ধ্যে। এখনো গোটা রাত বাকি।
এই ভদ্রলোকের শুধু স্নাতকোত্তর ‘ডিগ্রী’ই আছে দশটা বিষয়ের উপর। স্নাতকোত্তরের বিষয়ের তালিকাটা একবার দেখুন-
(১) ‘Public Administration’
(২) ‘Sociology’
(৩) ‘Economics’
(৪) ‘Sanskrit’ (ডি.লিট)
(৫) ‘History’
(৬) ‘English’
(৭) ‘Philosophy’
(৮) ‘Political Science’
(৯) ‘Encient India History’, ‘Culture’ and ‘Arciolog’
(১০) ‘Cytology’
উপরের যতগুলো বিষয় দেখছেন সব কটিতেই প্রথম শ্রেণীর সঙ্গে স্নাতকোত্তর এবং ২৮টি স্বর্ণপদক বিজয়ী তিনি। সব মিলিয়ে ১৯৭৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত প্রতি গ্রীষ্মে ও প্রতি শীতেই উনি কোন না কোন স্নাতকোত্তরের বিষয়ের পরীক্ষা দিয়ে গেছেন ।
মাথা ঝিমঝিম করছে তো আপনার? তা মাথার আর দোষ কি বলুন? তবে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার আগে একবারটি শুধু শুনে যান- এতসব পড়তে পড়তে ওনার যখন একঘেঁয়েমি লাগছিল তখন ঠিক করলেন, এবার একটু স্বাদ বদলানো যাক ।
স্বাদ বদলাতে আমি-আপনি বেড়াতে যাই আর উনি ‘I.P.S.’ পরীক্ষায় বসলেন এবং পাশ করলেন। সেটা ১৯৭৮ সাথে। কিন্তু পোষাল না চাকরীটা। ফলে সেটা ছেড়ে দিয়ে বসলেন ‘I.A.S.’ পরীক্ষায়। ১৯৮০ সালে উনি ‘I.A.S.’ হলেন ।
নটে গাছটা তাহলে মুড়োল শেষ অবধি? আজ্ঞে না, মুড়োয় নি এখনো। চারমাসের মধ্যে ‘I.A.S.’- এর চাকরিটাও ছেড়ে দিলেন মহারাষ্ট্রের বিধান সভা ভোটে লড়বেন বলে। ১৯৮০ সালে উনি যখন বিধায়ক নির্বাচিত হলেন তখন ওনার বয়স সবে ২৫ বছর। উনি হলেন ভারতের সবচেয়ে কমবয়সী বিধায়ক।
সবই হল যখন, তখন মন্ত্রী হওয়াটাই বা আর বাকী থাকে কেন? সেটাও হলেন এবং একটা কিংবা দু’টো দপ্তরের নয়, একেবারে ১৪টা দপ্তরের। ১৯৯২ সাল নাগাদ রাজ্যসভার সদস্যও নির্বাচিত হলেন ।
ওনার এই ‘সামান্য’ কয়েকটি গুণ ছাড়াও উনি-
■ অসাধারণ চিত্রশিল্পী ।
■ পেশাদার আলোকচিত্রকর ।
■ মঞ্চাভিনেতা ।
■ সখের বেতার চালক ।
এছাড়া উনি জ্যোতিষশাস্ত্রেও বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। পরে উনি ‘সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ’ ও ‘ইউনেস্কো’তে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ।
ব্যক্তিগত সংগ্রহে মাত্র ৫২,০০০ বই রয়েছে ওনার । ‘লিমকা বুক অফ রেকর্ডস’ ওনাকে ‘ভারতবর্ষের সবচেয়ে শিক্ষিত ব্যক্তি’র শিরোপা দিয়েছে। ১৯৮৩ সালে উনি ‘বিশ্বের অসামান্য দশজন তরুণ’ হিসেবে নির্বাচিত হন।
২০০৪ সালে এক পথ দুর্ঘটনায় ওনার মৃত্যু হয়। তখন বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৯ বছর। তার মর্মান্তিক মৃত্যুতে একটি জ্বলন্ত নক্ষত্র নিভে যায়। তিনি মৃত্যুর আগে এই শিক্ষা দিয়ে যান, ‘যার যত জ্ঞান ; তার অহংকার তত কম’।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D