লেনিনকে নিবেদিত কবিতা/ অনুবাদ: মাজহার জীবন

প্রকাশিত: ৮:৫১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৩, ২০২২

লেনিনকে নিবেদিত কবিতা/ অনুবাদ: মাজহার জীবন

সাহিত্য বিষয়ক বিভাগ | ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২২ : লেনিনকে নিবেদিত কবিতা। লিখেছেন বের্টল্ট ব্রেখট, ভ্লাদিমির মায়াকোভস্কি, পাবলো নেরুদা, ডরোথি ওয়েলেসলি এবং ল্যাংস্টোন হিউজ। অনুবাদ: মাজহার জীবন।

অজেয় খোদাই

বের্টল্ট ব্রেখট

যুদ্ধ চলছে তখন

ইতালির সান কার্লো কারাগার

আটক সৈনিক, মদ্যপ আর চোরে গাদাগাদি।

সে কারাগারে এক সমাজতন্ত্রী সৈন্য

অমোচনীয় পেন্সিলের আঁচড়ে লিখলো:

লেনিন দীর্ঘজীবী হোক!

আলো-আধারী সেল। প্রায় অন্ধকার ।

সেলের উঁচু দেয়ালে বড় বড় অক্ষরে সে লেখা ।

জেলরক্ষীর গোচরে এলো তা ।

বালতি ভর্তি চুন নিয়ে তারা রঙমিস্ত্রী পাঠালো।

লম্বা সরু ব্রাশে বিপদজ্জনক অক্ষরগুলো সাদা করে দিল।

তারপর সে চকখড়ি দিয়ে শুধু অক্ষরগুলোর উপর ঘষলো:

লেনিন দীর্ঘজীবী হোক!

এরপর আরেক রঙমিস্ত্রী একটা বড় ব্রাশে পুরো দেয়াল

অপটু হাতে লেপে দিল ।

কিছু সময়ের জন্য অক্ষরগুলো তাই হয়ে গেল উধাও ।

কিন্তু সকালের দিকে চুন শুকিয়ে গেলে নিচেপড়া অক্ষরগুলো আবার নজরকাড়লো:

লেনিন দীর্ঘজীবী হোক!

এরপর জেলরক্ষী বাটালী দিয়ে অক্ষরগুলো গুড়িয়ে দিতে রাজমিস্ত্রীকে দায়িত্ব দিল।

এক ঘন্টা ধরে সে প্রতিটি অক্ষর খোদাই করলো ।

তার এই খোদাইয়ে অক্ষরগুলো হয়ে গেল বিবর্ণ

কিন্তু দেয়ালে গভীরভাবে খোদাই করা অজেয় অক্ষরগুলো হলো দৃশ্যমান:

লেনিন দীর্ঘজীবী হোক!

তখন সেলের সৈন্যটা বলল, তাহলে এবার দেয়ালটাই গুড়িয়ে দাও!

(১৯৩৪)

 

কুইয়ান-বুলাকের কার্পেট বয়নশিল্পীদের লেনিনের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি

বের্টল্ট ব্রেখট

কমরেড লেনিনকে প্রায়শই কতভাবে জানানো হয় অঢেল সম্মান।

কতশত আবক্ষমূর্তি আর ভাস্কর্য বানানো হয়েছে তার সম্মানে।

অনেক শহরের আর সন্তানের নাম রাখা হয়েছে তার নামে।

স্তুতিবক্তৃতা দেয়া হয় নানান ভাষায় ।

সাংহাই থেকে শিকাগো লেনিনের সম্মানে

আয়োজন করা হয় হরেক সভা আর সমাবেশ।

কিন্তু দক্ষিণ তার্কেস্থানের ছোট্ট শহর কুইয়ান-বুলাকের

কার্পেট বয়নশিল্পীরা

তাকে সম্মান জানায় এভাবে:

 

নিত্যদিন সন্ধ্যায় কুড়িজন কার্পেট-বয়নশিল্পী জ্বরে কাঁপতে কাঁপতে

মান্ধাত্তার আমলের তাঁত থেকে তারা তাদের কাজ শেষ করে।

জ্বর বেড়ে যায় তাদের; রেলস্টেশন জুড়ে

মশার ভয়ঙ্কর ভোঁ ভোঁ শব্দ।

মৃত উটের ভাগাড়ের পেছনের ডোবা থেকে যেন ঘন মেঘদল ধেয়ে আসে।

জল আর ধোয়া নিয়ে দু সপ্তাহ পর পর ট্রেন আসে;

কিন্তু একদিন খবর বয়ে আনলো

দিন ঘনিয়ে আসছে

লেনিনকে সম্মান জানানোর ।

আর তাই কুইয়ান-বুলাকের দরিদ্র কার্পেট বয়নশিল্পীরা

সিদ্ধান্ত নেয় তাদের শহরেও

কমরেড লেনিনের প্লাস্টারের আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করার।

মূর্তি স্থাপনের জন্য তারপর শুরু হয় অর্থ সংগ্রহ

জ্বরে আক্রান্ত সবাই

এক জায়গায় জড়ো হয় একদিন

তাদের কষ্টে অর্জিত কোপেক কাঁপা কাঁপা হাতে দান করে।

রেড আর্মির সৈনিক স্টেপা জামাল,

সতর্কতার সাথে গোণে আর মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করে

কতটা আন্তরিকতার সাথে তারা লেনিনকে স্মরণ করতে প্রস্তুত।

এ সব দেখে আনন্দিত হয় সে।

কিন্তু তাদের কম্পমান হাতও নজরে আসে তার।

হঠাৎই তাই সে প্রস্তাব করে বসে

আবক্ষ মূর্তির জন্য তোলা অর্থ দিয়ে পেট্রোলিয়াম কেনার।

যা উটের ভাগাড়ের পেছনের ডোবায় ঢালা হবে।

যেখান থেকে জন্ম হয় মশার।

কারণ মশা জ্বরের জীবাণু বহন করে।

এভাবেই কুইয়ান-বুলাকে জ্বরের বিরুদ্ধে লড়াই করে

সত্যিকার অর্থে প্রয়াতকে জানানো যায় শ্রদ্ধা।

 

অবশ্যই কমরেড লেনিনকে

কখনই না ভুলে গিয়ে

আর তারা তাই করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে।

স্মরণের দিন, একে একে তারা

তাদের জরাজীর্ণ বালতি ভরে

নিয়ে আসে কালো পেট্রোলিয়াম

আর ঢেলে দেয় ডোবায়।

 

লেনিনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা উপকৃত হয়।

আর এভাবে শ্রদ্ধা জানিয়ে উপকৃত হয়ে

তার আদর্শকেই সঠিকভাবে উপলব্ধি করে।

আমরা শুনেছি কীভাবে কুইয়ান বুলাকের জনগণ লেনিনকে সম্মানিত করেছে।

যেদিন পেট্রোলিয়াম এনে ডোবায় ঢালা হয়,

সেই সময় জনতার মাঝে একজন দাঁড়িয়ে দাবি জানায়

রেলস্টেশনে একটা ফলক টানানো হোক।

সেখানে লেখা থাকবে এই ঘটনার বিবরণ –

লেখা থাকবে পরিকল্পনা পরিবর্তনের কথা,

লেনিনের মূর্তি নির্মাণের বদলে মশারোধী এক ব্যারেল তেল কেনার কথা।

আর এ সকল কিছুই করা হয় লেনিনের সম্মানে।

আর তারা সেটাই করে

একটা ফলক টাঙিয়ে রাখে।

 

কবিতাটি লেখা হয় ১৯২৯ সালের শেষের দিকে। এ বছরের ৩০ জানুয়ারি Frankfurter Zeitung পত্রিকায় A Monument to Lenin শিরোনামের খবরের ভিত্তিতে বর্ণনাধর্মী এ কবিতাটি ব্রেখট লেখেন। কুইয়ান-বুলাক উজবেকিস্তানের ফারগানা অঞ্চলের একটি রেলওয়ে স্টেশন। সেখানকার ফলকে এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে লেখা হয়: এখানে লেনিনের একটি স্মরণস্মৃতি থাকার কথা ছিল। কিন্তু তার বদলে পেট্রোলিয়াম কেনা হয় এবং তা ডোবায় ঢালা হয়। এভাবেই লেনিনের স্মৃতি আর তার নাম কুইয়ান-বুলাকের ম্যালেরিয়া দূর করেছে । Mucheal Hamburger ও Fowpe Sharma অনূদিত ইংরেজি থেকে বাঙলায়ন ।

 

ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন

ভ্লাদিমির মায়াকোভস্কি

সময় হলো ।

শুরু করলাম

লেনিনের গল্প ।

এ জন্য না

যে শোক

ধীরে ধীরে কমে আসছে,

এ জন্য যে

এটা একদম স্পষ্ট

প্রথম মুহূর্তের ধাক্কা

মর্মান্তিক

আর অপরিমেয় কষ্টের।

সময়,

দ্রুত তোমার চাকায়

লেনিনের শ্লোগান ছড়িয়ে দাও!

যা কিছু ঘটুক

অশ্রুজলে আমরা

তলিয়ে যাব না ।

দুনিয়ায়

লেনিনের মতো জীবন্ত

আর কেউ নাই

আমাদের শক্তি,

আমাদের প্রজ্ঞা,

আমাদের অমোঘ হাতিয়ার ।

[—————]

লেনিনের

এই মৃত্যু

তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ

কমিউনিস্ট সংগঠকে

পরিণত করেছে!

দুনিয়া জুড়ে কারখানা

স্তুপের

অরণ্য,

যেন এক প্রকাণ্ড ব্যানার

বিশাল

রেড স্কয়ার,

লক্ষ লক্ষ হাত

পতাকা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে,

বিশাল ব্যাপ্তিতে

উপরের দিকে

ছড়িয়ে পড়ছে।

আর সে ব্যানারের,

প্রতিটি ভাঁজে

চির জাগরুক

লেনিন,

ঘোষণা করছেন:

‘ মজদুরেরা,

শেষ আঘাতের জন্য

তৈরি হও!

কৃতদাসেরা

হাটু আর শিরদাঁড়া

উচুঁ করে দাঁড়াও!

প্রলেতারিয়েত সৈনিকেরা,

জেগে উঠো শক্তি নিয়ে!

বিপ্লব

দ্রুত বিজয়ী হয়ে

দীর্ঘজীবী হোক,

ইতিহাসের

আর সকল যুদ্ধের চেয়ে

মহান

এবং ন্যায়সঙ্গত এ বিপ্লব‘।

:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::

কবিতাটি ১৯২৪ সালে লেনিনের মৃত্যুর পর লেখা। ৩০০০ লাইনে ৭৬ পৃষ্ঠার কবিতা। এখানে কেবল শুরু আর শেষের কয়েকটি লাইন Dorian Rottenberg এর করা ইংরেজি থেকে অনুবাদ করা হয়েছে ।

 

লেনিনগীতি

পাবলো নেরুদা

১.

লেনিন, তোমার স্তুতি গাইতে

আমাকে শব্দদের বিদায় করতে হবে আগে:

আমাকে লিখতে হবে গাছ দিয়ে, লিখতে হবে চাকা দিয়ে ,

আমাকে লিখতে হবে লাঙল দিয়ে, লিখতে হবে খাবার দিয়ে।

সত্য আর জগতের মতো

মূর্ত তুমি।

ভি উইলিয়ানভের চেয়ে বেশি

জাগতিক কেউ কখনই ছিল না আগে।

জবরদস্ত অনেকেই রয়েছে

চার্চের মতো মেঘেদের সাথে সংলাপ করে তারা,

অনেক বড় মানুষ তারা, অথচ নিভৃত, বিচ্ছিন্ন একেক জন ।

জগতের সাথে মৈত্রী করেছে লেনিন।

আর অন্যদের চেয়ে ছাড়িয়ে গেছে বহুদূর।

জনগণ,

নদী, পাহাড়,

উন্মুক্ত প্রান্তর

আর ছিল খোলা বই,

সে পড়তো,

সবার চেয়ে বেশি পড়তো,

সকলের চেয়ে নিখুঁত মনোযোগে ।

অন্তর্লীন প্রজ্ঞায় মানুষ

পরখ করতো সে,

ঝরনার মত ভালবাসতো তাদের,

অজানা খনিজ আবিষ্কারের নেশায়

পরীক্ষা করতো তাদের।

ঝরনা থেকে পানি নেয়ার আর,

গতিময় আলোকশিখা উসকে দেয়ার দরকার পড়ে,

এইসবই জনতার

গোপন কোষাগার,

যা কিছু জন্মায় আর বিকশিত হয়

দুনিয়া আর সময়ের কাছে তা যুৎসই।

২.

নিরস ইঞ্জিনিয়ারের সাথে তাকে গুলিয়ে ফেলা থেকে সাবধান,

উৎসাহী কোন অতীন্দ্রিয়ের সাথে তাকে গুলিয়ে ফেলা থেকে সাবধান।

তার প্রজ্ঞা – লেলিহান শিখা – কখনো পুড়ে নিঃশেষ হয় না,

মৃত্যু আজো তার হৃদয়ের আগুন পারেনি নেভাতে।

স্বচ্ছ লাখতা হ্রদে লেনিনের সাথে

মাছ ধরতে আমি পছন্দ করি,

হ্রদের পানি যেন ছোট্র আয়না

যা কিনা উত্তরের বিশাল, ঠান্ডা আর গোছানো

ঘাসের মাঝে হারিয়ে যায়:

সেইসব একাকীত্ব – ভয়ঙ্কর একাকীত্ব,

রাত আর বরফে যেখানে লাগানো বৃক্ষও

শুকিয়ে হয়ে যায়,

কুটিরে তার সুমেরু বাতাসের শিষ।

আমি তার সাথে সেখানকার

পশলাবৃষ্টির বর্ষণ শোনা

বুনো ঘুঘুর তির তির করে শিউরে উঠা

আর আদিম বনের নিবিড় স্পন্দন

দেখতে পছন্দ করি,

লেনিন বন আর জীবনের প্রতি একাগ্র,

বাতাসের চলাচল আর

প্রকৃতির জাঁকজমক ইতিহাস শুনতে আগ্রহী সে।

জ্ঞানগর্ভ বই, অত্যুৎসাহী বিজ্ঞান,

অধ্যয়নে কেউ কেউ অনন্য,

আর কেউ কেউ

আন্দোলনে নিবেদিত।

লেনিনের ছিল দুটো ডানা:

একদিকে প্রাজ্ঞতা আর অন্যদিকে আন্দোলন ।

সে যুক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছে,

হেঁয়ালীর উন্মোচন করেছে

মানুষ আর সত্য প্রকাশ করেছে সবখানে

আর হাজির থেকেছে একসাথে সব জায়গায় ।

৯.

ধন্যবাদ লেনিন,

তোমার দেয়া শক্তি আর শিক্ষার জন্য,

দৃঢ়তার জন্য ধন্যবাদ,

লেনিনগ্রাদ আর প্রান্তরের জন্য ধন্যবাদ,

[…]

ধন্যবাদ লেনিন

আশা জাগানোর জন্য ।

 

লেনিন

ডরোথি ওয়েলেসলি

অবশেষে পৌঁছে গেলাম লেনিনের কাছে।

আমার সামনে-পেছনে একদল কিষাণ-কিষাণী,

আমি দেখলাম –

গাঢ় লাল রঙের ঘরে ছোট কাঁচের পিঁজরায়

শুয়ে আছে এক মোমের মুর্তি ।

পায়ের দিকে দু‘জন, আর মাথার দিকে একজন রক্ষী,

বুকের ওপর ছোট দুটো হাত:

ঘুমিয়ে আছে (যেন) এক প্রাজ্ঞ কুমারী ;

আমার মুখ ফসকে তখন বেরিয়ে গেল:

” কোমল এই হাত দুটো কত পরোয়ানা করেছে জারি”।

বাতি জ্বলছে – লাল আলোর বাতি,

তার লাল চুলের উপর এক জ্যোতির্বলয় ;

এখনো সে পরে আছে তার ইউনিফর্ম ।

মাত্র সেই দু‘মিনিটের সুযোগে

খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি তাকে,

ওরা আমাকে বলেছিল ওটা মোমের মুর্তি,

কিন্তু দেখি একটা শবদেহ – তার আঙুলের নখ কালো ,

ওই তো আসলে লেনিন ।

অদ্ভুত, অজানা কণ্ঠে তীব্র চিৎকারে

আমার পাশের এক নারী কেঁদে উঠলো তখন।

জীবন কিংবা মৃত্যুর পরোয়া করি না আমি,

যদিও মৃততের জন্য কেবল

ভেতরে ভেতরে সামান্য ভয় পাই,

সেই আমি যেন ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে এখন;

যে বাণী শুনতে পেলাম তা সকল প্রজন্মের

নতুন বিশ্বাসের, ভীষণ সুন্দর সে বিশ্বাস;

আমি জানি নারীর এ বিলাপ – অনেক আগের নারীদের

যখন যিশুকে প্রস্তর সমাধিতে শুইয়ে দেয়া হয়েছিল ।

যিশুও মোমের মুর্তি ছিল

তারা যখন তাকে কবরে শোয়ায় ।

 

ডরোথি ভায়োলেট ওয়েলেসলি [ডাচেচ অব ওয়েলিংটন]( ১৮৮৫-১৯৫৬) জন্ম বার্কশায়ার ইংল্যান্ড। রাজপরিবারের জেরাল্ড ওয়েলেসলির সাথে বিয়ে হয় (১৯১৪) তবে অনেক বছর আলাদা থেকেছেন (১৯২২ থেকে)। কমপক্ষে দুজনের সাথে লেসবিয়ান সম্পর্ক ছিল। ১৯৩৫ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইয়েটসের অতি ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। ১০টির মতো কাব্যগ্রন্থ তাঁর। কবিতাটি অনুবাদে স্বাধীনতা নেয়া হয়েছে ।

 

লেনিন বিষয়ে গীতিমালা

ল্যাংস্টোন হিউজ

মার্বেলের উঁচু সমাধিতে শয়ান

রাশিয়ার কমরেড লেনিন,

একটু জায়গা দিন কমরেড লেনিন,

আমাকে একটু সুযোগ দিন ।

আমি ইভান, সেই কিষাণ,

কাদায় ভরা বুট আমার।

একসাথে যুদ্ধ করেছি, কমরেড লেনিন,

আমার কষ্টের এখন হয়েছে অবসান।

মার্বেলের সমাধিতে বেঁচে আছেন

রাশিয়ার কমরেড লেনিন,

একটু জায়গা দিন, কমরেড লেনিন,

আমাকে একটু সুযোগ করে দিন ।

আমি চিকো, সেই নিগ্রো

রোদে পুড়ে আখ কাটি

আপনার সাথে ছিলাম কমরেড লেনিন

আমার দায়িত্ব হয়েছে শেষ এখন

মার্বেলের সমাধিতে মহিমান্বিত

রাশিয়ার কমরেড লেনিন,

একটু জায়গা দিন কমরেড লেনিন

আমার জন্য একটু সুযোগ রেখে দিন ।

আমি ঢালাই কল শ্রমিক চ্যাং

সাংহাইয়ের রাস্তায় রাস্তায় করেছি ধর্মঘট।

বিপ্লবের জন্য

যুদ্ধ করি, অনাহারে থাকি, মারাও যাই।

রাশিয়ার কমরেড লেনিন

মার্বেলের সমাধি থেকে ঘোষণা করছেন:

চিরতরে শ্রমিকের মুক্তির জন্য-

তামাম দুনিয়াই আমাদের সুযোগ!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ