ঈদের আগে-পরে ১৪ দিনে ২৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৭৬ জন এবং আহত ১৫০০ জন

প্রকাশিত: ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ, মে ১২, ২০২২

ঈদের আগে-পরে ১৪ দিনে ২৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৭৬ জন এবং আহত ১৫০০ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ১২ মে ২০২২ : ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৪ দিনে (২৫ এপ্রিল-৮ মে) দেশে ২৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫০০ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৩৮, শিশু ৫১। ১২৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৫৬ জন, যা মোট নিহতের ৪১.৪৮ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৫৪ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ১৪.৩৬ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৯ জন, অর্থাৎ ১৩ শতাংশ।

এই সময়ে ৭ টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছে এবং ২ জন নিখোঁজ রয়েছে। ১৭ টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র:
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৫৬ জন (৪১.৪৮%), বাস যাত্রী ৩২ জন (৮.৫১%), ট্রাক-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ২০ জন (৫.৩১%), মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ যাত্রী ১৫ জন (৩.৯৮%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-টেম্পু) ৭৮ জন (২০.৭৪%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র) ১৩ জন (৩.৪৫%) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান আরোহী ৮ জন (২.১২%) নিহত হয়েছে।

দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন:
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩২টি (৪৬.৬৪%) জাতীয় মহাসড়কে, ৮৭টি (৩০.৭৪%) আঞ্চলিক সড়কে, ৪১টি (১৪.৪৮%) গ্রামীণ সড়কে এবং ২৩টি (৮.১২%) শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন:
দুর্ঘটনাসমূহের ৬৭টি (২৩.৬৭%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১১২টি (৩৯.৫৭%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৬২টি (২১.৯০%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৩১টি (১০.৯৫%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১১টি (৩.৮৮%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ধরন ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ:
ঈদ উদযাপনকালে ১২৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৫৬ জন নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ৪১.৪৮ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৫.২২ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়-
১. অন্য যানবাহনের সাথে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ১৬.১৯%
২. মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪১.৯৫%
৩. অন্য যানবাহন দ্বারা মোটরসাইকেলে ধাক্কা/চাপায় দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৯.০৪%
৪. অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২.৮%
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত চালক ও আরোহীদের মধ্যে ৫১.৪২ শতাংশের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছর।

২০২১ সালের ঈদুল ফিতর উদযাপনকালে ১২১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৩৪ জন নিহত হয়েছিল। এই হিসেবে এ বছর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ৫.৭৪% এবং প্রাণহানি বেড়েছে ১৬.৪১%।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহন:
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি ১৮.৯৫%, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ ৭.০৫%, যাত্রীবাহী বাস ১৮.৫৪%, মোটরসাইকেল ২৭.৬২%, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-টেম্পু) ১৯.৫৫%, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন- (নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-টমটম) ৪.৬৩% এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ৩.৬২%।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা:
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৪৯৬টি। (ট্রাক ৫৬, বাস ৯২, কাভার্ডভ্যান ৩, পিকআপ ২২, ট্রলি ৬, লরি ৩, ট্রাক্টর ৪, মাইক্রোবাস ১৩, প্রাইভেটকার ১৬, অ্যাম্বুলেন্স ৪, জীপ ২, মোটরসাইকেল ১৩৭, থ্রি-হুইলার ৯৭ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-টেম্পু) স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ২৩ (নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-টমটম) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ১৮ টি।

দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ:
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৪.৯৪%, সকালে ২৬.৮৫%, দুপুরে ২৪.৭৩%, বিকালে ২১.৯০%, সন্ধ্যায় ৮.১২% এবং রাতে ১৩.৪২%।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান:
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৯.৩২%, প্রাণহানি ২৮.১৯%, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৮%, প্রাণহানি ১৭%, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ২০.৮৪%, প্রাণহানি ১৯.৪১%, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ৯.১৮%, প্রাণহানি ১০.১০%, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.৩০%, প্রাণহানি ৫.৫৮%, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ২.৪৭%, প্রাণহানি ২.৩৯%, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৮.৪৮%, প্রাণহানি ১০.৬৩% এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৬.৩৬%, প্রাণহানি ৬.৬৪% ঘটেছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে, ৮৩ টি দুর্ঘটনায় ১০৬ জন নিহত। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৭ টি দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৯ টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং নাটোর জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৮ জন নিহত হয়েছে। শরীয়তপুর, খাগড়াছড়ি, নড়াইল, ঝালকাঠি, ঠাকুরগাঁও এবং নেত্রকোনা- এই ৬ টি জেলায় সামান্য সংখ্যক দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি ঘটেনি।

ঈদযাত্রা ও দুর্ঘটনা পর্যালোচনা:
এবারের ঈদুল ফিতরে রাজধানী ঢাকা থেকে কমবেশি ৯০ লাখ মানুষ ঘরমুখী যাত্রা করেছে এবং দেশের অভ্যন্তরে প্রায় ৩ কোটি মানুষ যাতায়াত করেছে। ঈদের আগে-পরে যথেষ্ট ছুটি থাকায় এবং সরকারের কিছুটা তৎপরতার কারণে ঈদযাত্রা তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক ছিল। তবে গণপরিবহনের টিকেট কালোবাজারী, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও পথে-ঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের করের টাকায়, বৈদেশিক ঋণে আমাদের সড়ক নির্মাণ করা হয়। এই সড়কে চাঁদাবাজি করা হয় কীসের অধিকারে, কোন নৈতিকতায়? প্রশ্নটির উত্তর জরুরি।

ঈদযাত্রায় সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় বিষয় ছিল ব্যাপক মোটরসাইকেলের ব্যবহার, যা পূর্বে কখনো দেখা যায়নি। গণপরিবহন সহজলভ্য ও সাশয়ী না হওয়া এবং যানজট এড়াতে রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষ গণপরিবহনের বিকল্প হিসেবে মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রা করেছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। কারণ মোটরসাইকেল ৪ চাকার যানবাহনের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই মোটরসাইকেল দূরের যাত্রায় কোনোভাবেই গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে না।

ঈদযাত্রা ও ঈদ উদযাপনকালে সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাপক সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছে। কিন্তু যেসকল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটেনি, শুধু আহত হয়েছে- সেসব দুর্ঘটনার অধিকাংশই গণমাধ্যমে আসেনি। ফলে দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র জানা যাচ্ছে না। তবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে যে পরিমাণ মানুষ ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসা নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন তা থেকে অনুমান করা যায় সারা দেশে আহতের সংখ্যা কয়েক হাজার হবে। গত বছরের ঈদুল ফিতরের চেয়ে এ বছরের ঈদুল ফিতর উদযাপনকালে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে ১৮.৪১% এবং প্রাণহানি বেড়েছে ১৯.৭৪%।

কিশোর-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এবং অন্যদের আক্রান্ত করছে। মোটরসাইকেল উৎপাদন ও আমদানীর ক্ষেত্রে সরকার নানা প্রকার সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে, ফলে দেশে মোটরসাইকেলের ব্যবহার ব্যাপকহারে বাড়ছে। এটা সরকারের আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। বছরে ৫ হাজার কোটি টাকার মোটরসাইকেলের ব্যবসা করতে যেয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার জনসম্পদ নষ্ট হচ্ছে। সরকারের উচিত গণপরিবহন উন্নত, সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে এবং রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রণ করে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করা। অপ্রাপ্ত বয়স্করা যাতে মোটরসাইকেল চালাতে না পারে সে জন্য কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা-সহ এ বিষয়ে পারিবারিক সচেতনতা সৃষ্টির জন্য গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো প্রয়োজন। মোটরসাইকেল উৎপাদন ও বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই প্রচারণার দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। মোটরসাইকেল বাজারজাতকরণে উশৃঙ্খল ভাষাভঙ্গিতে চটকদার বিজ্ঞাপন নির্মাণ ও প্রচার বন্ধ করতে হবে।

দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ:
১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন;
২. বেপরোয়া গতি;
৩. চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা;
৪. বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা;
৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল;
৬. তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো;
৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা;
৮. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা;
৯. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি;
১০ গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

সুপারিশসমূহ:
১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে;
২. চালকের বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করতে হবে;
৩. বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে;
৪. পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে;
৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে;
৬. পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে;
৭. যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে;
৮. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে;
৯. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে;
১০.গণপরিবহন উন্নত, সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে মোটরসাইকেল ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে হবে;
১১. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে;
১২.“সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮” বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জীবনে এখন নিত্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। “সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮” বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে মূলত সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “দুর্ঘটনার এই চিত্র বাংলাদেশের সড়কে নিরাপত্তাহীনতা ও সীমাহীন অব্যবস্থার চিত্রই প্রকাশ পেয়েছে। যন্ত্রদানবের তাণ্ডবতায় প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে শিশু, ছাত্র, যুবক, বৃদ্ধ ও নানা বয়স ও শ্রেণির লোকের। হৃদয় কেঁপে ওঠে যখন দেখি একই পরিবারের পাঁচ-ছয়জন একই সঙ্গে নিহত হয়। যানজট তো প্রতিনিয়ত প্রতি মুহূর্তে নাগরিক জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় সময় কাটাতে হয়। কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। শারীরিক-মানসিক প্রতিকূলতায় মানুষের কষ্টের সীমা ছাড়িয়ে যায়, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ওপর নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়।
ট্রাফিক দুর্ঘটনা ও যানজট হ্রাস করার জন্য পুলিশ, বিআরটিএ এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রচেষ্টাও লক্ষ করি। মাঝেমধ্যে ট্রাফিক সপ্তাহ, ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ, অবৈধ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান ইত্যাদি পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু ফলাফল শূন্য। মহানগর, শহর ও মহাসড়কে যানজটের চিত্র নিত্যদিনের।
যানজট কমছে না, দুর্ঘটনাও কমছে না, মৃত্যুর মিছিলে নিহতদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রকৃত সমস্যা চিহ্নিত করে, সমস্যার কারণগুলো নিরসনের জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। অামি যদি সড়ক দুর্ঘটনার কথা বলি, তাহলে দেখা যায়, শতকরা ৮০ ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে চালকের কারণে। বেপরোয়া ও গতিসীমার অধিক দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো, দায়িত্বজ্ঞান ও পেশাগত জ্ঞানের অভাব, ট্রাফিক নিয়ম-কানুন মেনে না চলা, যাত্রী ও নিজের নিরাপত্তার প্রতি উদাসীন, পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেওয়া, সচেতনতা ও নিরাপত্তা বোধের অভাব ইত্যাদি। এ সমস্যাগুলো চালককে কেন্দ্র করেই, যা বেশির ভাগ দুর্ঘটনার কারণ। চালকদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই বললেই চলে। বেশির ভাগই পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে চালক হয়েছে—এমন চালকের সংখ্যা নিতান্তই কম। হেলপারের দায়িত্ব পালন করে নিজে নিজে ড্রাইভিং শিখে কোনো রকমভাবে লাইসেন্স সংগ্রহ করেছে। দালালের মাধ্যমে ভুয়া লাইসেন্স সংগ্রহ করে গাড়ি চালাচ্ছে—এমন অনেক চালক রয়েছে। তারা কোনো ট্রাফিক আইন জানে না, সাইন-সিম্বল চেনে না। তাদের দায়িত্ববোধ ও সাধারণ জ্ঞানের মাত্রা অত্যন্ত কম।
চালকরাই পরিবহন সেক্টরে চালিকাশক্তি। মূলত তাদের ওপরই নির্ভর করছে এ সেক্টরের ভালোমন্দ, যাত্রীসেবার মান, নিরাপত্তা ইত্যাদি। কিন্তু পরিবহন শ্রমিক তথা চালকরা একেবারেই অবহেলিত। তাদের প্রশিক্ষণ নেই, বেতন-ভাতা কম, বিশ্রাম নেই, সামাজিক মর্যাদা নেই, চাকরির নিশ্চয়তা নেই, তাদের কল্যাণ ও শৃঙ্খলা দেখারও কেউ নেই। এ কারণেই চালকদের পেশাদারি সৃষ্টি হয় না। তারা বেপরোয়া, অদক্ষ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। চালকের একটু ভুল কিংবা বেপরোয়া ড্রাইভিংয়ের কারণে একটি চলন্ত গাড়ির যাত্রীদের ও তার নিজের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, জানমালের ক্ষতি হতে পারে—এ চিন্তা তার মাথায়ই থাকে না।
যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন, সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস ও পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রথমেই নজর দেওয়া প্রয়োজন চালকদের প্রতি। দক্ষ, ট্রাফিক আইন জানা ও দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন সচেতন ও সুশৃঙ্খল চালকই পারবে পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা আনতে এবং দুর্ঘটনা হ্রাস করতে। দক্ষ, সচেতন, দায়িত্ববান ও পেশাদার চালক তৈরির জন্য সরকারি পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনা থাকা অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে সরকারিভাবে দেশের কয়েকটি অঞ্চলে অথবা বৃহত্তর জেলাগুলোতে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ স্কুল নির্মাণ করা প্রয়োজন। বিআরটিএ দ্বারা পরিচালিত এসব স্কুলে কমপক্ষে চার মাস মেয়াদি ড্রাইভিংয়ের বনিয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণের জন্য গাড়ি চালনা, যানবাহনের ইঞ্জিন ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত জ্ঞান, ট্রাফিক আইন, ট্রাফিক সিগন্যাল, সাইন ও সিম্বল, দায়িত্ববোধ ও নিরাপত্তাজ্ঞান, মনস্তাত্ত্বিক, সচেতনতা ও উদ্বুদ্ধকরণ, শারীরিক ফিটনেস ইত্যাদি বিষয় সন্নিবেশিত করে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে। ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের জন্য এসএসসি পাস প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। চার মাস প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর গাড়ি চালানোর দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য ফিল্ড টেস্ট, ট্রাফিক আইন ও মনস্তাত্ত্বিক ইত্যাদি বিষয়ের ওপর চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষা নিতে হবে। যারা কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হবে, তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে হবে। বিআরটিএ লাইসেন্সপ্রাপ্ত এ চালকদের প্যানেল তৈরি করে রাখবে। এ প্যানেল থেকেই পরিবহন সেক্টরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ/কম্পানি/মালিক/মালিক সমিতি/সংস্থাকে চাহিদা মোতাবেক চালক সরবরাহ করতে হবে। ওই সব প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালকদের জন্য নির্ধারিত বেতন স্কেল ও অন্য সুযোগ-সুবিধা থাকবে। তারা চালককে নিয়মিত নিয়োগপত্র দেবে এবং চাকরির শর্তানুসারে দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োজিত করবে। চালক ও হেলপারের জন্য চাকরির বিধিমালাও থাকবে। এ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে, যাতে দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা প্রশিক্ষণ নিতে পারে। মালিক সমিতি কোনো চালক প্রশিক্ষণে পাঠালেও সরকারীভাবে তাদের ব্যয় বহন করাসহ ভাতা প্রদান করতে হবে।
পিপিপির অাওতায় বেসরকারি উদ্যোগে ড্রাইভিং স্কুল গঠন করার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। তবে শিক্ষার্থীদের খরচ বহন করতে হবে। অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলো বিআরটিএর নিবিড় তত্ত্বাবধানে একই সিলেবাস ও নীতিমালা অনুসারে প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ চালকদের তালিকা প্যানেল তৈরি করার জন্য বিআরটিএর কাছে পাঠাবে।
মালিক ও মালিক সমিতির নেতাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। শুধু ব্যবসার মনোভাব নিয়ে এ সেক্টরে আসা উচিত নয়। এটা একটা সেবামূলক পেশা। সেবার মনোভাব নিয়েই পরিবহন সেক্টরে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। মানসম্মত সেবার মাধ্যমেই তাদের ব্যবসা করতে হবে। মালিকপক্ষকে পরিবহন শ্রমিকদের কল্যাণের দিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। একটি গাড়িতে কমপক্ষে দুজন চালক নিয়োজিত করতে হবে, যাতে তারা পরিশ্রমের পর পর্যাপ্ত বিশ্রামের সুযোগ পায় এবং শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিয়ে গাড়ি চালাতে পারে। চালক তো মানুষ, সে তো মেশিন নয়। তার পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও সুস্থ মানসিক অবস্থা তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। পরিবহন মালিক কর্তৃক চালকদের গ্রহণযোগ্য বেতন-ভাতাদি ও কল্যাণধর্মী পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।
চালকের চাকরিকে আকর্ষণীয় করার জন্য তাদের চাকরির নিরাপত্তা, সুযোগ-সুবিধা, কল্যাণ ও পূর্ণ বয়সসীমা পর্যন্ত চাকরি করার পর তাদের পেনশন বা অন্যান্য আর্থিক সুবিধার নিশ্চয়তাসংক্রান্ত নীতিমালা থাকতে হবে। এভাবে চালকদের মূল্যায়ন করা হলে এ পেশায় যোগ্য ও দায়িত্ববান চালক সৃষ্টি হবে এবং তারা দক্ষতা ও পেশাদারি নিয়ে রাস্তায় গাড়ি চালাবে। একটি দক্ষ ও পেশাদার পরিবহন শ্রমিক/চালক শ্রেণি তৈরি করে তাদের পেশার মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে আগ্রহী ভালো চালক এ সেক্টরে আসবে। এতে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে, যাত্রীসেবার মানও বৃদ্ধি পাবে।
মালিকরা সাধারণত চালকের দক্ষতা, কল্যাণ ও শৃঙ্খলার প্রতি উদাসীন। তাদের বৈধ লাইসেন্সধারী চালক নিয়োগ দিতে হবে। চালকদের নিয়মিত ইন সার্ভিস প্রশিক্ষণের জন্য মালিক সমিতিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করতে হবে। ওই সব প্রশিক্ষণে পুলিশ কর্মকর্তা, বিআরটিএর কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি, সাংবাদিক, পরিবহন শ্রমিক নেতা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষক বা বক্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা যায়।
সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করার ব্যাপারে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। মালিকরা যেকোনো প্রক্রিয়ায় তাদের আয় বৃদ্ধি করার প্রচেষ্টা চালালে চালকের ওপর মানসিক চাপ পড়ে। তখন চালক বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে বেশি ট্রিপ দিতে চায়। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ায় চালকরা রাস্তায় প্রতিযোগিতা করে দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে মালিকের প্রতিদিনের টাকা আয় করার পর তার ব্যক্তিগত বাড়তি টাকার জন্য মরিয়া হয়ে যায়। তাই চুক্তিভিত্তিক চালক নিয়োগ না দিয়ে চালককে মাসিক বেতনভিত্তিক নিয়োগ দিতে হবে।
সড়ক দুর্ঘটনার জন্য সড়ক ও মহাসড়কের নির্মাণে ত্রুটি ও দুর্বল সড়ক ব্যবস্থাপনাও অন্যতম কারণ। সরু ও দ্বিমুখী সড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি থাকে। একই রাস্তায় বৈধ ও অবৈধ এবং দ্রুত ও শ্লথ গতির যানবাহন, সড়কে বাজার, দোকানপাট ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ। মহাসড়কগুলো ফোর লেন করা জরুরি। মহাসড়কে সার্ভিস রোড ও শ্লথ গতি যানবাহনের জন্য পৃথক লেন থাকা বাঞ্ছনীয়। পাবলিক যানবাহনের যাত্রীদের ওঠানামার জন্য যেসব স্থানে বাস বা যানবাহন থামবে, সেখানে বে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু সড়কগুলোতে এসব কিছুই নেই। তাই কোনো গাড়ি বিকল হলে কিংবা যাত্রী ওঠানামা করার প্রয়োজন হলে মূল রাস্তায় গাড়ি থামাতে হয়। এতে নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকে এবং যানজটের সৃষ্টি হয়।
মহানগর ও শহরগুলোর রাস্তার অবস্থা আরো বেসামাল। রাস্তার তুলনায় গাড়ির আধিক্য, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং চালক, যাত্রী ও পথচারীদের ব্যক্তি নিরাপত্তাবোধ ও সচেতনতার অভাব, মোটরসাইকেলচালকদের হেলমেট না পরা, সাইকেলে একাধিক যাত্রী বহন এবং বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানো, পথচারীদের জেব্রাক্রসিং বা ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হওয়া ইত্যাদি কারণে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে।
এটা স্পষ্ট যে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য পরিবহনের চালকরাই মূলত দায়ী। তারা যদি দায়িত্ব নিয়ে, সতর্কতার সঙ্গে নিয়ম-কানুন মেনে শৃঙ্খলার সঙ্গে দক্ষভাবে গাড়ি চালায়, তাহলে দুর্ঘটনা অনেক কমে যাবে। সেই সঙ্গে সড়ক নির্মাণে চিহ্নিত ত্রুটিবিচ্যুতি দূর করতে হবে। পুলিশ সদস্যদের নিষ্ঠা ও সততা নিয়ে ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। বৈধ লাইসেন্স ব্যতিরেকে ও ভুয়া লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালালে কঠোর আইনের মাধ্যমে শাস্তির বিধান থাকতে হবে। সর্বোপরি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক ও ডিজিটাইজড করতে হবে। এ বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে প্রায় দুই বছর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উন্নয়ন প্রজেক্ট পাঠানো হয়েছে, তা বাস্তবায়ন জরুরি।
যাত্রী ও পথচারীদের ব্যক্তি নিরাপত্তা ও বিধি-বিধান প্রতিপালনে সচেতন হতে হবে। নাগরিকদের মধ্যে আইন ও শৃঙ্খলা মানার সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে হবে। সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, শ্রমিক নেতা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের যথাযথ আইন প্রয়োগে সহায়তা প্রদান করতে হবে।
প্রশাসন, পুলিশ, বিআরটিএ, সিটি করপোরেশন, সড়ক ও জনপথ, মালিক, চালক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব। সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জাতীয়ভাবে সেল তৈরি করে এবং প্রতি বিভাগ ও জেলায় একইভাবে সেল গঠন করে নিয়মিত মনিটরিং ও পরামর্শ প্রদানের ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং এ সেলকে সর্বদাই সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এভাবেই সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব।”

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ