ম হা রা নী

প্রকাশিত: ৮:০০ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২৩

ম হা রা নী

সত্যধাম |

তিনি ভারতীয় সৌন্দর্যের মূর্ত প্রতীক। ধ্রুপদী সৌন্দর্যের অনন্য উদাহরণ তিনি। তিনি ফ্যাশন আইকন। পরমাসুন্দরী। কিংবদন্তী ব্যক্তিত্ব। তিনি মহারানী গায়ত্রী দেবী। শিক্ষা ও সুন্দরের অপূর্ব যুগলবন্দী তিনি। সুন্দরের সংজ্ঞা।
কোচবিহারের রাজকুমারী গায়ত্রী দেবী ১৯১৯ সালের ২৩ মে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কোচবিহারের মহারাজা জিতেন্দ্রনারায়ণ। মা বরোদার রাজকুমারী ইন্দিরা রাজে। গায়ত্রী দেবীর ঠাকুমা মহারানী সুনীতি দেবী ছিলেন বিশিষ্ট ব্রাহ্ম নেতা কেশবচন্দ্র সেনের কন্যা। গায়ত্রী দেবী প্রথমে কিছুকাল শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করেন। রবীন্দ্রনাথের বিশেষ স্নেহধন্যা হয়ে ওঠেন। শান্তিনিকেতনে তাঁর সহপাঠিনী ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। পরে মা ও ভাই- বোনদের সঙ্গে চলে যান সুইজারল্যান্ডের লসান- এ। পরে লন্ডন স্কুল অফ সেক্রেটারিজ থেকে শেখেন সচিবালয়ের কাজকর্ম। তিনি অশ্বারোহণে বিশেষ পারদর্শিনী ছিলেন। অনেকগুলো ভাষাতে অনর্গল কথা বলতে পারতেন। রাজপরিবারের রক্ষণশীল রীতিনীতি ভেঙে তিনি মুক্ত বাতাস এনেছিলেন।
রাজকুমারী ১৯ বছরে প্রেমে পড়েন মহারাজা সওয়াই মান সিংহের। পরিবারের আপত্তি উপেক্ষা করে ১৯৩৯ সালের ৯ মে মহামহিম মহারাজা দ্বিতীয় সওয়াই মান সিংহকে বিবাহ করে তিনি জয়পুরের তৃতীয় মহারানী হন এবং ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। বিবাহের পর তিনি গায়ত্রী দেবী নামে পরিচিতা হন। মহারানী গায়ত্রী দেবী। জয়পুরের রাজমাতা। ভারতের একাধিক রাজপরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তার সূত্রে আবদ্ধ ছিলেন মহারানী গায়ত্রী দেবী।
স্বাধীনতার পর দেশীয় রাজ্যগুলির বিলোপের সময় রাজনীতিবিদ হিসেবে চরম সাফল্য অর্জন করেন। ১৯৬২, ৬৭ ও ৭১ লোকসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ১৯৭১ সালে রাজন্যভাতা, মর্যাদা ও রাজকীয় উপাধিসমূহের বিলোপের পর আয়কর আইন ভঙ্গের অভিযোগে গায়ত্রী দেবীকে পাঁচ মাস তিহার জেলে বন্দী করে রাখা হয়। তারপর তিনি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। ব্যস্ত হয়ে পড়েন নানাবিধ সামাজিক কর্মসূচি নিয়ে। নারী শিক্ষার প্রসারের জন্য জয়পুরে ‘মহারানী গায়ত্রী দেবী গার্লস পাবলিক স্কুল’ স্হাপন করেন। ১৯৭৬ সালে আত্মজীবনী ‘আ প্রিন্সেস রিমেমবারস’ প্রকাশ করেন। ফ্যাঙ্কোস লিভি পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘মেমোয়ার্স অফ আ হিন্দু প্রিন্সেস’ তাঁরই জীবন অবলম্বনে নির্মিত। একবার ‘ভোগ’ পত্রিকার বিচারে বিশ্বের সেরা দশ সুন্দরীর তালিকার অন্তর্ভুক্ত হন গায়ত্রী দেবী। ২০০৯ সালের ২৯ জুলাই নব্বই বছর বয়সে জয়পুরে মৃত্যু হয় মহারানীর।
আজ মাহারাণী গায়ত্রী দেবীর ১০৪তম জন্মবার্ষিকীতে স্মরণ করি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ