সরকারি কলেজের সামনে থেকে ময়লার বাগাড় স্থানান্তরের দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান শিক্ষার্থীদের

প্রকাশিত: ২:৩০ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০২৩

সরকারি কলেজের সামনে থেকে ময়লার বাগাড় স্থানান্তরের দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান শিক্ষার্থীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক | শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), ২৫ মে ২০২৩ : শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের সামনে থেকে ময়লার বাগাড় স্থানান্তরের দাবীতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়কে স্মারকলিপি প্রদান করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

অদ্য বৃহস্পতিবার(২৫ মে ২০২৩) দুপুরে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ইতিহাস (সম্মান) ১ম বর্ষের নূরুল আমিন, দীপ্ত পাল, দ্বাদশ (মানবিক)-এর উম্মে নাফিসা মায়মুনা, আজহারুল ইসলাম ফাহিম ও হালিমা বেগমের নেতৃত্বে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ ও আবর্জনার বিস্তৃত স্তুপ অপসারণের দাবিতে পার্শ্ববর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভুক্তভোগী সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের পক্ষ থেকে উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক বরাবরে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা মৌলভীবাজার জেলাধীন শ্রীমঙ্গল উপজেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ সরকারি কলেজ সহ পার্শ্ববর্তী দুটি স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দি বাডস রেসিডেনসিয়্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গাউছিয়া শফিকীয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীবৃন্দ। উল্লিখিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে বৃহৎ একটি জায়গা শহরের ময়লা আবর্জনা রাখার শ্রীমঙ্গল পৌরসভা নির্ধারিত স্থান। এসব ময়লা আবর্জনার সামনে দিয়েই আমাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয় এবং দুর্গন্ধ সহ্য করে ক্লাস করতে হয় । এই বিস্তৃত আবর্জনার স্তূপ থেকে নানা রোগ জীবাণু ছড়ায় যা আমাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত করছে। আশেপাশের পরিবেশকে মারাত্মকভাবে দূষিত করছে। বিশেষত বৃষ্টির দিনে কটু দুর্গন্ধের কারণে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে আসতে চায় না । সম্প্রতি ময়লার ভাগাড়ে কুকুরের উপদ্রব বেড়ে গেছে। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে কুকুর কামড় দেওয়ায় তা নিয়ে শিক্ষার্থীবনের মাঝে আতর ছড়িয়ে পড়েছে।

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হিসেবে বলা হয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনসহ প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশ সচেতনতা এবং তদসংক্রান্ত বিষয়ে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করা। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করাও আমাদের জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (Sustainable Development Goals – SDGs) অর্জনে আমরা সাফল্য দেখিয়েছি। এতে যে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে তার পূর্বশর্ত হচ্ছে মানসম্মত পরিবেশ। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার তৎপরতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন আজ চোখে পড়ার মতো। সেখানে কোনো অস্বাস্থ্যকর দূষিত পরিবেশ কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না।

আবর্জনার স্তুপ অপসারণের দাবিতে পূর্বে অনেকবার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা সোচ্চার হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট মহল থেকে বার বার তাদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। মামলার দোহাই দিয়ে বছরের পর বছর ধরে তাদের চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রাখা হয়েছে। কিন্তু এ অবস্থা নিরসনে আজ অবধি দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় শিক্ষার্থীরা যারপরনাই হতাশ হয়েছে এবং এ নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট মহল আন্তরিক উদ্যোগ নিলে শহর থেকে দূরে জনবসতিহীন সরকারের কোন খাস জায়গা অধিগ্রহণ করে ময়লা-আবর্জনা রাখার জন্য নির্ধারণ করে নিতে পারেন।

আমরা ভুক্তভোগী সাধারণ শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ ও আবর্জনার ভাগাড়টি অপসারণের জন্য আবারও বিনীতভাবে জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ