বীরাঙ্গনাকে লেখা চিঠি

প্রকাশিত: ২:২০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২৩

বীরাঙ্গনাকে লেখা চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ : বাঙালির সম্মানের গৌরবের মাস ডিসেম্বরের আজ ২য় দিন। বিনম্র শ্রদ্ধা ত্রিশ লক্ষ শহিদদের প্রতি, লক্ষ লক্ষ বীরাঙ্গনা মা বোনদের প্রতি এবং সকল সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধা সাহসী বীরদের প্রতি। বিনম্র শ্রদ্ধা একাত্তরে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে সহযোগিতা করা সকলের প্রতি।

“একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার।”

ইচ্ছে হলে পড়ুন

“বীরাঙ্গনাকে লেখা চিঠি” থেকে কিয়দাংশ …….

আমার বোধগম্য হয় না হে সম্মানীয় জাতিসংঘ!
এই যে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসেও জাতিসংঘের ৪৭ জন সদস্য এবং রেডক্রসের চারজন সদস্যসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থান করছিলেন। তাহলে কেন তারা পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থান করেও একাত্তরের দিনগুলোতে পাক হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার বিরুদ্ধে এবং তাদের বীভৎস গণধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মতামত গঠন করেনি! কেন আপনাদের প্রতিনিধিরা বাঙালিদের মতোই অসহায়ত্বের দিনরাত কাটাল বাংলায় বসে বসে!
আপনারা তো পৃথিবীর বুকে মানবাধিকার রক্ষা ও প্রতিষ্ঠার প্রতিষ্ঠান হে জাতিসংঘ। তাহলে আপনারা কেন যুদ্ধ পরবর্তীতে পাকিস্তানি হানাদারদের উক্ত পাপের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ একাট্টা করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করেননি!

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর শাস্তি হয়নি বলেই
আমাদের বীরাঙ্গনা মা বোনেরা আত্মিক ও মনস্তাত্ত্বিক দহনে পুড়ে আজীবন ধুঁকে ধুঁকে বাঁচল এবং মরল হে মহামান্য।

আমাদের বীরাঙ্গনা মা বোনদের উপর সংঘঠিত হওয়া যৌন নির্যাতনের বিচার আমরা আজও চাই। আজীবন চাইব। এক একজন প্রকৃত বাঙালির শরীরে শেষ রক্ত বিন্দু থাকা অবধি বাঙালি জাতি পাক হানাদারদের ক্ষমা করবে না। আপনারা মানবাধিকারের মুরতি হয়েও পাক হানাদারদের মতো হায়েনা গোষ্ঠীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারলেন না হে জাতিসংঘ।

তাই আমরাও পারলাম না আমাদের এই অপমান ভুলতে। আর পারলাম না মানবাধিকার আইন ও সংস্থাকে দায়মুক্ত করতে। যদি সত্যিই কোনোদিন আপনাদের বিবেক জেগে ওঠে। যদি কোনোদিন আমাদের বীরাঙ্গনা মা বোনদের বিভীষিকাময় নির্যাতনের দহন সর্বস্ব আত্মচিৎকার আপনাদের মানবিকতার কর্ণকুহরে প্রবেশ করে। তবে পাকিস্তানি হানাদারদের উত্তরসূরীদের বাধ্য করবেন আমাদের বীরাঙ্গনা মা বোনদের কাছে নতজানু হয়ে ক্ষমা চাইতে। আমরা আপনাদের যথাযথ মানবতার জন্য অপেক্ষা করছি।

~ নাজনীন নাহার

০২.১২.২০২৩

Ashraful Islam Tushar

বইটি সংগ্রহ করতে পারেন রকমারি এবং প্রকাশনার পেইজ থেকে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ