সিলেট ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:২২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪
বিশেষ প্রতিবেদক | ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ : ধনী দেশগুলোর উন্নয়ন সহযোগিতা বাড়ছে না।
বহুপক্ষীয় ব্যাংকগুলোতে ওইসিডি জোটভুক্ত ধনী দেশগুলোর অর্থায়নের পরিমাণ গত এক দশকে মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। তবে একই সময়ে এসব ব্যাংকের অর্থায়ন তথা ঋণ বিতরণের পরিমাণ বেড়েছে। ফলে তাদের তহবিলপ্রাপ্তি ও ঋণ বিতরণের মধ্যে একধরনের সামঞ্জস্যহীনতা তৈরি হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন ধরনের অর্থায়নকৌশলের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতে হচ্ছে। অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠান ক্রমাগত আর্থিক খাতের কাঠামোর মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। এটা আবার ঝুঁকিপূর্ণ।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪) অর্গানাইজেশন অব ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) বহুপক্ষীয় উন্নয়ন অর্থায়ন প্রতিবেদন ২০২৪ নিয়ে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বক্তারা কথাগুলো বলেন। ঢাকায় অনুষ্ঠানটির সহ–আয়োজক ছিল বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
বক্তারা বলেন, ধনী দেশগুলো উন্নয়ন সহযোগিতার যে অঙ্গীকার করেছে, তা বাস্তবায়ন করা উচিত। ধনী দেশগুলোর অর্থ দেওয়ার পরিমাণ কমলেও চীনসহ আরও কয়েকটি দেশ দ্রুততার সঙ্গে দাতার তালিকায় ওপরের দিকে উঠে আসছে। বাংলাদেশসহ যেসব দেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাচ্ছে, তারা নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে আছে। কারণ, এ উত্তরণের পর রপ্তানিতে এখনকার মতো শুল্কমুক্ত সুবিধা মিলবে না। স্বল্প সুদে ঋণও পাওয়া যাবে না। এসব দেশের জন্য বহুপক্ষীয় উন্নয়ন অর্থায়ন বাড়ানো প্রয়োজন। বহুপক্ষীয় ঋণ দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে তাদের আরও বেশি সহযোগিতা দরকার। কিন্তু ওইসিডিভুক্ত ধনী দেশগুলোর অর্থায়ন কমে যাওয়ায় সংকট দেখা দেবে।
সিপিডির গবেষণা ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত বাংলাদেশের ঋণ নিয়ে আলোচনা করেন। বলেন, গত ১৫ বছর বাংলাদেশের ঋণ অনেকটা বেড়েছে। তবে স্বল্প সুদের ঋণ কমেছে। ফলে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে।
একদিকে ঋণের বোঝা বাড়ছে, অন্যদিকে ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বাড়ছে না বলে মন্তব্য করেন ইউসুফ সাদাত। বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের পরিমাণ বাড়ছে না। এতে বড় ধরনের সংকট তৈরি হচ্ছে। তাই পরিবর্তনশীল বাস্তবতায় বাংলাদেশের এখন মিশ্র ও উদ্ভাবনী অর্থায়নের বিষয়ে মনোযোগী হওয়া দরকার।
অনুষ্ঠানে ওইসিডির প্রতিবেদনের ওপর উপস্থাপনা দেন সংস্থাটির অর্থনীতিবিদ আবদুলায়ে ফ্যাব্রেগাস। তিনি অর্থায়ন ও বহুপক্ষীয় ব্যাংকগুলোর পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকগুলো সক্ষমতার চূড়ান্ত জায়গায় চলে গেছে। তাদের অর্থায়ন দরকার। সেই সঙ্গে কোন দেশে কোন খাতে অর্থায়ন করা হচ্ছে, সে বিষয়ে তাদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বক্তারা বলেন, বহুপক্ষীয় সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় দরকার। অনেক সময় তারা বিচ্ছিন্নভাবে বা আলাদাভাবে কাজ করে। দেখা যায়, একই জায়গায় একই রকম অর্থায়ন হচ্ছে, কিন্তু তা বিচ্ছিন্নভাবে হচ্ছে। তাদের মধ্যে সমন্বয় থাকলে এই অর্থায়ন আরও কার্যকর হতো। সে জন্য বক্তাদের মত, বহুপক্ষীয় উন্নয়ন অর্থায়ন সংস্কারের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
এ ছাড়া বক্তারা আরও কিছু বিষয় তুলে ধরেন। দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে স্থানীয় চাহিদায় গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা। সেই সঙ্গে এসব দেশের উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে শক্তিশালী ও সংহত করা দরকার বলেও তাঁরা মত দেন। বলেন, উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সম্পর্কের ধরন বদলানো দরকার; এ ক্ষেত্রে অংশীদারি মনোভঙ্গি গ্রহণ করা যায়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ করে যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে বা যারা বিশ্বজুড়ে উচ্চ নীতি সুদহারের কারণে বিপদে পড়েছে, সেগুলোকে বেশি ঋণ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সোশ্যাল পলিসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের মুহাম্মদ আসিফ ইকবাল, বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ইকোনমিক গভর্ন্যান্স ইনিশিয়েটিভের সহকারী পরিচালক ঋষিকেশ রাম ভান্ডারী, শ্রীলঙ্কার ইনস্টিটিউট অব পলিসি স্টাডিজের গবেষণা পরিচালক নিশা অরুণাতিলকে প্রমুখ।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D