আগাম জাতের আমন ধান কাটাতে ব্যস্ত শ্রীমঙ্গলের কৃষক

প্রকাশিত: ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০২৪

আগাম জাতের আমন ধান কাটাতে ব্যস্ত শ্রীমঙ্গলের কৃষক

মো. আফজল হোসেইন | শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), ১১ নভেম্বর ২০২৪ : শ্রীমঙ্গলের উপজেলা জুড়ে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ জমিতে আগাম জাতের রোপা আমন ধান চাষাবাদ হয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

শ্রীমঙ্গলে চা, আনারস, লেবু, মৎস্য চাষের বাইরেও ব্যাপক ধান চাষ করা হয়। এই মৌসুমে রোপা-আমন ধান জাতের ফলন হয় ব্যাপক। বাংলা কার্তিক মাসের শেষে রোপা-আমন ধান পাকে এবং অগ্রহায়ণের শুরুতে ধারাবাহিকভাবে ধান কাটাতে শুরু করে এই অঞ্চলের কৃষকরা। কৃষকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও আগ্রহ নিয়ে সেইসব ফসল ইতোমধ্যে কাটাতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে দেখা যায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার গ্রামে গ্রামে, বিস্তীর্ণ মাঠে সোনালী রঙের পাকা ধান ফলতে।অধিকাংশ জমিতে শতভাগ ধান পাকা থাকলেও কিছু সংখ্যক জমিতে রয়েছে আধাকাচা।

সিন্দুরখান ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের কৃষক আব্দুল বাছিত জানান, প্রতি বছরে এই মৌসুমে নিজস্ব ২ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করে আসছেন।ধান পেকে সোনালী রং ফুটলে ধান কাটার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন তিনি।
পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন ছিলনা ফলে বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানান এই কৃষক। তাছাড়া অতিমাত্রায় ঝড়-বৃষ্টি হলেও এই অঞ্চল ছিল প্রভাব মুক্ত ফলে ফসল ফলাতে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ২ বিঘা জমিতে ব্রি-১৭ জাতের ধান চাষ করে প্রায় ৩০ মণ ধান ঘরে তুলতে সক্ষম হন। বর্তমানে কাঁচা ধান ১ হাজার টাকা ও শুকনো ধান ১ হাজার ৩ শত টাকা দরে প্রতি মণ বাজারে বিক্রি করছেন কৃষকরা। তবে তিনি বিক্রি না করে খাবারের জন্য সংগ্রহ করে রেখেছেন।

আশিদ্রোন ইউনিয়নের বিলাসের পাড় সংলগ্ন গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ জানান, আমনধান চাষ করতে গিয়ে স্বর্ণধানের চারা বিলাস নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। যার ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।পরবর্তীসময়ে প্রায় ৫ বিঘা জমিতে রোপা আমন জাতের স্বর্ণা চাষ করেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি পরবর্তী ফসলের। তিনি এখনো ধান কাটায় হাত দেননি। তবে দুই চারদিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু করবেন। গত বছরে এই জাতের ধান চাষ করে প্রতি কিয়ার জমিতে ১৭-১৮ মণ ধান উৎপাদন করেন বলে জানান এই কৃষক।

চলতি মৌসুমে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্পর্কে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মহিউদ্দিন জানান, অতিবৃষ্টি ও বন্যায় দেড়শ হেক্টর জমির ধান ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলতি মৌসুমে ১৫ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। অতিবৃষ্টি ও বন্যার পানিতে অনেক ধানের চারা তলিয়ে গেছে ফলে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভাটা পরে। বন্যা পরবর্তীসময়ে সরকারি প্রণোদনা ও সার্বিক সহযোগিতা করে কৃষকদের এগিয়ে নিতে সক্ষম হই। বন্যার ফলে এবার পানির সংকট তেমন ছিলনা। তাছাড়া তিনি জানান, ব্ন্যা হলে জমির উপকার হয়। বন্যার পানিতে পলি মাটি জৈব সার থাকে ফলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। আমন ধানের বাম্পার ফলনে দেড়শ হেক্টর জমির চাষাবাদের ঘাটতি পুষিয়ে উঠতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ