সিলেট ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০২৫
(ভ্রাম্যমাণ বইমেলার উৎসর্গে)
শব্দের আলোর পথে আজ শ্রীমঙ্গলে উৎসব লাগে,
বইয়ের পাতায় জ্বলে উঠে নব প্রভাতের আগুন জাগে।
উদয়ন বালিকার প্রাঙ্গণ আজ আলোকময় ক্ষণ,
মননে জেগে ওঠে আবার বিশ্বসাহিত্যের অনুপ্রাণন।
চতুর্দিক ভরে আছে গানের সুরে পাঠের ডাক,
শিক্ষার্থীর চোখে ঝরে জ্ঞানের নীল-সবুজ আঁক।
উদ্বোধনী মঞ্চে উচ্চারিত মানবতার বাণী,
“আলোকিত মানুষ গড়ার” অঙ্গীকারেই সবার টানি।
ইউএনও’র হাতেই বাজল আজ আশার ঘণ্টাধ্বনি,
মঞ্চে অতিথিদের কণ্ঠে জাগে সৌন্দর্যের ধ্বনি।
আমিরুজ্জামানের কণ্ঠে জ্ঞানের দীপ্তি বাজে,
“মননের যাত্রাই মূল, বইয়ের পাতায় রাজে।”
চলেছে মেলা চার দিনব্যাপী রঙিন সময় ধরে,
দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বইয়ের উৎসব ঘরে ঘরে।
গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কাব্য, রূপকথার ধারা,
শিশু-কিশোরের হাসিমুখে স্বপ্নের রোদ ঝরা।
অমিত চক্রবর্তীর চোখে দীপ্তি, এক অঙ্গীকার,
“ভ্রাম্যমাণ বইমেলা” যেন জ্ঞানের নতুন উপহার।
তিনি বলেন— “পাঠের সুখ পৌঁছে দিতে দূর দূরান্তে,
আমরা চলেছি স্বপ্ন বুনে মানুষের হৃদয়কান্তে।”
শিক্ষক, ছাত্র, সংস্কৃতিপ্রেমী, সবাই একাত্ম প্রাণ,
পাঠের প্রেমে গড়া হলো আলোকিত এক পরিবার।
বইয়ের গন্ধে মুগ্ধ হয়ে তরুণেরা হাসে,
জীবনের জটিল পথে খোঁজে মনের প্রকাশে।
শ্রীমঙ্গলের পথে পথে এখন জ্ঞানের উৎসব বাজে,
যেন কবিতার দেশে নতুন ভোরের সাজে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় পাশে, প্রশাসনের সাথ,
মানুষ গড়ার এ প্রয়াসে খুঁজে নিল সত্য পথ।
কমরেড আমিরুজ্জামান বলেন— “এই মেলা শুধু বিক্রি নয়,
এ এক আলোকিত অভিযাত্রা, মনের নতুন জয়।”
“সত্তরের দশক থেকে যে আলো জ্বালেন সায়ীদ স্যার,
আজও সেই শিখা বয়ে আনে মানবতার বার।”
শেষদিনে প্রাঙ্গণে জমে উঠবে জ্ঞানের আসর,
যেখানে পাঠের আনন্দে মিলবে হাজারো নজর।
আবৃত্তি, গান, কবিতা, বই— সব মিলে এক সুর,
জীবন মানে পাঠের আলো, মমতার মধুর নূর।
বইমেলা শেষে রবে স্মৃতি, তবু জাগে এক প্রার্থনা—
“মানুষ হোক আলোকিত, হোক মননের সাধনা।”
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র তাই আজও জ্ঞানের বাতিঘর,
মনুষ্যত্বের মেলায় ডাকে— “এসো, পাঠে করো ভর।”
সমাপ্তি:
চারদিনের এই আয়োজন শুধু বই নয়—
এটি আত্মার উৎসব, মানবতার জয়।
আলোকিত মানুষ গড়ার এই আলেখ্যে,
জেগে উঠুক বাংলাদেশ— পাঠের মহাযজ্ঞে।
#
“আলোকিত মানুষ গড়ার মেলা” কবিতার বিস্তৃত সারাংশ
সৈয়দ আমিরুজ্জামানের “আলোকিত মানুষ গড়ার মেলা” কবিতাটি মূলত একটি ভ্রাম্যমাণ বইমেলাকে কেন্দ্র করে রচিত, যেখানে পাঠ, জ্ঞান, সাহিত্য ও মানবতার এক মহোৎসবের চিত্র ফুটে উঠেছে। কবি শ্রীমঙ্গলে অনুষ্ঠিত এই বইমেলার আবহ, উদ্দেশ্য ও প্রভাবকে হৃদয়ের গভীরতা থেকে তুলে ধরেছেন। এটি শুধু একটি বইমেলা নয়— এটি এক মানবিক আন্দোলন, মননের জাগরণ ও আলোকিত সমাজ গড়ার প্রয়াস।
কবিতার সূচনায় কবি দেখিয়েছেন কিভাবে বইয়ের আলোয় শ্রীমঙ্গলে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। উদয়ন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ যেন রূপান্তরিত হয়েছে আলোকিত জ্ঞানের মন্দিরে। বইয়ের পাতায় নব প্রভাতের আলো ঝলমল করছে— যা প্রতীকীভাবে নতুন চিন্তা, নতুন জাগরণ ও নতুন প্রজন্মের আশা প্রকাশ করে। শিক্ষার্থীদের চোখে জ্ঞানের নীল-সবুজ রঙ ছড়িয়ে পড়েছে, যেন জ্ঞান তাদের জীবনের প্রতিটি কোণ আলোকিত করছে।
কবিতায় মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দৃশ্য বিশেষভাবে প্রাণবন্ত। সেখানে উচ্চারিত হয় মানবতার বাণী— “আলোকিত মানুষ গড়ার অঙ্গীকার।” প্রশাসনের প্রতিনিধি ইউএনও’র উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরুর ঘণ্টাধ্বনি প্রতীক হয়ে ওঠে আশার। অতিথিদের কণ্ঠে সৌন্দর্য, জ্ঞান ও মানবিকতার আহ্বান মেলে ধ্বনিত হয়। কবি নিজে (আমিরুজ্জামান)ও এখানে বক্তব্য দেন— যে প্রকৃত পাঠ মানেই মননের যাত্রা, আর সেই যাত্রাই মানুষকে সত্যিকারের জ্ঞানের রাজ্যে পৌঁছে দেয়।
এরপর কবি বইমেলার প্রাণচঞ্চলতা ও বৈচিত্র্যময় আয়োজনের বর্ণনা দিয়েছেন। চার দিনব্যাপী এই উৎসবে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বইয়ের রঙিন জগতে মেতে ওঠে মানুষ। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কাব্য থেকে শুরু করে রূপকথা ও শিশু সাহিত্য—সব মিলিয়ে এটি হয়ে ওঠে জ্ঞানের উৎসব। শিশু-কিশোরদের মুখে ফুটে ওঠে স্বপ্নের হাসি, পাঠের আনন্দে জেগে ওঠে এক নতুন প্রজন্ম।
কবিতায় অমিত চক্রবর্তীর বক্তব্যের মাধ্যমে “ভ্রাম্যমাণ বইমেলা”-র মূল উদ্দেশ্যটি উন্মোচিত হয়েছে। তিনি বলেন, বই ও পাঠের সুখ পৌঁছে দিতে হবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যাতে জ্ঞান ও সংস্কৃতি কেবল শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। এভাবেই বইমেলা হয়ে ওঠে “জ্ঞানের নতুন উপহার”—একটি চলমান আলোর শিখা, যা মানুষের হৃদয়ে মানবিকতার আলো ছড়িয়ে দেয়।
মেলায় শিক্ষক, ছাত্র, সংস্কৃতিপ্রেমী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা—সবাই এক স্রোতে মিলিত হয়েছেন। এই ঐক্যবদ্ধতা দেখায় যে পাঠ আসলে সমাজ গঠনের শক্তিশালী হাতিয়ার। বইয়ের গন্ধে তরুণদের মুখে ফুটে ওঠে আনন্দ, আর তারা খুঁজে পায় জীবনের অর্থ ও আত্মপ্রকাশের পথ।
শ্রীমঙ্গলের পথে পথে এখন বইমেলার সুর বেজে উঠছে— যেন এক সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণের প্রতীক। কবি উল্লেখ করেছেন যে, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের সহায়তায় এই উদ্যোগ সফল হয়েছে, কারণ এটি কেবল আয়োজন নয়, বরং “সত্য পথের” সন্ধান।
পরবর্তীতে কমরেড আমিরুজ্জামানের উক্তি কবিতার দর্শনকে আরও গভীর করে তোলে— “এই মেলা শুধু বিক্রি নয়, এটি আলোকিত অভিযাত্রা।” তিনি পাঠ ও মানবতার মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করেছেন, এবং স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সেই মানবতাবাদী শিক্ষক সায়ীদ স্যারের কথাকে, যিনি সত্তরের দশক থেকেই জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে চলেছেন।
শেষাংশে কবি বলেন, বইমেলার সমাপ্তি মানেই কোনো শেষ নয়— বরং এটি এক চিরন্তন আহ্বান। আবৃত্তি, গান, কবিতা ও বই একসঙ্গে মিশে যায় মানবতার মধুর সুরে। কবি প্রার্থনা করেন, যেন মানুষ সত্যিকারের আলোকিত হয়— জ্ঞানের, ভালোবাসার ও মানবিকতার সাধনায়।
সবশেষে কবি ঘোষণা দেন— এই আয়োজন কেবল একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি “আত্মার উৎসব, মানবতার জয়।” বইমেলা এখানে হয়ে ওঠে এক মহাযজ্ঞ—যেখানে পাঠই মুক্তির পথ, এবং আলোকিত মানুষ গড়ার মধ্য দিয়েই জেগে উঠবে বাংলাদেশ।
সারমর্মে বলা যায়:
এই কবিতাটি পাঠের মাধ্যমে আলোকিত সমাজ গড়ার এক প্রাণস্পন্দিত আহ্বান। বইমেলা এখানে জ্ঞানের বাতিঘর, মানবতার প্রতীক এবং সাংস্কৃতিক জাগরণের উৎস। কবি দেখাতে চেয়েছেন— বইই পারে মনুষ্যত্ব জাগাতে, সমাজকে রূপান্তরিত করতে এবং একটি আলোকিত জাতি গঠনে পথ দেখাতে।

সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি