এক লাখের বেশি বিদ্যুৎ গ্রাহক ভুতুড়ে বিলের শিকার: অভিযোগ করেও প্রতিকার পায়নি গ্রাহক

প্রকাশিত: ১০:০১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২০

এক লাখের বেশি বিদ্যুৎ গ্রাহক ভুতুড়ে বিলের শিকার: অভিযোগ করেও প্রতিকার পায়নি গ্রাহক

Manual5 Ad Code

ঢাকা, ০৪ জুলাই ২০২০ : ভুতুড়ে বিলের শিকার হয়েছে এক লাখেরও কিছু বেশি গ্রাহক। গ্রাহকদের কাছ থেকে এই অতিরিক্ত বিল আদায়ের ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগের জেরার মুখে পড়েছে বিতরণ কোম্পানির প্রধানরা। এ অবস্থায় আগামী রবিবার সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

বিতরণ কোম্পানিগুলোর মধ্যে ডিপিডিসি জানায়, তাদের ওভার বিলিং হয়েছে ১৮ হাজারের মতো, ডেসকোর ৪ হাজারের মতো, নেসকোর প্রায় ৫ হাজার গ্রাহক এ ধরনের বিল পেয়েছেন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৭৬ হাজারের হিসাব পাওয়া গেলেও বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে এটি এক লাখেরও কিছুটা বেশি। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিলের হিসাব আরও অনেক বেশি। তারা কমিয়ে বলছেন। লুকানোর চেষ্টা করছেন জড়িতদেরও।

জানা যায়, বিতরণ কোম্পানির নিজস্ব তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। বিলের তদন্তে গঠন করা টাস্কফোর্সের কাছেও প্রতিবেদন জমা দিতে শুরু করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, আজ বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) এক অনলাইন বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে দেশের ৫টি বিতরণ কোম্পানির প্রধানদের কাছে জানতে চাওয়া হয় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে তারা গত সাত দিনে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রত্যেকটি বিতরণ কোম্পানি আলাদা আলাদা করে তাদের পদক্ষেপগুলো জানিয়েছে। তারা জানায়, যেসব বিলে অভিযোগ ছিল তারা তা সমাধান করেছেন। গ্রাহকরা এখন খুশি।

বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বিতরণ কোম্পানিগুলো কাছে মূলত চারটি বিষয়ে সুস্পষ্ট উত্তর চাওয়া হয়েছে-

Manual8 Ad Code

১) কতগুলো বিদ্যুৎ বিলে ওভার বিলিং করা হয়েছে?

Manual6 Ad Code

২) এই ওভার বিলিংয়ের বিষয়ে কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

৩) এই বিলিংয়ের সঙ্গে কতজন জড়িত।

৪) তাদের শোকজ করা হয়েছে কিনা?

এসব প্রশ্নের জবাবে কোম্পানি প্রধানরা জানান, তারা নিজস্ব কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করছেন।

Manual8 Ad Code

প্রসঙ্গত, অতিরিক্ত এই বিদ্যুৎ বিলে অভিযোগের পর অভিযোগ আসতে শুরু করার পর গত বৃহস্পতিবার একটি টাস্কফোর্স গঠন করে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং সাত দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি দুটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আজ সেই সাতদিন শেষ হয়েছে।

Manual1 Ad Code

এ বিষয়ে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন বলেন, আগামী রবিবার টাস্কফোর্সের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। এরমধ্যে সবক’টি প্রতিবেদন আমরা যাচাই বাছাইয়ের কাজ শেষ করবে। কত ওভার বিলিং হয়েছে অথবা কারা জড়িত জানতে চাইলে তিনি তা এখনই বলতে রাজি হননি।

অভিযোগ করেও প্রতিকার পায়নি শ্রীমঙ্গলের এক গ্রাহক

গত ২৮ জুন ২০২০ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলা জনিত দুর্যোগ পরিস্থিতিতে অত্যাধিক বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগ করেছিলেন শ্রীমঙ্গলের এক গ্রাহক। মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম বরাবরে ওই গ্রাহক অস্বাভাবিক বিলের ৫০% মওকুফ চেয়েছিলেন।
শ্রীমঙ্গল কলেজ রোডস্থ বসুন্ধরা অাবাসিক এলাকার (বিরাইমপুর) দুই মিটারের গ্রাহক সৈয়দা রোকেয়া খাতুন অভিযোগ পত্রে বলেছেন, মহামারী করোনাকালীন প্রত্যেক মাসে ৩ গুণ বেশি বিদ্যুৎ বিল এসেছে, যা করোনাকালের পূর্বে এত বেশি বিল অাসেনি।
অভিযোগ পত্রে অারও উল্লেখ করা হয় যে, “করোনার পূর্বে (মার্চ মাস) নীট বিল ৬৫২ টাকা ও অন্য মিটারে ৫৭৬ টাকা এসেছে। পক্ষান্তরে করোনাকালীন সময়ে (জুন মাস) নীট বিল ১৫৫৯ টাকা ও অন্য মিটারে ২০৬৮ টাকার বিল এসেছে। অামার ২টি মিটারেই তিনগুণ বেশি বিদ্যুৎ এসেছে, যা পরিশোধ করা অামার পক্ষে কষ্টসাধ্য। অন্যান্য অসঙ্গতি তো অাছেই।”
এছাড়াও তিনি মহামারী করোনাকালীন অবস্থায় মানবিকতা ও বিশেষ বিবেচনায় মার্চ – জুন পর্যন্ত দুই মিটারের সর্বমোট বিলের ৫০% মওকুফের দাবী করেন।
এই বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উর্ধ্বতন কর্মকর্তার মুঠোফোনে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারেননি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code