স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন দুর্নীতি প্রকাশে মানুষ হতাশ ও ক্ষুব্ধ: ওয়ার্কার্স পার্টি

প্রকাশিত: ৪:৪৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২০

স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন দুর্নীতি প্রকাশে মানুষ হতাশ ও ক্ষুব্ধ: ওয়ার্কার্স পার্টি

Manual6 Ad Code

ঢাকা, ১০ জুলাই ২০২০: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সভা আজ ১০জুলাই শুক্রবার গৃহীত প্রস্তাবে বাংলাদেশ করোনা ভাইরাসের ‘সংক্রমণ চক্রে’র মধ্যে পতিত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

Manual6 Ad Code

ওয়ার্কার্স পার্টির এক প্রস্তাবে বলা হয়, জুলাই মাসের প্রথমদিনে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার এর প্রমাণ। কেবল তাই নয়, এই সংক্রমণ এখন প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছেছে। জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে কোরবানীর হাট ও ঈদে বাড়ী যাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে এই সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারে উর্ধমুখী বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
প্রস্তাব বলা হয়, এই বাস্তবতাতেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিটি পরীক্ষার জন্য ফি ধার্য করেছে যা মানুষকে করোনা পরীক্ষার ব্যাপারে অনুৎসাহিত করবে। অন্যদিকে পরীক্ষার ক্ষেত্রে যে সক্ষমতা রয়েছে তার অর্ধেকেও ব্যবহার করা হচ্ছে না। একই সময়ে গত ৪জুন ঢাকা মহানগরকে ‘রেড’, ‘ইয়েলো’ ও ‘গ্রীণ’ জোনে-এ ভাগ করে সংক্রমিতদের বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত হলেও তাও একমাস ধরে দু’টি এলাকা ছাড়া কোথাও বাস্তবায়িত করা হয় নাই। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি না মানার জন্য দোষারোপ করা হলেও কার্যতঃ কর্তৃপক্ষের মনোভাবই তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি না মানতে উৎসাহিত করছে। অথচ এই বাংলাদেশেই সংক্রমণের প্রথম পর্যায়ে ঢাকার টোলারবাগ, মাদারীপুরের শিবচরের মানুষ ‘লকডাউন’ সফল করতে কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করে নাই কেবল, নিজেরাই তা কার্যকর করতে স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছে। বস্তুতঃ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম জনমনে অনাস্থা সৃষ্টি করে নাই কেবল, তাদের ক্ষুদ্ধ করে তুলেছে। আর এই অবস্থায় এন-৯৫ মাস্ক, পিপিই ও আরটি-পিসিআর ক্রয় নিয়ে দুর্নীতির যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছিল তার নিরসন না হয়ে সরকারি অনুমোদনহীন রিজেন্ট হাসপাতালকে কোভিড-১৯ হাসপাতাল হিসেবে অনুমোদন, বিনা পয়সার পরীক্ষায় অর্থ আদায় ও সর্বোপরি ছয় হাজারের উপর মিথ্যা সনদ দান মানুষের হতাশা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আর এর ফলাফল হিসেবে বাংলাদেশের বিমান পরিবহন যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তেমনি দেশে রেমিটেন্স পাঠানো প্রবাসী শ্রমিকরা তাদের কর্মস্থলে ফিরতে পারছে না। তাদের ফিরতি বিমানে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যেখানে রেমিটেন্স প্রবাহ অক্ষুণ্ন রাখতে প্রবাসী শ্রমিকদের চাকুরি বহাল রাখতে বিশ্বের দেশগুলোর সহায়তা চেয়েছে, সেখানে এধরনের ঘটনাবলী বাংলাদেশের শ্রমিকদের সম্পর্কেই বিদেশে অবিশ্বাস ও সন্দেহ সৃষ্টি করছে।
(১)ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে বলা হয়, করোনা সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেও করোনা সংক্রমণের কারণে ও আতংকে দেশের মানুষের জীবনই যদি অচল হয়ে পরে তা’হলে তার কোন কার্যকারিতা থাকবে না। বরং তা অর্থগৃন্দু কিছু লুটেরা মালিকেরই স্বার্থসিদ্ধি করবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে বলা হয় যে কেবল স্বাস্থ্যক্ষেত্রেই অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতা কাজ করছে না, এবার যে বাজেট দেয়া হয়েছে তাতেও কোভিড-১৯-কে উপেক্ষা করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গীত গাওয়া হয়েছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে এই করোনাকালের সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল বন্ধ ঘোষণা করা আর এক অমানবিক কাজ। এবিষয়ে ওয়ার্কার্স পার্টি আগামী ১৮ জুলাই শনিবার অনুষ্ঠিতব্য ভাচুয়াল সেমিনারে তার পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য তুলে ধরবে। সেমিনারে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, পাট গবেষক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ অংশ নেবেন। পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পলিটব্যুরোর সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ এডভোকেট সাহারা খাতুন এমপির মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
সভায় ওয়ার্কার্স পার্টির প্রাক্তণ নেতা বর্তমানে সিপিবি’র সভাপতি মন্ডলীর সদস্য কমরেড হায়দার আকবর খান রনো ও পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড জ্যোতি শংকর ঝন্টুর দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়।
পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশার সঞ্চালনায় ‘জুম এ্যাপে’ অনুষ্ঠিত এই সভায় যুক্ত হন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড ড.সুশান্ত দাস, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরেড নুর আহমদ বকুল, কমরেড কামরূল আহসান, কমরেড আমিনুল ইসলাম গোলাপ, কমরেড অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী, কমরেড আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান, কমরেড নজরুল হক নিলু প্রমুখ।

Manual2 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code