স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কারণেই করোনা নিয়ে জনগণের মধ্যে শৈথিল্য: ওয়ার্কার্স পার্টি

প্রকাশিত: ৭:১২ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কারণেই করোনা নিয়ে জনগণের মধ্যে শৈথিল্য: ওয়ার্কার্স পার্টি

ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর ভার্চুয়াল বৈঠকে দলটির নেতারা বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গা ছাড়াভাব, উদ্যোগহীনতা ও পরামর্শক কমিটির পরামর্শ উপেক্ষা করার কারণে জনগণের মধ্যে শৈথিল্য দেখা দিয়েছে। দুই দিনের ভার্চুয়াল বৈঠকের মঙ্গলবার সভার প্রস্তাবাবলী ও সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হয়েছে। এতে করোনা নিয়ে দলটির এই বক্তব্য পাওয়া গেছে।

পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপির সভাপতিত্বে পলিটব্যুরোর এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর রিপোর্ট দেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি।

সভায় করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত প্রস্তাবে বলা হয়, বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের করোনা শনাক্তকরণে টেষ্ট কার্যক্রম কমিয়ে দেয়া, করোনা রোধে যে চিকিৎসকরা কাজ করছেন তাদের কোয়ারান্টাইন ব্যবস্থা তুলে দেয়া ও সর্বোপরি করোনার প্রকৃত চিত্র আড়াল করা স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি জনগণকে অনুৎসাহিত করে তুলেছে। দুর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখন নিজেদের বাঁচাতে ব্যস্ত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও প্রথম থেকেই এ ব্যপারে চরম অসংবেদনশীলতা, উদাসীনতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। এর ফলে সমস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কেই জনমনে অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি রোধ করতে কান না টেনে মাথা টানার কথা বলা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, করোনা সংক্রমণ রোধের ব্যবস্থাকে ধরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সামগ্রিক পুনর্গঠন করতে হবে। প্রস্তাবে আরও বলা হয়, বর্তমান অবস্থায় যখন জনগণের ক্রয়ক্ষমতা একেবারেই নিম্নমুখী, প্রতিটি স্তরের মানুষের আয় কমে গেছে সেখানে চাল, পেঁয়াজ, রসুন, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট এর জন্য দায়ী।

খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রস্তাবে বলা হয়, এবার ভাল ফসল উৎপাদনের পরও সরকার সময় বাড়িয়েও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল সংগ্রহে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারি গুদামে চাল দেয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ মালিকরা তাদের জেলে দিলেও চাল দেবে না বলে হুমকি দিয়েছে। অন্যদিকে বড় কৃষকসহ ব্যবসায়ী পর্যায়ী দাম বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাল মজুত করা হচ্ছে। মজুতবিরোধী আইনের কোন প্রয়োগ নেই। এই অবস্থায় দেশের গরিব, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ চরম বিপদে পড়বে।

ওয়ার্কার্স পার্টি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাল সংগ্রহে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের সরকারি কর্মকর্তা ও গুদামে চাল দিতে অস্বীকারকারী চালকল মালিক ও মজুতকারী অসাধু ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। পার্টি এই লক্ষ্যে আগামী ১ অক্টোবর দেশের সর্বত্র সমাবেশ করে খাদ্য দপ্তরে স্বারকলিপি প্রদানেরও কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

এছাড়া প্রস্তাবে বলা হয়, সরকার পাটকলের পর দেশের চিনিকল বন্ধ করে দেবার পদক্ষেপ নিতে চলেছে। ফলে কেবল সাধারণ ভোক্তা নয় দেশের চিনিকল শ্রমিক ও বিশাল সংখ্যক আখচাষী ও আখচাষ এলাকা মানুষ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। পার্টি চিনিকল চালু রাখা ও আখচাষীদের স্বার্থরক্ষায় আগামী ৭ অক্টোবর সারাদেশে সমাবেশ, মানবন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।

ভার্চুয়াল এ আলোচনায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, ড. সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমদ বকুল, কামরূল আহসান, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম হক্কানী, হাজী বশিরুল আলম, জ্যোতি শংকর ঝন্টু, অধ্যাপক নজরুল হক নীলু, আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান প্রমুখ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ