নারী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গ্রেফতার ও নির্যাতন সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য: মেনন

প্রকাশিত: ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ, মে ১৯, ২০২১

নারী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গ্রেফতার ও নির্যাতন সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য: মেনন

বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ১৯ মে ২০২১ : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন জেষ্ঠ নারী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নির্যাতন, নিগ্রহ ও মামলারব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে অনিভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন। মেনন বলেন,সরকারের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় ডকুমেন্ট বা ফাইল কোন একান্ত সচিবের টেবিলে অরক্ষিতঅবস্থায় পরে থাকে না। এটা হয়ে থাকলে সেটা বরং মন্ত্রণালয়েরই অযোগ্যতা ও ব্যর্থতা। মন্ত্রীপ্রকারান্তরে দেশে দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী-আমলাদের যে অশুভ আঁতাত গড়ে উঠেছে তার পক্ষেইসাফাই গেয়েছেন। অথচ দেশবাসী জানে এই করোনাকালে সরকারী অর্থ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েকি পরিমাণ দুর্নীতি আর লুটপাট হয়েছে। আর রোজিনা ইসলাম সেই সত্যকে তার অনুসন্ধিৎসুরিপোর্টের মাধ্যমে তুলে ধরছিলেন। আর এ কারণেই তাঁকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদেরআক্রোশের শিকারে পরিনত হতে হয়েছে। মেনন সংবাদপত্র ও সাংবাদিকের স্বাধীনতা ও পেশাগতঅধিকার অক্ষুণ রাখতে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও তাকে মুক্তিদেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি একই সাথে যে সকল আমলা-কর্মচারীরা তাকে শারীরিকভাবেলাঞ্চিত করেছে তাদেরও শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, ঐ আমলাদের দিয়ে গঠিত তদন্তকমিটি ও তার টার্মস এ্যান্ড রেফারেন্সও অগ্রহণযোগ্য। ঢাকা মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড আবুল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে কমরেড রাশেদ খানমেনন সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ের কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন, তার বিরুদ্ধেমিথ্যা মামলা দায়ের ও কারাগারে প্রেরণের নিন্দা জানান। ঢাকা মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টি প্রতিবাদসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক কমরেড কিশোর রায়, বিশিষ্ট আইনজীবী জোবায়দা পারভীন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড জাকির হোসেন রাজু, কমরেড মোস্তফা আলমগীর রতন, গার্হস্থ্য নারীশ্রমিক নেত্রী মুর্শিদা আখতার নাহার, নারী মুক্তি সংসদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিউলী সিকদার, যুবনেতা মোতাসিম বিল্লাহ সানি, বিশিষ্টসাংবাদিক হুমায়ুন মুজিব, ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েল প্রমুখ।

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের সঙ্গে স্বাস্থ্য সচিবের অফিস স্টাফদের অসদাচরণ, আটকে রেখে হয়রানি ও তথ্য চুরির মতো হাস্যকর অভিযোগ এনে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “এটা গণস্বার্থ রক্ষার জন্য বস্তুনিষ্ঠ ও প্রগতিশীল সাংবাদিকতার পরিপন্থী। যা গণমুখী সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীন বিকাশের জন্যও হুমকিস্বরূপ।”

সাংবাদিক দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন ফেসবুক স্টেটাসে লিখেছেন, “সত্য প্রকাশে কন্ঠবোধ (গলা চেপে ধরা) এটা না গনমাধ্যম, না রাষ্ট্র কারো জন্যই সুখকর নয়। আমরা একদিকে বলি স্বাধীন গনমাধ্যম, আবার অন্য দিকে সত্য প্রকাশ করায় সাংবাদিকের কন্ঠ চেপে ধরতে। এটা শুধু গনমাধ্যকর্মীদের নয়, একটি গনতান্ত্রিক দেশের জন্যও লজ্জা। কতিপয় দুর্নীতিবাজ আমলাদের এমন নির্লজ্জ কর্মকান্ডে বহির্বিশ্বে নষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি। তাই জেবুন্নেছাদের এখুনি থামান। মুক্তি দিন রোজিনা আাপাকে।”