লকডাউনে চাকরি হারানো শ্রমিকদের ৭ শতাংশ এখনো বেকার, গড়ে আয় কমেছে ৮ শতাংশ

প্রকাশিত: ৬:৪৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২২

লকডাউনে চাকরি হারানো শ্রমিকদের ৭ শতাংশ এখনো বেকার, গড়ে আয় কমেছে ৮ শতাংশ

Manual8 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ১৩ জানুয়ারি ২০২২ : করোনা মহামারীকালে লকডাউনে ঢাকা শহরের পরিবহন, দোকান-পাট এবং হোটেল-রেস্তোরা খাতে চাকরি হারিয়েছেন ৮৭ শতাংশ শ্রমিক। চাকরি হারানো শ্রমিকদের ৭ শতাংশ এখনো বেকার এবং গড়ে তাদের আয় কমেছে ৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস্ এর “ঢাকা শহরের পরিবহন, দোকান-পাট এবং হোটেল-রেস্তোরা খাতের শ্রমিকদের উপর সাম্প্রতিক লকডাউনের প্রভাব নিরূপন’’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি ২০২২) ধানমন্ডির বিলস্ সেমিনার হলে আয়োজিত গবেষণা ফলাফল নিয়ে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন বিলসের উপ-পরিচালক (গবেষণা) মোঃ মনিরুল ইসলাম। আরো উপস্থিত ছিলেন বিলসের ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল হক আমিন, পরিচালক কোহিনূর মাহমুদ এবং নাজমা ইয়াসমীন প্রমুখ।

গবেষণায় দেখা গেছে লকডাউনে (৫ এপ্রিল থেকে ১০ আগস্ট ২০২১ পর্যন্ত) চাকরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮৭ শতাংশ শ্রমিকের। সবচেয়ে বেশি পরিবহন খাতের শ্রমিকদের ৯৫ শতাংশ, দোকান পাট শ্রমিকদের ৮৩ শতাংশ এবং হোটেল-রেস্তোরা খাতের শ্রমিকদের ৮২ শতাংশ কর্মসংস্থান হারান। লকডাউন পরবর্তী সময়ে ৯৩ শতাংশ শ্রমিক চাকরিতে পুনর্বহাল হয়েছেন, ৭ শতাংশ শ্রমিক এখনো বেকার রয়েছেন। তবে লকডাউন সময়ে এসব খাতে খন্ডকলীন শ্রমিকদের কর্মসংস্থান বেড়েছিলো ২১৫ শতাংশ।

অন্যদিকে লকডাউনে তিনটি খাতে কার্যদিবস কমেছিল ৭৩ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ৯২ শতাংশ কার্য দিবস কমেছে পরিবহন খাতে। লকডাউন পরবর্তী সময়ে অবশ্য কাজের চাপ বেড়েছে, কার্যদিবস এবং কর্মঘন্টা আগের তুলনায় বেড়ে গেছে।

Manual4 Ad Code

গবেষণায় দেখা গেছে লকডাউনে তিনটি খাতের শ্রমিকদের আয় গড়ে ৮১ শতাংশ কমেছে। সবচেয়ে বেশি পরিবহন খাতের শ্রমিকদের ৯৬ শতাংশ এবং হোটেল-রেস্তোরা খাতের শ্রমিকদের আয় কমেছে ৮৩ শতাংশ। যেখানে লকডাউনের আগে মাসিক গড় আয় ছিল ১৩৫৭৮ টাকা সেটা লকডাউন সময়ে নেমে এসেছিল ২৫২৪ টাকায় এবং লকডাউন পরবর্তী সময়ে আয় দাঁড়িয়েছে ১২৫২৯ টাকা। অর্থাৎ লকডাউন পরবর্তী সময়েও ৮ শতাংশ আয়ের ঘাটতি থাকছে।

Manual5 Ad Code

লকডাউনে শ্রমিকদের পরিবারে আয় এবং ব্যয়ের ঘাটতি ছিল প্রায় ৭৭ শতাংশ, সর্বোচ্চ ৯৭ শতাংশ পরিবহন খাতের এবং সর্বনিম্ন ৪৬ শতাংশ রয়েছে খুচরা দোকান বিক্রেতা খাতের শ্রমিক পরিবারের। ২০ শতাংশ শ্রমিক পরিবার সম্পত্তি বিক্রয়, খাবার কমিয়ে দেওয়া এবং সন্তানদের কাজে পাঠানোর মাধ্যমে পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করেছেন। এছাড়া ৮০ শতাংশ শ্রমিক পরিবার ধার করে এবং সঞ্চয় কমিয়ে পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করছেন। লকাডাউন পরবর্তী সময়ে সঞ্চয় কমেছে ৬৪ শতাংশ এবং সঞ্চয়কারীর সংখ্যা কমেছে ৫০ শতাংশ।

এছাড়া লকডাউনে উল্লেখিত তিনটি খাতের শ্রমিকদের মাত্র ১ শতাংশেরও নিচে সরকারি বিভিন্ন সহায়তা পেয়েছেন। তারমধ্যে রয়েছে কম মূল্যে খাদ্য সহায়তা এবং নগদ টাকা। গবেষণা অনুযায়ী ৩৬ শতাংশ শ্রমিক কোভিডের টিকা নিয়েছেন এবং ৬৪ শতাংশ শ্রমিক এখনো টিকার আওতার বাহিরে রয়েছেন।

Manual8 Ad Code

এসময় বেসরকারিখাতে কর্মরত শ্রমিকদের একটি পূর্ণাঙ্গ ডেটাবেস প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা; একটি পরিপূর্ণ পরিকল্পনার আওতায় বেসরকারিখাতের শ্রমিকদেরকে ক্রমান্বয়ে পেশা উল্লেখসহ পরিচয়পত্র প্রদান; দুর্যোগকালীন সময়ে বেসরকারিখাতে কর্মরত শ্রমিকদেরকে সহায়তার জন্য একটি সঠিক ও কার্যকর প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ; অগ্রাধিকারভিত্তিতে, বেসরকারিখাতের শ্রমিকদেরকে করোনা টিকা প্রদান নিশ্চিত করা; বেসরকারিখাতের শ্রমিকদেরকে সামাজিকভাবে সুরক্ষার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে বীমা ব্যবস্থার প্রবর্তন করা সহ করোনা মহামারীর বাস্তবতায় বেসরকারিখাতে নিয়োজিত পরিবহন শ্রমিক, হোটেল-রেস্তোরা শ্রমিক, এবং দোকান শ্রমিকদেরকে সুরক্ষার জন্য ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

Manual7 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code