এই সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে: গণভবনে ১৪ দলের সভায় শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ১১:০০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০২৩

এই সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে: গণভবনে ১৪ দলের সভায় শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ১৯ জুলাই ২০২৩ : ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য একটি উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্যই আজীবন সংগ্রাম করেছেন। আজ অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি, ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরে এই সাড়ে চৌদ্দ বছরে বাংলাদেশটা বদলে গেছে। এটা নিশ্চয়ই আপনারা সেটা উপলব্ধি করেন।’
বুধবার (১৯ জুলাই ২০২৩) সন্ধ্যায় সরকারি বাসভবন গণভবনে কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে সভাপতির সূচনা বক্তব্যে ১৪ দলীয় জোট প্রধান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিলিটারি ক্যু এবং একটার পর একটা অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছে এবং বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রাটা সেটাও ব্যহত করেছিল। ২১ বছর পর আমরা সরকার গঠন পারি। আমি মনে করি, সরকার গঠন করার পরেই এই দেশের মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে, জনগণ একমাত্র আমাদের মাধ্যমে সরকারের সেবা পেতে পারে। সেটা আমরা নিশ্চিত করেছিলাম ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত।’

১৪ দলীয় জোটপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ সালে আবার একটা চক্রান্ত হয়, যার ফলে আমরা সরকারে আসতে পারিনি। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে আসার পরে বাংলাদেশকে সারাবিশ্বের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করে। তাদের এই দুঃশাসনে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের সৃষ্টি হয়, এর কারণেই এমার্জেন্সি ডিক্লেয়ার হয়। ২০০৮ এর নির্বাচনে আমরা জয়ী হই এবং ২০০৯ সরকার গঠন করার পর থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সরকারে আমরা আছি। আজ অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি যে, এই সাড়ে চৌদ্দ বছরে বাংলাদেশটা বদলে গেছে। এটা নিশ্চয়ই আপনারা সেটা উপলব্ধি করেন।’

দারিদ্র্যের হার কমানো থেকে শুরু করে ভূমিহীন-গৃহহীনদের ঘর তৈরি করা, বস্তিবাসীদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করাসহ মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে তার সরকারের নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনা অতিমারির কারণে প্রবৃদ্ধি কমিয়ে আসে সে বিষয়েও অবহিত করেন জোটপ্রধান।

তার সরকার মানুষকে অন্তত একটা সুন্দরভাবে জীবন দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অবকাঠামোগত উন্নয়ন তো আপনারা নিজেরাই দেখছেন। এটা দৃশ্যমান। আর সেই একদিনে একশো সেতু উদ্বোধন আর শত রাস্তা-সড়ক উদ্বোধন, এটা বোধহয় কখনও কেউ করতে পারে নাই। যাই হোক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সেটাও করতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে আমাদের দেশের মানুষের একটা নিয়ম আছে, একটা যখন পেয়ে যায় তখন তার কথাটা ভুলে যায়। মাঝখানে যখন হঠাৎ কয়লার দাম বেড়ে গেল, গ্যাসের দাম বেড়ে গেল, বেড়ে যাওয়ার থেকেও সবথেকে বড় ছিল পাওয়াই যাচ্ছিল না। তখন কিছুদিন আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন একটু কমে গেল এবং লোডশেডিং আমাদের দিতে হলো। লোডশেডিং দিয়ে একটা জিনিস আমি মনে করি যে ভালোই হলো, কি অবস্থায় ছিল বাংলাদেশ? সেটা বোধহয় মানুষ আবার একটু উপলব্ধি করতে পারলো।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালে পেয়েছিলাম ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। বিশেষ আইন করে সেই বিদ্যুৎ বাড়িয়েছিলাম চার হাজার তিনশ মেগাওয়াটে। আজকের এই সাড়ে চৌদ্দ বছরের মধ্যে আমরা কিন্তু ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছি।’

শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন না, আর্থসামাজিক উন্নয়নেও ব্যাপক কাজ আমরা হাতে নিয়ে সেটা সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছি। তবে সমস্যায় পড়ে গেছি আমরা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। যার ফলে স্যাংশন কাউন্টার স্যাংশন হচ্ছে বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

জোটনেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমুর সঞ্চালনায় বৈঠকে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি জননেতা কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ দফতর সম্পাদক সায়েম খান, জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী এমপি, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, বাসদের কমরেড রেজাউর রশিদ খানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ