ঘরের জিনিস দিয়েই আমার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু

প্রকাশিত: ৩:০০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২৩

ঘরের জিনিস দিয়েই আমার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু

নাছিমা ইয়াছমিন |

আমার উদ্যোগের নাম “Amon Bahar by Nasima.” বর্তমানে আমার উদ্যোগে রয়েছে মসলিন শাড়ীসহ দেশীয় শাড়ী, থ্রি পিস, হিজাব, কুর্তি, বেডশিট, লাল চাল, ঘানি ভাঙা সরিষার তেল, মধু, খেজুরের গুড়, নকশা করা কোরআন শরিফের রেহাল।

অামার সংসার, ২ বাচ্চাদের দেখাশোনা, স্কুল নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে সবার মতো আমিও ঘরবন্দী। সময় যাচ্ছিলো না। কিছু একটা করতে পারলে ভালো হতো মনে হলো। সময় কাটবে, সাথে দুঃশ্চিন্তা দূর হবে। সাথে যদি পরিবারের জন্য কিছু করা যায়, তাহলে তো আরও ভালো।
ততোদিনে বাসায় ইন্টারনেটের সংযোগ নেওয়া হলো।তাই আগের থেকে মোবাইলে সামাজিক মাধ্যমগুলো নিয়ে বেশি থাকা হয়, সে কারণে বিভিন্নভাবে নারীদের অগ্রগতি দেখতে পাই। তারা খুবই সিম্পল। ঘরোয়া জিনিস দিয়ে কাজ শুরু করেছেন। সেটা দেখে আমারও ভালো লাগে। ২০২০ সালের শেষের দিকে আমার উদ্যোগ শুরু।
তখন আমিও আমার ঘরের জিনিস দিয়েই প্রথমে শুরু করি। পরে ৫০০০৳ বিনিয়োগ করি। তারপর সব রকমের দেশীয় পোশাক ও বিভিন্ন পণ্য বাড়াতে থাকি কাস্টমারের চাহিদায়।

উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ধৈর্য্য, সৎ থাকা, কথার মূল্যায়ন করা। কাস্টমারকে সেরা পণ্যটা দেওয়ার চেষ্টা করা। কারণ পণ্য ভালো হলে, কাস্টমার বারবার ফিরে আসবে। উদ্যোগ সচল থাকবে।

আমার পরিবারের সবাই আমাকে সাহায্য করে।

অনেকের মত চাকরি করছি না। খুজিও নি। কারণ আমি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি। ভালোমানের পণ্য দিয়ে মানুষের সেবা করতে পারছি। পরিবার ও সন্তানদেরকে নিজের ইচ্ছে মতো সময় দিতে পারছি।

আমার কাস্টমাররা যখন বলে, আপনার কাছ থেকে পণ্য নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকি, তখন খুব ভালো লাগে।
আমার বহুবারের রিপিট কাস্টমার রয়েছেন, যারা আমার কাছ থেকে আমার সব পণ্য নিচ্ছেন। প্রয়োজন হলে ভালো রিভিউ দিচ্ছেন। প্রয়োজনে পরামর্শ নেই তাদের কাছে থেকে।, তাদের ভালো সেবা দেওয়ার জন্য সচেষ্ট থাকি সবসময়।

উই থেকে লাখোপতি হয়েছি, উদ্যোগ শুরু করার কিছুদিন পরেই। আমার সেল নিয়ে আমি সন্তুষ্ট।
সব ভালো কাজে প্রতিবন্ধকতা থাকবেই। তবে আমি প্রতিবন্ধকতার চেয়ে সাপোর্ট পেয়েছি বেশি। আমার পরিবার থেকে কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। আমার আত্মীয় স্বজনরাও আমায় সাপোর্ট করেছেন।

আমার প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় অর্জন ক্রেতার সন্তুষ্টি লাভ।

আমার মা আমার শাশুড়ীকে আমার উদ্যোগ থেকে গিফট দিতে পেরেছিলাম। তাদের সাথে কাটানো শেষ ঈদে এটা আমার অনেক বড়ো প্রাপ্তি।
তাছাড়া আমাদের উদ্যোগের পণ্য সরিষার তেল, মধু, আমাদের কাজ করা মসলিন শাড়ী কয়েকটি দেশে গিয়েছে কাস্টমারের হাত ধরে।

কিছুদিন হলো আমরা সিংগাপুরে আমাদের প্রবাসী ভাইদের ব্যান্ড দলের জন্য টি-শার্টের কাজ করেছি।
এভাবেই আস্তে আস্তে আমাদের উদ্যোগকে দেশে বিদেশে সবার সামনে তুলে ধরতে চাই ভালো পণ্য সেবার মাধ্যমে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ