সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২৪
বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ১৬ অক্টোবর ২০২৪ : বিগত সাড়ে ৫ বছরে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩২,৭৩৩টি। নিহত ৩৫,৩৮৪ জন এবং আহত ৫৩,১৯৬ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৫১০৩ (১৪.৪২%), শিশু ৪৭৮৫ (১৩.৫২%)। ১১,৬৬৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১১,৫৯৩ জন, যা মোট নিহতের ৩২.৭৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৫.৬৪ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৮৩৫৮ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২৩.৬২ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫২৬১ জন, অর্থাৎ ১৪.৮৬ শতাংশ। এতে ৮৭ হাজার ৮৮৪ কোটি ১২ লাখ টাকার মানব সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
এই সময়কালে ৫৮৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১০২১ জন নিহত, ৫৮২ জন আহত এবং ৩৬৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ১২২৮টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৪০৩ জন নিহত এবং ১২৬৯ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
দুর্ঘটনার যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র:
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়- মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১১,৫৯৩ জন (৩২.৭৬%), বাস যাত্রী ১৯১৫ জন (৫.৪১%), পণ্যবাহী যানবাহনের আরোহী (ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি ইত্যাদি) ২৫১১ জন (৭.০৯%), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ আরোহী ১৫৪৪ জন (৪.৩৬%), থ্রি-হুইলার যাত্রী ৬০৮০ জন (১৭.১৮%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-টমটম) ২৩৫৭ জন (৬.৬৬%) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান আরোহী ১০২৬ জন (২.৮৯%) নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন:
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১১,৯৪২টি (৩৬.৪৮%) জাতীয় মহাসড়কে, ১১,৬৯৮টি (৩৫.৭৩%) আঞ্চলিক সড়কে, ৫০৬৩টি (১৫.৪৬%) গ্রামীণ সড়কে, ৩৯৭৪টি (১২.১৪%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৫৬টি (০.১৭%) সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরন:
দুর্ঘটনাসমূহের ৬৮৪৩টি (২০.৯০%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২,১৬৭টি (৩৭.১৭%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৮৬৩১টি (২৬.৩৬%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৪৩৩৬টি (১৩.২৪%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৭৫৬টি (২.৩০%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহন:
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে পণ্যবাহী যানবাহন (ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ড্রামট্রাক-ট্রাক্টর-ট্রলি-তেলবাহী ট্যাংকার, বিদ্যুতের খুঁটিবাহী ট্রাক, সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক ইত্যাদি) ২৫.৪১ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১২.৭৩ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ ৪.৩৪ শতাংশ, মোটরবাইক ২১.৪৮ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-টেম্পু-লেগুনা ইত্যাদি) ১৮.৯২ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-টমটম) ৮.৮২ শতাংশ, বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ৫.৩১ শতাংশ এবং অজ্ঞাত যানবাহন ২.৯৬ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা:
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৫৭,৫৩৩টি। বাস ৭৩২৯, পণ্যবাহী যানবাহন (ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-ট্রাক্টর-ড্রাম ট্রাক-তেলবাহী ট্যাংকার-লং ভেহিকেল-বিদ্যুতের খুটিবাহী ট্রাক-কার্গো ট্রাক-সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক ইত্যাদি) ১৪,৬২০, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ ২,৪৯৯, মোটরসাইকেল ১২,৩৬১, থ্রি-হুইলার ১০,৮৯০ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-মিশুক-টেম্পু ইত্যাদি), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৫০৭৫ (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-টমটম ইত্যাদি), বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ৩০৫৬ এবং অজ্ঞাত গাড়ি ১৭০৩টি।
দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ:
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ১৮৫৩টি (৫.৬৬%), সকালে ৯৬১৪টি (২৯.৩৭%), দুপুরে ৫৯০০টি (১৮%), বিকালে ৬১৯২টি (১৮.৯১%), সন্ধ্যায় ২৯৬১টি (৯%) এবং রাতে ৬২১৩টি (১৮.৯৮%)।
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান:
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৪.৯৬%, প্রাণহানি ২৪.৮৯%, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৪.৫২%, প্রাণহানি ১৪.১৫%, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৮.৫৪%, প্রাণহানি ১৮.৫০%, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১১.৩২%, প্রাণহানি ১১.৩৪%, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৭.৭২%, প্রাণহানি ৮.০৪%, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৬.২৯%, প্রাণহানি ৬.৪৫%, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৮.৬৯%, প্রাণহানি ৮.৬৩% এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৭.৯২%, প্রাণহানি ৭.৯৬% ঘটেছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৮১৭১টি দুর্ঘটনায় ৮৮১০ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২০৬২টি দুর্ঘটনায় ২২৮৫ জন নিহত হয়েছেন।
রাজধানীর সড়ক দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ:
রাজধানীতে ১২২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০৬১ জন নিহত এবং ১৪৬৩ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পথচারী ৪৫১ জন (৪২.৫০%), মোটরসাইকেল আরোহী ৪১৩ জন (৩৮.৯২%) এবং বাস, ট্রাক, সিএনজি, রিকশা ইত্যাদি যানবাহনের চালক ও আরোহী ১৯৭ জন (১৮.৫৬%)।
রাজধানীর দুর্ঘটনার সময় পর্যবেক্ষণে দেখা যায়- ভোরে ১০.১৩%, সকালে ১৮.৯৬%, দুপুরে ১৪.০৬%, বিকালে ১২.৫১%, সন্ধ্যায় ৪.৪৯% এবং রাতে ৩৯.৮২% দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রাজধানীতে দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে বাস ১৮.৭৫%, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্যাংকার-ময়লাবাহী ট্রাক ইত্যাদি ৩১.২৫%, মোটরসাইকেল ২৫%, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-জীপ ৬.২৫%, থ্রি-হুইলার (অটোরিকশা-অটোভ্যান-সিএনজি-লেগুনা-মিশুক) ১১.১১% এবং বাইসাইকেল- রিকশা-রিকশাভ্যান ৭.৬৩%।
দুর্ঘটনাসমূহ রাতে এবং সকালে বেশি ঘটেছে। বাইপাস রোড না থাকার কারণে রাত ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত রাজধানীতে মালবাহী ভারী যানবাহন বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে। ফলে রাস্তা পারাপারে পথচারীরা বেশি নিহত হচ্ছেন। এছাড়া দীর্ঘ সময় যানজটের কারণে যানবাহন চালকদের আচরণে অসহিষ্ণুতা ও ধৈর্য্যহানি ঘটছে, যা সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে কাজ করছে।
রাজধানীতে যানবাহনের তুলনায় অপ্রতুল সড়ক, একই সড়কে যান্ত্রিক-অযান্ত্রিক, স্বল্প ও দ্রুত গতির যানবাহনের চলাচল, ফুটপাত হকারের দখলে থাকা, ফুটওভার ব্রিজ যথাস্থানে নির্মাণ না হওয়া ও ব্যবহার উপযোগী না থাকা এবং সড়ক ব্যবহারকারীদের মধ্যে অসচেতনতার কারণে অতিমাত্রায় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটছে।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ:
সাড়ে ৫ বছরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে ১১,৬৬৯টি, নিহত হয়েছেন ১১,৫৯৩ জন এবং আহত ১০১১৪ জন। নিহতদের মধ্যে ৮৭২৩ জন (৭৫.২৪%) ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী।
অন্য যানবাহনের সাথে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে (২৫৭৬টি) ২২.০৭%, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে (৪১৩৮টি) ৩৫.৪৬%, ভারী যানবাহনের ধাক্কায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছে (৪৭১৪টি) ৪০.৩৯% এবং অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে (২৪১টি) ২.০৬%।
৪১.২১% দুর্ঘটনার জন্য মোটরসাইকেল চালক এককভাবে দায়ী ছিল। দুর্ঘটনার জন্য বাসের চালক দায়ী ১০.২৬%, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি চালক দায়ী ৩৫.৩৪%, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস চালক দায়ী ২.২৮%, থ্রি-হুইলার ৩.৯৫%, বাইসাইকেল, প্যাডেল রিকশা, রিকশাভ্যান চালক দায়ী ০.৬৬%, পথচারী দায়ী ৪.৯১% এবং অন্যান্য কারণ দায়ী ১.২৪%।
৩৫২৪টি (৩০.১৯%) মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে, ৪৯৪৭টি (৪২.৩৯%) ঘটেছে আঞ্চলিক সড়কে, ১৪৫৬টি (১২.৪৭%) ঘটেছে গ্রামীণ সড়কে এবং ১৭৪২টি (১৪.৯২%) দুর্ঘটনা ঘটেছে শহরের সড়কে।
দেশে মোট মোটরযানের ৭১ শতাংশ মোটরসাইকেল। মোটরসাইকেল চালকদের বিরাট অংশ কিশোর ও যুবক। এদের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা এবং না মানার প্রবনতা প্রবল। কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হচ্ছে।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার একটি ব্যাপক অংশ ঘটছে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ ও বাসের ধাক্কা, চাপা এবং মুখোমুখি সংঘর্ষে। এসব দ্রুত গতির যানবাহন চালকদের অধিকাংশই অসুস্থ ও অদক্ষ। এদের বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানোর কারণে যারা সতর্কভাবে মোটরসাইকেল চালান তারাও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
মোটরসাইকেল ৪ চাকার যানবাহনের তুলনায় ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু দেশে গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত ও সহজলভ্য না হওয়া এবং যানজটের কারণে মানুষ মোটরসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহিত হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা বাড়ছে।
পথচারী নিহতের দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ:
সাড়ে ৫ বছরে ৮৬৩১টি দুর্ঘটনায় ৮৩৫৮ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২৩.৬২ শতাংশ।
৪৭৬৫টি (৫৭%) দুর্ঘটনা ঘটেছে যানবাহনের বেপরোয়া গতির কারণে এবং ৩৫৯৩টি (৪৩%) দুর্ঘটনা ঘটেছে পথচারীদের অসতর্কতার কারণে।
পথচারী নিহত হয়েছে মহাসড়কে ২২১৩ জন (২৬.৪৭%) আঞ্চলিক সড়কে ২৯৩৭ জন (৩৫.১৩%), গ্রামীণ সড়কে ১৬৭৪ জন (২০%), শহরের সড়কে ১৪৮৫ জন (১৭.৭৬%) এবং অন্যান্য স্থানে ৪৯ জন (০.৫৮%)।
দুর্ঘটনায় পথচারী নিহতের ঘটনা ভোরে ৩৯২টি (৪.৬৯%), সকালে ২৭৬৮টি (৩৩.১১%), দুপুরে ১৩৭৫টি (১৬.৪৫%), বিকালে ১৮৯১টি (২২.৬২%), সন্ধ্যায় ৭৯০টি (৯.৪৫%) এবং রাতে ১১৪২টি (১৩.৬৬%) ঘটেছে।
যানবাহনের অতিরিক্ত গতি, সড়কের সাইন-মার্কিং-জেব্রা ক্রসিং সম্পর্কে চালক এবং পথচারীদের অজ্ঞতা ও না মানার প্রবণতা, যথাস্থানে সঠিকভাবে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ না করা এবং ব্যবহার উপযোগী না থাকা, রাস্তায় হাঁটা ও পারাপারের সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা, হেডফোনে গান শোনা, চ্যাটিং করা এবং সড়ক ঘেঁষে বসতবাড়ি নির্মাণ ও সড়কের উপরে হাট-বাজার গড়ে উঠা ইত্যাদি কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে।
শিক্ষার্থী নিহতের দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ:
সাড়ে ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬২৮ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। যা মোট নিহতের ১৩.০৭ শতাংশ।
১১৪৮ জন (২৪.৮০%) শিক্ষার্থী স্কুলে যাওয়া-আসার পথে যানবাহনের চাপা/ধাক্কায় নিহত হয়েছে।
৭৬১ জন (১৬.৪৪%) শিক্ষার্থী বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী হিসেবে নিহত হয়েছে।
২৭১৯ জন (৫৮.৭৫%) শিক্ষার্থী মোটরবাইক আরোহী হিসেবে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহতের চিত্র বিশ্লেষণ:
সাড়ে ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৮৫ শিশু নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ১৩.৫২ শতাংশ। শিশু মৃত্যুর দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়-
দুর্ঘটনায় বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী, চালক ও হেলপার হিসেবে নিহত হয়েছে ১৩৭১ শিশু (২৮.৬৫%)
পথচারী হিসেবে রাস্তা পারাপারে ও রাস্তা ধরে হাঁটার সময় যানবাহনের চাপায়/ধাক্কায় নিহত হয়েছে ১৭৯৮ শিশু (৩৭.৫৭%)
মোটরসাইকেল আরোহী হিসেবে নিহত হয়েছে ১৬১৬ শিশু (৩৩.৭৭%)।
শিশু পথচারী নিহতের যানবাহনভিত্তিক চিত্র:
১. পণ্যবাহী যানবাহনের (বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ, ড্রাম ট্রাক, ট্রাক্টর, ট্রলি ইত্যাদি) চাপায়/ধাক্কায় নিহত হয়েছে ৭১৩ শিশু (৩৯.৬৫%)
২.প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্সের চাপায়/ধাক্কায় নিহত হয়েছে ১৬৪ শিশু (৯.১২%)
৩. থ্রি-হুইলারের (সিএনজি, অটোরিকশা, ইজিবাইক ইত্যাদি) চাপায়/ধাক্কায় নিহত হয়েছে ৬১২ শিশু (৩৪%)
৪. বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কাায় নিহত হয়েছে ৮৮ শিশু (৪.৮৯%)
৫. স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের (নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-টমটম ইত্যাদি) চাপায়/ধাক্কায় নিহত হয়েছে ২২১ শিশু (১২.২৯%)।
শিশু নিহত হওয়া সড়কের ধরন:
দুর্ঘটনায় শিশু নিহত হওয়া সড়কের ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, মহাসড়কে ১১৬১ শিশু (২৪.২৬%), আঞ্চলিক সড়কে ১২৫৪ শিশু (২৬.২০%), গ্রামীণ সড়কে ১৬২৩ শিশু (৩৩.৯১%), শহরের সড়কে ৭১৯ শিশু (১৫%) অন্যান্য স্থানে ২৮ শিশু ০.৫৮% নিহত হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিশুদের বয়স ভিত্তিক বিশ্লেষণ:
১ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু নিহত হয়েছে ৯২৪ জন (১৯.৩১%), ৬ বছর থেকে ১২ বছর বয়সী শিশু নিহত হয়েছে ২১৩৮টি (৪৪.৬৮%) এবং ১৩ বছর থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশু নিহত হয়েছে ১৭২৩টি (৩৬%)।
সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু মৃত্যুর হার বৃদ্ধির কারণসমূহ:
১. দেশের সড়ক ও সড়ক পরিবহন শিশুবান্ধব না হওয়া;
২. সড়ক ব্যবহার সম্পর্কে শিশুদের মধ্যে সচেতনতার অভাব;
৩. পরিবার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সড়ক ব্যবহার সম্পর্কে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ না দেয়া;
৪. অদক্ষ ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালক কর্তৃক যানবাহন চালানো;
৫. দুর্ঘটনায় আহত শিশুদের উপযুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থার সংকট;
৬. আহত শিশুদের চিকিৎসায় পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতা।
দুর্ঘটনায় শিশু নিহতের ঘটনা পর্যালোচনা:
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসার সময়, বসত বাড়ির আশে-পাশের সড়কে খেলাধুলার সময় নিহতের ঘটনা বেশি ঘটেছে। আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়কগুলো বসতবাড়ি ঘেষা। ঘরের দরজা খুললেই সড়ক- এমন অবস্থা! এসব সড়কে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি থাকে না। ফলে যানবাহনসমূহ বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। আবার শিশুরাও সড়ক ব্যবহারের কোনো নিয়ম-নীতি জানে না। এই অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে নীরবে আমাদের শিশুরা নিহত হচ্ছে, পঙ্গু হচ্ছে। এটা জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। কারণ প্রতিটি শিশুই অমিত সম্ভাবনাময়।
সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতি:
২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সাড়ে ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় যে পরিমাণ মানব সম্পদের ক্ষতি হয়েছে তার আর্থিক মূল্য ৮৭ হাজার ৮৮৪ কোটি ১২ লাখ ৪১ হাজার টাকার মতো। যেহেতু সড়ক দুর্ঘটনার অনেক তথ্য অপ্রকাশিত থাকে, সেজন্য এই হিসাবের সাথে আরও ৩০% যোগ করতে হবে। iRAP (International Road Assessment Program) এর Method অনুযায়ী হিসাবটি করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় যে পরিমাণ যানবাহন বা প্রপার্টি ড্যামেজ হয়েছে তার তথ্য না পাওয়ার কারণে প্রপার্টি ড্যামেজের আর্থিক পরিমাপ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, গণমাধ্যমে যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, প্রকৃত ঘটনা তার চেয়ে অনেক বেশি। এই বিবেচনায় এ বছর সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ আমাদের জিডিপি’র ১.৫ শতাংশের বেশি হতে পারে।
দুর্ঘটনা পর্যালোচনা ও মন্তব্য:
দেশে বর্তমানে জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়কের দৈর্ঘ ২২ হাজার ৪৭৬.২৮ কিলোমিটার। গ্রামীণ সড়ক প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার কিলোমিটার। দেশব্যাপী এসব সড়কে নানা প্রকার যানবাহন যেমন বেড়েছে, তেমনি যানবাহনের গতিও বেড়েছে। কিন্তু গতি নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিংয়ের জন্য যথেষ্ট মাত্রায় প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে না। ফলে গতির প্রতিযোগিতা হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা ঘটছে। ৮৫ শতাংশ দুর্ঘটনার প্রধান কারণ যানবাহনের অতিরিক্ত গতি। যানবাহনের গতি ঘন্টায় ৬০ কিলোমিটারের উপরে প্রতি ৫ কিলোমিটার বৃদ্ধিতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি ২ থেকে ৪ গুণ বৃদ্ধি পায়।
ইদানিং প্রায়শ মহাসড়কে বিকল হওয়া পণ্যবাহী যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকছে। এই অবস্থায় বেপরোয়া গতির অপর যানবাহন দাঁড়ানো যানবাহনের পেছনে ধাক্কা দিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। যানবাহনের চাকা ফেটে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বাড়ছে। চাকা ফাটার সাথে অতিরিক্ত গতির সম্পর্ক রয়েছে। সড়কে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নির্মিত উঁচু স্পীড ব্রেকারের কারণে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বাড়ছে।
সারা দেশের গ্রামে-গঞ্জে সড়ক অবকাঠামো গড়ে উঠলেও আধুনিক নিরাপদ যানবাহন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। ফলে মানুষের প্রয়োজনের তাগিদেই ইজিবাইক, অটোরিকশা, নসিমন, ভটভটি আলমসাধুর মতো অনিরাপদ যানবাহনের প্রচলন ঘটেছে। তাই যান্ত্রিক উন্নতি ঘটিয়ে এসব যানবাহন নিবন্ধনের আওতায় এনে চালকদের স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ দিতে হবে। ছোট ও স্বল্পগতির যানবাহনের জন্য নিরাপদ রোড ডিজাইন করতে হবে। এসব যানবাহনের উপর আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে।
নিয়োগপত্র, বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকার কারণে যাত্রীবাহী বাস এবং পণ্যবাহী যানবাহনের অধিকাংশ চালক শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। তাদের মধ্যে জীবনবোধ ঠিকমতো কাজ করে না। পণ্যবাহী যানবাহন চালকদের মধ্যে এই প্রবণতা প্রকট। তারা সবসময় অস্বাভাবিক আচরণ করেন এবং বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালান। ফলে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হন। এজন্য পরিবহন শ্রমিকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কার করে প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ:
১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ২. বেপরোয়া গতি; ৩. চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; ৪. চালকদের বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; ৬. তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; ৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; ৮. সড়ক এবং সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব না হওয়া; ৯. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; ১০. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি; ১১. গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
সুপারিশসমূহ:
১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; ২. চালকদের বেতন-কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; ৩. বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; ৪. পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; ৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করতে হবে; ৬. পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; ৭. সড়ক এবং সড়ক পরিবহন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব করতে হবে; ৮. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; ৯. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে; ১০. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে; ১১. “সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮” বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে; ১২. সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে জীবনমুখি সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে।
প্রতিবেদকের প্রতিক্রিয়া ও সুপারিশ :
এ বিষয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “দুর্ঘটনার এই চিত্র বাংলাদেশের সড়কে নিরাপত্তাহীনতা ও সীমাহীন অব্যবস্থার চিত্রই প্রকাশ পেয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাড়ি চালনার প্রাথমিক শিক্ষা কোর্স (ব্যবহারিক সহ) চালু করাসহ দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করা, চালকের বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করা,পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করা, সকল সড়ক-মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করা, যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির ব্যবহার করা, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের উপর চাপ কমানো, গণপরিবহন উন্নত, সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে মোটরসাইকেল ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা, সড়ক, নৌ ও রেলপথে কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করাসহ
সড়ক পরিবহন আইন ও বিধিমালা যথাযথ বাস্তবায়নে নতুন নতুন কৌশল ও ডিজিটালাইজড উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে হবে। সর্বোপরি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক ও ডিজিটাইজড করতে হবে। এ বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে প্রায় দুই বছর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উন্নয়ন প্রজেক্ট পাঠানো হয়েছে, তা বাস্তবায়ন জরুরি।
যাত্রী ও পথচারীদের ব্যক্তি নিরাপত্তা ও বিধি-বিধান প্রতিপালনে সচেতন হতে হবে। নাগরিকদের মধ্যে আইন ও শৃঙ্খলা মানার সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে হবে। সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা, শ্রমিক নেতা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের যথাযথ আইন প্রয়োগে সহায়তা প্রদান করতে হবে।
প্রশাসন, পুলিশ, বিআরটিএ, সিটি করপোরেশন, সড়ক ও জনপথ, মালিক, চালক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব। সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জাতীয়ভাবে সেল তৈরি করে এবং প্রতি বিভাগ ও জেলায় একইভাবে সেল গঠন করে নিয়মিত মনিটরিং ও পরামর্শ প্রদানের ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং এ সেলকে সর্বদাই সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এভাবেই সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব।”
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D