সিলেট ১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৩৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০২৫
ত্রিশ পার করা মানে শুধু বয়স নয়—এটা এক অনুচ্চারিত পালাবদলের শুরু।
একসময় যে মেয়ে ছিল প্রাণচঞ্চল, টুকটুকে স্বপ্নে ভরা চোখে আকাশ মাপত—সে আজ অনেক বেশি নীরব।
নতুন কিছু চায় না, শুধু নিজের ভেতরের আলোর সঙ্গে বোঝাপড়াটা মিটিয়ে নিতে চায়।
এই বয়সে নারীরা আর খালি হাসেন না—তারা ঠোঁটের কোণে একধরনের বিষণ্ন শান্তি রাখেন।
তারা আর প্রশ্ন করে না “আমাকে নিয়ে কার কি ভাবনা?”
বরং জানতে চান—“আমি নিজেকে শেষ কবে বুঝেছিলাম?”
সময়ের হাতে তৈরি হয় এক অনুচ্চারিত সম্পর্ক—নিঃশব্দতা আর সহনশীলতার সঙ্গে।
তারা শিখে ফেলেন— সব অনুভূতির ব্যাখ্যা হয় না, সব কষ্টকে প্রকাশ করতে নেই, সব প্রশ্নের উত্তর দিলে জীবনের শান্তি হারায়।
তাদের চোখে তখন একটা চাপা গর্ব থাকে— একা থাকা মানেই পরাজয় নয়,
নিজেকে ভালোবাসা মানেই স্বার্থপরতা নয়।
সমাজ তখন কাঁধে হাত রাখে না, বরং গলায় প্রশ্ন ছুড়ে মারে— “এখনো একা আছো?”
“বাচ্চা হবে না?”
“এই বয়সে এখনও সিদ্ধান্ত নাওনি?”
এই প্রশ্নগুলো কাঁটার মতো না,
বরং প্রতিদিন জমে থাকা ধূলোর মতো—
যেগুলো তারা ঝেড়ে ফেলতে চায়,
কিন্তু কিছুটা থেকে যায় বুকের ভেতর।
তারা উত্তর দেন না, চুপ করে থাকেন।
কারণ তারা জানেন—প্রত্যেকটা উত্তর একটা নতুন লড়াই।
এ বয়সে নারীরা আর কাউকে খুশি করার জন্য নিজেদের ভেঙে ফেলেন না।
তারা চান—একটা সকাল নিজের মতো করে কাটুক।
একটা বিকেল শুধু এক কাপ চা, একটা বই, আর নিঃশব্দতায় ভরে উঠুক।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তারা জিজ্ঞেস করেন— “আমি কেবল একজন স্ত্রী?
একজন মা?
নাকি এমন একজন, যে নিজের মতো করে কখনো বাঁচতেই পারিনি?”
তারা চিৎকার করে কিছু বলেন না।
তবে চোখের গভীরে জমে থাকা অভিজ্ঞতা—তা বলে দেয়,
এই নারীরা এখন আর নরম কাঁচ নয়—তারা টিকে থাকা আগুন।
তারা খুঁজে ফেরেন না একজন ‘সম্পূর্ণ’ পুরুষ,
তারা খোঁজেন একজন ‘শ্রোতা’—
যে বলবে,
“আজ তোমার চোখে একটু ঘুমহীনতা আছে, আমি পাশে আছি।”
ভালোবাসার ভাষাও বদলে যায়—
“ভালো থেকো” নয়—
“আজ একটু বিশ্রাম নাও,”
“চুপ করে থাকলেও আমি বুঝতে পারি—তুমি আজ ভীষণ একা।”
ত্রিশোত্তর নারীদের ভালোবাসা হয় না উচ্চকিত,
হয় সংযত,
হয় নরম আলোর মতো—যা চোখ ধাঁধিয়ে দেয় না, কিন্তু অন্তর জুড়িয়ে দেয়।
তারা সম্পর্ক খোঁজেন না যেখানে অভিনয় করতে হয়,
তারা খোঁজেন এমন আশ্রয়—
যেখানে চুপ থাকলেও বোঝা যায়, এই মানুষটা আমাকে জানে।
এ বয়সে নারীরা আর প্রমাণ দিতে চান না—
না সমাজকে, না পরিবারকে, না কারো চোখের সামনে দাঁড়িয়ে।
তারা শুধু চান— একজন থাকুক পাশে,
যে বুঝবে, না জিজ্ঞেস করেই।
যে ভালোবাসবে, প্রাপ্তির শর্ত ছাড়া।
আর যার সঙ্গে নীরব থাকাও একধরনের গভীর কথা হয়ে দাঁড়ায়।
—
এই বয়সটা এক নীরব বিপ্লব।
চোখে দেখা যায় না, কিন্তু ভেতরে প্রতিটি স্তরে ঢেউ তোলে—
নিজেকে জানার,
নিজেকে গ্রহণ করার,
নিজেকে ভালোবাসার এক সাহসী অভিযাত্রা।
#শুভ_অপরাহ্ন
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি