বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে ওয়ার্কার্স পার্টির শোক প্রকাশ

প্রকাশিত: ৪:১৬ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৪, ২০২০

বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে ওয়ার্কার্স পার্টির শোক প্রকাশ

ঢাকা, ১৪ জুন ২০২০: বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মরদেহ অাজ সকাল সাড়ে ১০টায় বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

মোহাম্মদ নাসিম গতকাল শনিবার বেলা ১১ টা ১০ মিনিটে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নলিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক সাংবাদিকদের জনান, অাজ সকাল সাড়ে ১০ টায় বনানী কবরস্থান মসজিদে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয় অাজকের জানাজায় দলীয়- নেতাকর্মীদের ব্যাপকভাবে উপস্থিত না হওয়ার অনুরোধ রক্ষা করায় ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনারা সবাই যে যার অবস্থান থেকে তার জন্য দোয়া করবেন। তিনি যেহেতু দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করেছে, তাই দেশের এই পরিস্থিতিতে তার মরদেহ কোথাও নেয়া হবে না। অাজ সাড়ে ১০ টায় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মোহাম্মদ নাসিমের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলেসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী, আত্মীয়-স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ডা. এস এ মালেক ও আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ মন্ত্রী সভার সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন।

আওয়ামী লীগের পেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির শোক প্রকাশ

আওয়ামী লীগের পেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। শনিবার (১৩ জুন) দুপুরে পার্টির পক্ষ থেকে দেয়া এক বার্তায় তারা এ শোক জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু করোনা মহামারির এই প্রয়োজনের সময় চরম একটি আঘাত হিসেবে এসেছে।

তারা বলেন, চার জাতীয় নেতার অন্যতম ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর সুযোগ্য পুত্র মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নাসিম তার পিতার অনুসরণে এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশাল ভূমিকা রেখেছেন। এই করোনার সময় তার নেতৃত্বে ১৪ দল মানুষের পাশে থেকে তাদের সহায়তার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। তার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও যথাযথ ভূমিকা রেখেছিল। তার অবর্তমানে দেশ সেই ভূমিকা আর পাবে না।

নেতৃবৃন্দ তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। একই সাথে আশা প্রকাশ করেন যে, জাতি নাসিমকে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণে রাখবে।

আওয়ামী লীগের পেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে তরীকত ফেডারেশন ও দরবারে রহমান পুরীর শোক প্রকাশ

আওয়ামী লীগের পেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় প্রচার যুগ্ম সম্পাদক, অাহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রহমান পুর দরবার শরীফের গদ্দীনশীন শাহজাদা সৈয়দ রায়হান শাহ রহমানপুরী।

১ জুন রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। পরে রাতে তার করোনা ভাইরাস পজেটিভ আসে।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত অবস্থায় মোহাম্মদ নাসিম ৫ জুন ভোওে স্ট্রোক করেন। পরে জরুরিভাবে তার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর চিকিৎসকরা তাকে প্রথমে ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন। পরে পর্যবেক্ষণের সময় আরও ৭২ ঘন্টা বৃদ্ধি করা হয়। এরপরে অবশ্য তার করোনা টেস্ট দুইবারই নেগেটিভ আসে।
৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তার চিকিৎসায় একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়।
১৯৪৮ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায় এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ নাসিম। তার পিতা পিতা শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। যিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আ¤্রকাননে গঠিত বাংলাদেশ সরকারে অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রীসভায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জাতীয় চার নেতার অন্যতম এম মনসুর আলী ৩ নভেম্বর জেলখানায়য় ঘাতকদের হাতে নিহত হন।
মোহাম্মদ নাসিমের মায়ের নাম মোসাম্মৎ আমিনা খাতুন, যিনি আমেনা মনসুর হিসেবেই পরিচিত। তিনি একজন গৃহিণী ছিলেন।
পারিবারিক জীবনে মোহাম্মদ নাসিম বিবাহিত এবং তিন সন্তানের জনক। তার স্ত্রীর নাম লায়লা আরজুমান্দ।
মোহাম্মদ নাসিম জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালেও সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নাসিম। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে তিনি সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এছাড়াও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এর আগে ১৯৯৬ সালের সরকারে তিনি স্বরাষ্ট্র, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি ১৪ দলীয় মহাজোটের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মোহাম্মদ নাসিম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি সমাজকল্যাণমূলক বিভিন্ন কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ঢাকাসহ নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ অামিরুজ্জামান।
১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক তাপস কুমার ঘোষ, শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি দেওয়ান মাসুকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো: জালাল উদ্দিন এবং শ্রীমঙ্গল পৌর শাখার সভাপতি শেখ জুয়েল রানা ও সাধারণ সম্পাদক মো: রোহেল অাহমদ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ