মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ‘প্রবাসীর কথা’ গ্রন্থের লেখক নূরুল ইসলামের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: ১২:১০ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১১, ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ‘প্রবাসীর কথা’ গ্রন্থের লেখক নূরুল ইসলামের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সৈয়দ নাজমা শবাব | লন্ডন (যুক্তরাজ্য), ১১ জানুয়ারি ২০২৫ : মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও ‘প্রবাসীর কথা’ গ্রন্থের লেখক নূরুল ইসলামের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

তিনি ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় লন্ডনের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তিনি স্ত্রী, একছেলে, এক মেয়ে এবং নাতি-নাতনি, আত্মীয় স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

দুঃসাহসী সাধক ও গবেষক নুরুল ইসলাম ‘প্রবাসীর কথা’ নামে সহস্রাধিক পৃষ্ঠার গবেষণা গ্রন্থ রচনা করে জাতীয় দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘প্রবাসীর কথা’র লেখক হিসেবে ২০১২ সালে তিনি বাংলা একাডেমি’র ফেলোশিপ লাভ করেন। এই গ্রন্থে প্রবাসের সুখ-দুঃখ, যাপিত জীবনের সুবিধা-অসুবিধা এবং দেশবাসীর কাছে চাওয়া-পাওয়ার কথা ফুটে উঠেছে। বিশ্বজুড়ে বাঙালি জাতির সংগ্রাম গাঁথা জীবন কথা খুঁজে পেতে হলে এটি প্রথম এবং নির্ভরযোগ্য দলিল।

প্রবাসী অন্তপ্রাণ নুরুল ইসলাম ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডন যান। এখানে এসেই আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন। নুরুল ইসলাম এই আন্দোলনে অংশ নিয়ে অল্পদিনে ছাত্র ও সুধী মহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

১৯৬৩ সালে ‘ন্যাশনাল ফেডারেশন অব পাকিস্তান অ্যাসোসিয়েশন ইন গ্রেট ব্রিটেন’ গঠনের অন্যতম প্রধান ছিলেন। পরের বছর ১৯৬৪ সালে ‘ইস্ট পাকিন্তান হাউস’ প্রতিষ্ঠায়ও তিনি অন্যতম সংগঠক ছিলেন। আন্তর্জাতিক প্রচার তৎপরতার কৌশল নির্ধারণের জন্য বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের সাথে মিলিত হবার জন্য ১৯৬৬ সালে তিনি দেশে ফিরেন। পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীনতার নামে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে পাকিস্তান সরকার তাঁকে গ্রেফতার ও পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে। ফলে যথাসময়ে লন্ডনে ফিরে আসতে পারেননি। এতে লেখাপড়ার ব্যত্যয় ঘটে।
লেখক ও গবেষক নুরুল ইসলাম তখন দেশ থেকে ৬-দফা আন্দোলনের পক্ষে প্রচার তৎপরতায় সক্রিয় হন। তিনি ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং ভারতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে ৪ ও ৫ নং সেক্টরের প্রতিনিধি দেওয়ান ফরিদ গাজীর (প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা সম্পন্ন) একান্ত সচিব ছিলেন।

১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বর্হিবিশ্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন আদায়ে তিনি সচেষ্ট হন। বাংলাদেশ সরকারের ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি আব্দুস সামাদ আজাদের সফরসঙ্গী হিসেবে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সফর করেন। স্বাধীনতার পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রাপ্তির জন্য তার ইউরোপীয় বন্ধুদের মাধ্যমে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছেন।
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রবাসীদের কল্যাণার্থে প্রবাসী বাঙালি কল্যাণ বোর্ড’ গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন হিসেবে প্রবাসী অন্তপ্রাণ নূরুল ইসলাম এই বোর্ডের সচিব হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত নিষ্ঠার সাথে সকল কাজ সম্পাদন করেন।

ওয়ার্কার্স পার্টির শ্রদ্ধা

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সমাজসেবী, লেখক, সাংবাদিক ও বহুল সমাদৃত গ্রন্থ ‘প্রবাসীর কথা’র লেখক নুরুল ইসলামের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কমরেড নূর আহমদ বকুল।

সৈয়দ আমিরুজ্জামানের শ্রদ্ধা

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সমাজসেবী, লেখক, সাংবাদিক ও বহুল সমাদৃত গ্রন্থ ‘প্রবাসীর কথা’র লেখক নুরুল ইসলামের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আমিরুজ্জামান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ