আগামী অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিতে বামপন্থীরা প্রস্তুত হোন: খালেকুজ্জামান

প্রকাশিত: ৮:০৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৮, ২০২৫

আগামী অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিতে বামপন্থীরা প্রস্তুত হোন: খালেকুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ : আগামী অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিতে বামপন্থীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) উপদেষ্টা কমরেড খালেকুজ্জামান।

বাসদের সমর্থক শুভানুধ্যায়ীদের ২১তম বার্ষিক মিলনমেলায় এসব কথা বলেন তিনি।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল ২০২৫) সকালে রাজধানীর বিএমএ মিলনায়তনে দিনব্যাপী আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ।

সারাদেশের ৬ শতাধিক সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, চিকিৎসক, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাসদের কার্যক্রম, রাজনৈতিক সংগ্রাম, পরামর্শ, সমালোচনা তুলে ধরেন।

মিলন মেলায় বক্তব্য দেন বাসদের উপদেষ্টা কমরেড খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক কমরেড আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবিদুর রেজা, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী জেড. আই. খান পান্না, গণতন্ত্রী পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ট্রেজারার খায়রুজ্জামান কামাল, সাবেক অতিরিক্ত সচিব জনাব রশীদুল হাসান, শেখ আহাদ আহম্মেদ, কৃষিবিদ গিয়াস উদ্দিন পাটওয়ারী, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন।

বাসদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কমরেড নিখিল দাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব সুজা উদ্দিন, বিশিষ্ট সাংবাদিক কুদরত ই খুদা, ডাকসুর সাবেক জিএস ডা. মুশতাক হোসেন, ড. বীনা সিকদার, নারী নেত্রী কমরেড বহ্নি শিখা জামালী, আকবর খান, কৃষিবিদ নূরু মিয়া, কৃষিবিদ ড. শামসুল হোসেন, কৃষিবিদ হারুন অর রশীদ আহমেদ বাবু, কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী, কৃষিবিদ মজিবুল হক চুন্নু, অধ্যাপক ডা. আবুল কাশেম, ব্যাংকার নূরুল আরশাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মোল্লা, স্থপতি সুব্রত সরকার, চারু শিল্পী পিন্টু বিল্লাহ প্রমুখ।

মিলনমেলায় কবিতা আবৃতি করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি বিপ্লবী কবি মোহন রায়হান, কামরুজ্জামান ভূইয়া, শামীম পাটোওয়ারী, তারিকুজ্জামান টরিক ও টিপু চৌধুরী। সঙ্গীত পরিবেশন করেন চারণ শিল্পী শাহিনা আক্তার, গোলাম মোস্তফা। নারায়ণগঞ্জ জেলা চারণের উদ্বোধনী সঙ্গীতের মাধ্যমে মিলন মেলার অনুষ্ঠান শুরু হয়। নৃত্য পরিবেশন করেন অন্বেষা মজুমদার ও সৃজা সাহা।

অনুষ্ঠানে কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে যে আশাবাদ গড়ে উঠেছিল তা ক্রমাগত ফিকে হয়ে যাচ্ছে। কারণ বৈষম্যের বিলোপ সাধনের স্লোগানে আকৃষ্ট হয়ে মানুষ গণ-অভ্যুত্থানে সামিল হলেও একই শ্রেণির এক অংশকে হটিয়ে অপর অংশ শাসন ক্ষমতায় যাওয়ায় গত ৮ মাসেও জীবনযাত্রার ব্যয় কমেনি, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি থামেনি, গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য যে নির্বাচন তা নিয়েও ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছে। এর সঙ্গে ভৌগোলিক কারণে যুক্ত হয়েছে নানা সাম্রাজ্যবাদী দেশের ষড়যন্ত্র, টানাটানি। অনির্বাচিত দুর্বল সরকার সাম্রাজ্যবাদী দেশসমূহের চক্রান্ত মোকাবেলা করতে অক্ষম শুধু নয়, অনেক ক্ষেত্রে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে তাদের ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করছে বলে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা বাস্তবায়নে বিপ্লবী দলের নেতৃত্বে বিপ্লবী গণ-অভ্যুত্থান না হওয়া পর্যন্ত শাসক বদল হলেও ব্যবস্থা বদল হবে না ফলে নির্দিষ্ট সময় পরপর গণ-অভ্যুত্থানের ঢেউ আসতেই থাকবে।

সভাপতির বক্তব্যে কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থানকে ঠেকাতে হলে শোষণমূলক পুঁজিবাদী লুণ্ঠনের পাহারাদার বুর্জোয়া জাতীয়তাবাদী ধারা ও বুর্জোয়া মৌলবাদী ধারার বিপরীতে বাম ও উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক দল, সংগঠন, ব্যক্তির সমন্বয়ে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা সময়ের দাবি।’