সিলেট ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:১৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০২৫
কৃষি বিষয়ক প্রতিবেদক | সিলেট, ২০ এপ্রিল ২০২৫ : সিলেট অঞ্চলে এবার বোরো ধানের আশানুরূপ ফলন হলেও ভারি বৃষ্টি এবং বন্যার শঙ্কায় সেই ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা। এই জন্য দ্রুত ধান কাটা চলছে।
তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, এরই মধ্যে হাওরের ৩৩ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে হাওরের শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের অতিরিক্ত পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, গত ১৫ এপ্রিলের পর থেকে সিলেট অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে, আজ ২০ এপ্রিল পর্যন্ত খুব বেশি বৃষ্টি হয়নি। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় বরং কৃষকরা স্বস্তিতে ধান কাটতে পারছেন।
বন্যার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এখনো বিপদ সীমার ১৮ ফুট নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তারপরও আমরা সতর্ক রয়েছি। ক্ষেতে যে ধান ৮০ ভাগ পেকেছে তা কেটে নিতে কৃষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে ধানের উৎপাদনে প্রভাব পড়বে না।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার পর্যন্ত সিলেট বিভাগের চার জেলার হাওরে ৯৫ হাজার ৭৫১ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। হাওরে আবাদ হয়েছে দুই লাখ ৭৬ হাজার ৮০৩ হেক্টর। হাওরের বাইরে দুই লাখ ২০ হাজার ৪১৬ হেক্টরের মধ্যে কাটা হয়েছে ১২ হাজার ৬৫ হেক্টর জমির ধান।
এ বছর সিলেট অঞ্চলে মোট চার লাখ ৯৭ হাজার ২১৯ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।
জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সিলেট অঞ্চলের মধ্যে হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলায় আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এই জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই লাখ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর। লক্ষ্য পূরণ করে চাষীরা আবাদ করেছেন দুই লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আবাদ হয়েছে হবিগঞ্জ জেলায়। এই জেলায় আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ২৩ হাজার ৭৩৬ হেক্টর জমি। আবাদ হয়েছে এক লাখ ২৩ হাজার ৮৪৭ হেক্টর। এছাড়া সিলেট জেরায় ৮৭ হাজার ৫০০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৮৭ হাজার ৭৩০ হেক্টর। মৌলভীবাজার জেলায় ৬২ হাজার একশ হেক্টরের বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৬২ হাজার ২৩৫ হেক্টর।
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হওয়া এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন। এরই মধ্যে সিলেট জেলার হাওরে ৩২ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। ৩৭ হাজার ২৯২ হেক্টরের মধ্যে কাটা হয়েছে ১২ হাজার ৭১ হেক্টর। সুনামগঞ্জ জেলার হাওরে এক লাখ ৬৫ হাজার ২৪৩ হেক্টরের মধ্যে ৫৮ হাজার ৭১০ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ। হবিগঞ্জ জেলার হাওরে কাটা হয়েছে ১৬ হাজার ৯০৩ হেক্টর জমির ধান। যা আবাদের ৩৬ শতাংশ এবং মৌলভীবাজার জেলায় ২৭ হাজার ৩১৫ হেক্টর আবাদ হয়েছে। এই জেলায় শনিবার পর্যন্ত কাটা হয়েছে ৮ হাজার ৬৬ হেক্টর জমির ধান।
হাওরের বাইরে এরই মধ্যে পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। যদিও এখন পর্যন্ত ৫ দশমিক ৭১ হেক্টর ধান কাটা হয়েছে। সিলেট অফিস বলছে, হাওরের বাইরে ২ লাখ ২০ হাজার ৪১৬ হেক্টর জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে, ১২ হাজার ৬৫ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ভারি বৃষ্টি ও বন্যা হলে হাওরের ধান সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই, হাওরে ধান কাটা আগে শেষ হলে বোরো উৎপাদন খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল আজাদ বলেন, ভারি বৃষ্টি হলে সুনামগঞ্জে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন হাওরের কৃষকরা। তাই হাওরের ধান দ্রুত কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিনের আবহাওয়া ভালো থাকায় কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলায় প্রায় সাতশ মেশিনের সাহায্যে ধান কাটা অব্যাহত রয়েছে।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D