সরকার প্রধান হতে চেয়েছিলেন বিচারপতি এস কে সিনহা!

প্রকাশিত: ১২:২৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০

সরকার প্রধান হতে চেয়েছিলেন বিচারপতি এস কে সিনহা!

Manual4 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি || নিউইয়র্ক (যুক্তরাষ্ট্র), ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ : দশম জাতীয় সংসদকে অবৈধ ঘোষণার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতে সাংবিধানিক ক্যু করতে চেয়েছিলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। এর মাধ্যমে নিজে সরকার প্রধান হতে চেয়েছিলেন সাবেক এই প্রধান বিচারপতি। মার্কিন যুক্তরাষ্টের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিচারপতি সিনহার বিষয়ে তদন্ত করে এই তথ্য পেয়েছে।

বিচারপতি সিনহা ২০১৮ সালের ২৬ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের জন্য আবেদন করেন। ঐ আবেদনে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে তার জীবন হুমকির মুখে। সেখানে গেলে তাকে হত্যা করা হতে পারে অথবা নিয়ন্ত্রিত বিচারের মাধ্যমে তার মানবাধিকার হরণ করা হতে পারে’। তার এই আবেদনের সত্যতা যাচাই করতে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি তার ব্যাপারে তদন্ত শুরু করে। এ বছরের ২৮ জুলাই, হোম ল্যান্ড সিকিউরিটি তার সম্পর্কে ১৯ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে মার্কিন প্রশাসন তার আবেদন এখনও নিস্পত্তি করতে পারেনি।

Manual5 Ad Code

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি তার ব্যাপারে যে রিপোর্ট তৈরী করেছে, তাতে বলা হয়েছে, ‘২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। বিচারপতি সিনহা অনেক আগে থেকেই একজন দুর্নীতিবাজ বিচারক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০০৭ সালে ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্বাবধায়ক সরকার, বিচার বিভাগকে দুর্নীতি মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

Manual5 Ad Code

এ সময় বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে দুর্নীতিবাজ বিচারকদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। ঐ তালিকায় বিচারপতি সিনহার নাম ছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ড. কামাল হোসেনের অনুকম্পায়, সে যাত্রায় রক্ষা পান। তাই তার প্রধান বিচারপতি হওয়াটা ছিলো একটু অবাক করার মতো।’

Manual3 Ad Code

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সালে উচ্চ আদালতে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে দেয়া সংক্রান্ত একটি সংবিধান সংশোধনী (ষোলতম সংশোধনী) সংসদে পাশ হয়। কয়েকজন আইনজীবী এটাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোটে রীট পিটিশন করে। আইনি লড়াইয়ে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই, বিচারপতি সিনহার নেতৃত্বে আপীল বিভাগ, ঐ সংশোধনীকে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বিবেচনায় অবৈধ ঘোষণা করেন।’

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘এটি ছিলো টেষ্ট কেস। একই সময় ২০১৪’র ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে, একটি রিট আবেদন করা হয়েছিল। যা হাইকোর্ট বিভাগ খারিজ করে দেয়। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে এক লিভ টু আপীলের আবেদন সুপ্রীম কোর্টে আনা হয়েছিল। আর বিচারপতি সিনহার সঙ্গে এ নিয়ে লন্ডনে অন্তত দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছিল। ভারতে বৈঠক হয়েছিল আরো একটি। দু’জন খ্যাতিমান আইনজীবী, বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ দুটি পত্রিকার সম্পাদক এবং কয়েকজন সাবেক আমলা সিনহাকে প্ররোচিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, এই মামলায় সংসদ অবৈধ ঘোষিত হলে, তিনিই তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন।

রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে যে, ‘এই সময় বিচারপতি খায়রুল হক প্রদত্ত তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল সংক্রান্ত রায়টিকেও অবৈধ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কাজেই দশম সংসদ নির্বাচন বাতিল এবং তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে সিনহাকে সরকারের প্রধান করার একটি নীল নকশা মধ্য মনিতে পরিণত হয়েছিলেন সিনহা। আর এই কারণে তার সঙ্গে সরকারের বৈরীতা তৈরী হয়।’

জানা গেছে, এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই সিনহার রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে মার্কিন সরকার।

Manual1 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code