মুনিয়া ও মুনিয়ার পরিবারের কান্না কি পীর হাবিবদের কানে পৌছাবে না?

প্রকাশিত: ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ, মে ২, ২০২১

মুনিয়া ও মুনিয়ার পরিবারের কান্না কি পীর হাবিবদের কানে পৌছাবে না?

Manual8 Ad Code

।।|| রেজাউল ইসলাম ||।।

পীর হাবিবুর রহমান বসুন্ধরার মালিকানাধীন বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও নিয়মিত কলামিষ্ট। আমি এ পত্রিকা ও তার কলামের একজন পাঠক। ফলে তাকে নিয়ে সমালোচনা করার অধিকার আমার আছে বলে মনে করি। আমার অভিযোগের তীরও তার দিকেই বেশী। তিনি আজকের কাগজে থাকতেই তিনাকে আমি একটু হলেও চিনি। তিনি সংবাদ ও কলাম লিখতে সিদ্ধ হস্ত। সংবাদ তৈরিতেও কম যান না। ভাষার মাধুর্য দিয়ে কলাম ফুটিয়ে তোলেন। মাদার তেরেসা, চার্চিল, আব্রাহাম লিংকন থেকে শুরুকরে পৃথিবীর অনেক গুণী -জ্ঞানী মানুষের উদাহরণ টানেন। হিমালয়,মরুভূমি,সাগরের গর্জন শুনতে পান। আওয়ামীলীগ, বিএনপিকে উপদেশ দিয়ে লেখেন। লেখার মাঝে বামনেতা ও বামপন্হীদের খোঁচা দিতেও সিদ্ধহস্ত । ক্যান্টমেন্টের জন্য জনতার হৃদয় কাদে এ দ্বৈববাণীও তিনি শুনতে পান। অথচ পিতৃ-মাতৃিহীন করুন পরিণতির শিকার অনাথ মুক্তিযোদ্ধা কন্যা কলেজ ছাত্রী মুনিয়ার ভিডিওর কান্না ও মামলার বাদী তার বড়বোনের কান্না সপ্তাহ পার হলেও পীর হাবিবদের কান পর্যন্ত পৌছায়নি। পৌছায়নি বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক ও আরেক কলামিষ্ট নঈম নিজামের কান পর্যন্ত। সায়েম সোবহান তানভীরের সাথে মুনিয়ার ছবিই প্রমান করে তাদের দু’জনের মধ্যে কি সম্পর্ক ছিল। এরপরও ভাইরাল হওয়া এদের দু’জনের ভিডিওর কথাপোকথন ও অসহায় মুনিয়ার কান্না সায়েম সোবহানের লেবাস গোপন রাখেনি। মুনিয়া ও মুনিয়ার বড়বোনের কান্না দেশবাসীর হৃদয়ে বেদনার কম্পন তুললেও পীর হাবিবের হৃদয় এখনো স্পর্শ করতে পারেনি। অথচ ঘটনার নায়ক ও মামলার আসামী যদি সায়েম সোবহান না হয়ে অন্য কেউ হতো বাংলাদেশ প্রতিদিনে নিউজ,ফলোআপ নিউজে ভরে যেত। পীর হাবিবের কলমও গর্জিয়ে উঠতো। এমন অনেক দেখেছি। পীর হাবিব এখন পৃথিবীতে আছেন নাকি অন্য কোন গ্রহে গেছেন ভেবে পচ্ছি না। পৃথিবীতে থাকলে তার কলম তো থেমে থাকার কথা না।
পীর হাবিকে দেখেছি ৯৬ এর আওয়ামীলীগ আমলে বিএনপির পক্ষে নিউজ করতে। আবার ২০০১ এর বিএনপির শেষ আমলে আওয়ামীলীগ তথা ১৪ দলের পক্ষে নিউজ করতে। তারপর ইয়াজউদ্দিনের আমলে যেকজন সাংবাদিক কলম ধরে অশুভ শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে তৎপর ছিলেন তারমধ্যেও পীর হাবিব ছিলেন। এরপর ক্ষমতা নিলেন সেনাবাহিনী প্রধান মইন ইউ ব্যাক ফখরুদ্দিন আহম্মেদ। তারা যাতে ক্ষমতা না ছাড়ে এরজন্য অনেক দেন দরবার করে কলাম লিখতে থাকলেন। দুই নেত্রীকে মাইনাস ও সুদখোর ড. ইউনুসের নেতৃতে দল গড়ার চক্রান্তের পক্ষেও কলাম লিখতে বাদ দিলেন না। এরপর যখন মইন-ফখরুদ্দিন নির্বাচন দিতে চাইলেন তখন পীর হাবিব আমাদের সময় পত্রিকায় ” জনতার হৃদয় থেকে ক্যান্টমেন্ট কতদুর” শিরোনামে কলাম লিখে মইন ইউ আহম্মেদকে ক্ষমতা নিয়ে সেনাশাসন দিতে প্রলুদ্ধ করতে স্বচেষ্ট হলেন। এ লেখায় তিনি দু’দলের শাসনের প্রতি জনগণের ঘৃণা ফুটিয়ে দেখিয়ে সরাসরি সেনাশাসনের পক্ষে অবস্হান নিলেন।
আবার তিনি কথায় কথায় লিখেন তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগ করতেন। আবার “আমার স্বপ্নের আওয়ামীলীগ” “আমার স্বপ্নের বিএনপি ” শিরোনামে কলাম লিখে দু’দলকেই তার স্বপ্নের পথে চলতে উপদেশ দিয়েছেন। তার আপন ছোটভাই জাতীয় পার্টির এমপি পীর মিসবাউর রহমনের উন্নয়নের গুণকীর্তন করেও বাংলাদেশ প্রতিদিনে কয়েকবার লিখেছেন।
তিনি লিখতে বড়ই সিদ্ধহস্ত। তিনি লিখেন আমি সবসময় সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে শিখেছি। অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে আমি জানিনা। কিন্ত আজ কি করছেন। মাননীয় পীর হাবিব মুনিয়াকে নিয়ে বিস্তারিত লিখলে, তার লাখ টাকার ফ্ল্যাট ভাড়া কে দিয়েছিল? তার করুণ অকাল মৃত্যুর কাহিনী লিখে জনগণকে, জানালে, লম্পট সায়েমের মুখোশ উন্মোচন করলে, বিচারের দাবী তুললে হয়তো বাংলাদেশ প্রতিদিনে আপনার চাকুরী যাবে, গাড়ি যাবে কিন্ত আপনার সম্পর্কে মানুষের কাছে ভুল মেসেজ যাবে না। বাংলাদেশ প্রতিদিনে আপনার চাকুরী গেলেও অন্য পত্রিকায় চাকুরীর অভাব হবে না। হয়তো বাংলাদেশ প্রতিদিনের মতো মোটা বেতন পাবেন না, কিন্ত পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার মতো বেতনের অভাব হবে না। চুপ থাকলে মানুষ সময়ের সাথে সুবিধাবাদী ভোল পাল্টানো সাংবাদিক নামে অভিহিত করবে। শুধু একা আপনার নয়, এ ঘটনায় সাংবাদিকতার আদর্শ নিয়েই মানুষ ভুল মেসেজ পাচ্ছে। দেশ রুপান্তর ও সময়ের আলো পত্রিকায় এ ঘটনায় চরিত্র হননের প্রচেষ্টার নিউজ নিয়ে ভুল মেসেজ জোরালো হচ্ছে। এ ভুল মেসেজ দয়া করে ভেঙে দিন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code